ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলায় প্রধানমন্ত্রীর দেয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের একটি ঘর ৪৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
সম্প্রতি উপজেলার লস্কারদিয়া ইউনিয়নের বাঘুটিয়া গ্রামের আশ্রয়ণ প্রকল্পে এই ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, ওই আশ্রয়ণ প্রকল্পে একটি ঘর বরাদ্দ পান বাঘুটিয়া গ্রামের রিপন মাতুব্বর ও তার স্ত্রী বিথি বেগম। কিন্তু কিছুদিন আগে তারা ঘরটি বিক্রি করে দেন। স্ট্যাম্পের মাধ্যমে ঘরটি কিনে সেখানে বসবাস করছেন রাশেদ মোল্যা ও তার স্ত্রী রাশিদা বেগম।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরের জন্য জমি বরাদ্দ ছাড়াই ঘর নির্মাণে সরকার ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়। উপজেলার বাঘুটিয়া গ্রামে আশ্রয়ণ প্রকল্পে মোট ১০টি ঘর নির্মাণের পর ২০২১ সালের ২৩ জানুয়ারি সেগুলো হস্তান্তর করা হয়।
১০ সুবিধাভোগীর বেশির ভাগই বাঘুটিয়া গ্রামের বাসিন্দা। এর মধ্যে একজন অর্থের বিনিময়ে ঘর বিক্রি করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ।
বিষয়টি স্বীকার করে ঘর কিনে নেয়া রাশেদ মোল্যার স্ত্রী রাশিদা বেগম বলেন, ‘আগে বরাদ্দ পাওয়া রিপন মাতুব্বরের কাছ থেকে ৪৫ হাজার টাকায় স্ট্যাম্পের মাধ্যমে ঘরটি আমরা কিনেছি।’
বরাদ্দ দলিল ও বিক্রি করে দেয়ার স্ট্যাম্প
তবে এ বিষয়ে রিপন মাতুব্বরের মোবাইলে কল ও মেসেজ করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
বিষয়টি জানা নেই বলে জানিয়েছেন উপজেলার লস্কারদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. হাবিবুর রহমান বাবুল।
ঘর বিক্রির ঘটনা নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমাম রাজী টুলু বলেন, ‘যাদের নামে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে শুধু তারাই ঘরে বসবাস করতে পারবেন। আশ্রয়ণ প্রকল্পের এসব ঘর কোনোভাবেই বিক্রি বা হস্তান্তরের সুযোগ নেই। সরকারি আশ্রয়ণের ঘর বিক্রি করা আইনত অপরাধ। বিষয়টি জানার পর সরেজমিন গিয়ে ওই ঘরে কাউকে পাইনি। আমি নিজে ঘরটি তালাবদ্ধ করে দিয়েছি।’
এ বিষয়ে অনুসন্ধানের বরাতে তিনি জানান, রিপন মাতুব্বর তার স্ত্রীকে বিদেশে পাঠানোর জন্য রাশেদ মোল্লার কাছ থেকে ৪৫ হাজার টাকা ধার নেন। পরে ধারের এই টাকা পরিশোধ করতে তিনি ঘরটি বিক্রি করেন।
ইউএনও বলেন, ‘আশ্রয়ণ প্রকল্পের অন্য ঘরগুলোর সুবিধাভোগীদের খোঁজও নিচ্ছি আমরা। যারা ঘরে বসবাস না করে বিক্রি করছেন, তাদের তালিকা থেকে বাদ দিয়ে নতুন সুবিধাভোগীদের এসব ঘর দেয়া হবে।’