বৃষ্টিহীন বর্ষায় জনজীবন যখন অতিষ্ঠ, সে সময় জুলাইয়ের শুরুতে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস ছিল বৃষ্টি হবে টানা এক সপ্তাহ। কিন্তু বৃষ্টির দেখা মেলেনি। ৪২ বছরের মধ্যে সবচেয়ে শুকনো বর্ষাকাল দেশকে পুড়িয়েছে চৈত্রের মতো। আমন চাষেও সেচ দিতে হচ্ছে বোরোর মতো।
বর্ষার মতো শরৎও এবার পোড়াচ্ছে মানুষকে। তীব্র গরমে অসুস্থ হচ্ছে শিশু ও বৃদ্ধরা। এর মধ্যে আগস্টের শেষে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, বৃষ্টির প্রবণতা বাড়বে এবং ধীরে ধীরে কমে আসবে গরম।
এবার বর্ষায় কাঁদেনি আকাশ, ঝিরঝিরে বৃষ্টি ঝরেছে শীতের মতোই। তবে তাতে কমেনি গরম। অধিদপ্তর বলছে, স্বাভাবিকের তুলনায় কেবল ৪২ শতাংশ বৃষ্টি হয়েছে বর্ষায়।
এই পরিস্থিতিতে আবহাওয়া অধিদপ্তর মধ্যমেয়াদি যে পূর্বাভাস দিচ্ছে, তাতে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে প্রায় স্বাভাবিক বৃষ্টির কথাই বলা হচ্ছে, যদিও সদ্য বিদায়ী আগস্টে স্বাভাবিকের চেয়ে সামান্য কিছু কম বৃষ্টির কথা বলা হয়েছিল, শেষ পর্যন্ত গোটা মাসটি গেছে প্রায় শুকনো।
গত দুই মাসে বারবার আশার বাণী শুনিয়ে আসা আবহাওয়া অধিদপ্তর এবারও আবহাওয়া শীতল হওয়ার পূর্বাভাস দিচ্ছে।
আগামী তিন দিন রাজধানীসহ দেশের সাত বিভাগে হালকা ভারি বৃষ্টি হবে বলে নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ শাহীনুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘দেশের ৭ বিভাগে প্রায় ৭৫ শতাংশ জায়গায় হালকা ভারি বৃষ্টি হবে। বৃষ্টিপাতের এ প্রবণতা তিন দিন অব্যাহত থাকবে। ধারাবাহিকভাবে বৃষ্টি হলে আবহাওয়া কিছুটা স্বস্তিদায়ক হবে।’
আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেয়া ২৪ ঘণ্টা পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং খুলনা বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বৃষ্টি হতে পারে।
তবে খুলনা বিভাগের যশোর ও কুষ্টিয়া জেলাসমূহের ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে তা আরও বাড়বে বলেও মনে করছে অধিদপ্তর।
সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে, পাশাপাশি রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলা থেকে, যা ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যশোর, সাতক্ষীরা অঞ্চলে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।
রাজধানী ঢাকায় আজ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সর্বনিম্ন ২৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি।
তবে তাপমাত্রা ও তাপের অনুভূতি সমান নয়। আবহাওয়াবিষয়ক ওয়েবসাইট অ্যাকুওয়েদারের হিসাবে এদিন ঢাকায় তাপমাত্রা সর্বোচ্চ অনুভূত হচ্ছিল ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অর্থাৎ ৩৩ ডিগ্রি পোড়াচ্ছে ৪০ ডিগ্রির সমান।
সাধারণত কোনো এলাকার আর্দ্রতা, মেঘাচ্ছন্ন অবস্থা এবং বৃষ্টি ও বাতাসের সম্ভাবনার ওপর নির্ভর করে অনুভূত তাপমাত্রা নির্ধারণ করা হয়।