দু-এক মাসের মধ্যে চট্টগ্রামে হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চ স্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, ‘সার্কিট বেঞ্চ বহুদিনের দাবি, এটি আমাদের সংবিধানে আছে। মাননীয় আইনমন্ত্রীর সঙ্গে আমি বহুবার আলোচনা করেছি। কয়েক দিন আগেও কথা হয়েছে। তিনি আমাকে নিশ্চিত করেছেন দু-এক মাসের মধ্যে চট্টগ্রামে সার্কিট বেঞ্চ হবে।’
চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠানে বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
আইনজীবীদের উদ্দেশে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনে এবং সমাজকে সঠিক খাতে প্রবাহিত করার ক্ষেত্রে আইনজীবীরা বিরাট ভূমিকা রাখতে পারেন। আইনজীবীরা হচ্ছেন সমাজের স্বাভাবিক নেতা। সে কারণে তাদের পক্ষে রাজনীতি করা সহজ। আইনজীবী পেশাটা রাজনীতির জন্য সহায়ক।
‘আমাদের দেশের প্রথম যে পার্লামেন্ট, ৭০-এর নির্বাচনের যে পার্লামেন্ট, দেশ স্বাধীন হওয়ার আগে পূর্ব পাকিস্তানের যে আইনসভা ছিল, পাকিস্তানের যে আইনসভা ছিল, ভারতবর্ষের বাংলার যে আইনসভা ছিল সেদিকে যদি তাকাই, সেখানে মেজরিটি ছিলেন আইনজীবী। পরে অর্থের দাপটের কাছে অনেকে টিকতে পারেননি। আমাদের মন্ত্রিসভায়ও পেশাগত দিক দিয়ে এখনো সবচেয়ে বেশি হচ্ছেন আইনজীবী। কারণ আইনজীবীরা হচ্ছেন সমাজের স্বাভাবিক নেতা। সে কারণে তাদের পক্ষে রাজনীতি করা সহজ।’
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও আইনজীবী হতে চেয়েছিলেন জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগের ছাত্র ছিলেন। তার বাবাও চাইতেন তিনি আইনজীবী হোন। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী যারা পড়েছেন তারা জানেন।
‘কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তাকে বহিষ্কার করার কারণে তিনি আইনজীবী হতে পারেন নাই। পৃথিবীর বড় বড় রাজনীতিবিদের দিকে যদি তাকাই তাহলে দেখা যায় ভারতবর্ষের মহাত্মা গান্ধী, জওহরলাল নেহরু আইনজীবী ছিলেন। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে যারা নেতৃত্ব দিয়েছেন তারাও আইনজীবী ছিলেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘যেভাবে চট্টগ্রাম বার অ্যাসোসিয়েশনের অনেক সদস্য ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে ভূমিকা রেখেছেন, সেই বিবেচনায় চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতি বাংলাদেশের জেলা বারগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ বার। বারের সদস্যসংখ্যা বেশি হলেই সেটি সবচেয়ে সমৃদ্ধ বার হয় না। যদি চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির অতীত সদস্যদের কথা চিন্তা করেন, তারা এই দেশের স্বাধিকার আদায়ের সংগ্রাম, দেশ বিভাগের আগে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম, সেই বিবেচনা যদি করেন, যারা নেতৃত্ব দিয়েছেন অনেকেই চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির সদস্য ছিলেন।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘অনেক বিজ্ঞ আইনজীবী এই সমিতির সদস্য ছিলেন। এখনও অনেক সদস্য আছেন, যারা অনেক বড় বড় আইনজীবীর চেয়েও অনেক জ্ঞান রাখেন। সেই বিবেচনায় চট্টগ্রাম বার অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের যত জেলা বার আছে, সবচেয়ে বেশি সমৃদ্ধ বলে আমি মনে করি।’