বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘পালঙ্কের রূপকার’কে শেখ হাসিনার বাড়ি

  •    
  • ১ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ২১:৩৮

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘নৌকার আদলে গড়া পালঙ্ক উপহার পেয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবতে থাকেন কীভাবে বঙ্গবন্ধুপ্রেমী হারুনুর রশীদ মাতুব্বরের জন্য কিছু করা যায়। ফিরতি উপহার হিসেবে তাকে বাড়ি করে দেয়ার নির্দেশ দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। তার নির্দেশনা ও অর্থায়নে আমরা বাড়িটির নির্মাণকাজ তত্ত্বাবধান করি।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ উপহার হিসেবে একটি বাড়ি পেলেন ‘নৌকার পালঙ্কের রূপকার’খ্যাত হারুনুর রশীদ মাতুব্বর। তবে এটি সরকারি হিসেবে নয়, আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে তাকে উপহার দিয়েছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।

মাদারীপুরের পৈতৃক ভিটায় বৃহস্পতিবার এই বাড়ি উদ্বোধন করা হয়েছে।

হারুন মাতুব্বরের বাড়ি মাদারীপুর সদর উপজেলার সিরাজচরে। তবে তিনি থাকেন টাঙ্গাইলের নাগরপুরে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে তার বাড়ি নির্মাণের তদারকি করেন। বৃহস্পতিবার বাড়িটি উদ্বোধনের সময়ও তিনিসহ আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মী ও প্রশাসনের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারা দেশেই গৃহহীনদের বাড়ি করে দিচ্ছেন। হারুনুর রশীদ মাতুব্বরের উপহার পেয়ে তিনি ভাবতে থাকেন কীভাবে বঙ্গবন্ধুপ্রেমী মানুষটির জন্য কিছু করা যায়। তার সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের পর ফিরতি উপহার হিসেবে তাকে বাড়ি করে দেয়ার নির্দেশ দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। তার নির্দেশনা এবং অর্থায়নে আমরা এ বাড়ির নির্মাণকাজ তত্ত্বাবধান করি।’

আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, কাঠমিস্ত্রি হারুনুর রশীদ মাতুব্বর শেখ হাসিনার দৃষ্টিতে আসেন নৌকার আদলে একটি পালঙ্ক তৈরি করে তা সজীব ওয়াজেদকে উপহার দেয়ার জন্য আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে নিয়ে আসার পর।

দৃষ্টিনন্দন পালঙ্কটি তিনি তৈরি করেন আট বছর ধরে। জয়কে উপহার দেয়ার জন্যই ভালোবাসা আর আন্তরিকতা দিয়ে তিনি পালঙ্কটি বানান। এটি দেখলে তার মেধা, শ্রম ও সৃষ্টিশীলতার পরিচয় মেলে। অনেকেই বলছেন, এই পালঙ্ক ভবিষ্যতে হতে পারে একটি ঐতিহাসিক নিদর্শন।

সূত্রমতে, আজ থেকে প্রায় ৯ মাস আগে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে ট্রাকে করে পালঙ্কটি নিয়ে হাজির হন হারুন। তিনি সেটি উপহার হিসেবে সজীব ওয়াজেদকে দিতে চান বলে আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়াকে জানান। বিপ্লব বড়ুয়া তাকে জানান, প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি ছাড়া কোনো উপহার গ্রহণ করা সম্ভব নয়।

তাতেও দমে না গিয়ে হারুন ট্রাকসহ কার্যালয়ের সামনে দুদিন ধরে অবস্থান করতে থাকেন। তখন আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বিপ্লব বড়ুয়াকে বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকে জানাতে বলেন।

বিপ্লব বড়ুয়া বিষয়টি আওয়ামী লীগ সভাপতিকে জানালে তিনিও প্রথমে এটি গ্রহণ করতে অস্বীকার করেন। তিনি বিপ্লব বড়ুয়াকে বলেন, এভাবে উপহার গ্রহণ করলে অনেকেই উপহার নিয়ে আসতে থাকবে, যা কাম্য নয়। সেটা হারুনকে জানানো হলেও তিনি উপহার দেয়ার বিষয়ে অনড় থাকেন।

প্রধানমন্ত্রী তখন বিপ্লব বড়ুয়াকে জানতে বলেন যে হারুনুর রশীদ মাতুব্বর কিছু চান কি না। জবাবে ওই কাঠমিস্ত্রি জানান, তিনি কিচ্ছু চান না। টানা অবস্থান করায় প্রতিদিন ট্রাক ভাড়া বাড়ছে। তাই উপহারটা যেন দ্রুত গ্রহণ করা হয়।

অবশেষে প্রধানমন্ত্রী এই উপহারের পালঙ্ক গ্রহণে সম্মত হন। উপহার গ্রহণের পর তিনি বাহাউদ্দিন নাছিম ও বিপ্লব বড়ুয়াকে পালঙ্ক নির্মাতার জন্য কী করা যায় সে বিষয়ে খোঁজখবর নিতে বলেন।

ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া নিউজবাংলাকে জানান, তারা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন যে ওই কাঠমিস্ত্রির অবস্থা দিন এনে দিনে খাওয়ার মতো। বাড়ি মাদারীপুরে হলেও তিনি টাঙ্গাইলের নাগরপুরে ব্যবসা করেন। তার অর্থনৈতিক অবস্থা এতই খারাপ যে, নিজের বাড়ি নির্মাণের সামর্থ্য নেই।

এসব তথ্য প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হলে তিনি হারুনুর রশীদ মাতুব্বরকে একটি বাড়ি নির্মাণ করে দেয়ার নির্দেশ দেন।

আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, পালঙ্কটি গ্রহণের পর সেটি টুঙ্গিপাড়ায় পাঠিয়ে দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পৈতৃক বাড়িতে তার দাদা শেখ লুৎফর রহমান যে কক্ষে থাকতেন সেই কক্ষে রাখা হয় এটি। পরে সজীব ওয়াজেদ জয় দেশে এলে বঙ্গবন্ধুকন্যা ছেলেকে নিয়ে টুঙ্গিপাড়ায় গিয়ে পালঙ্কটি দেখান। নৌকার নকশায় বানানো এ পালঙ্ক দেখে অভিভূত হন জয়।

আওয়ামী লীগ সভাপতির পক্ষ থেকে বাড়ি পেয়ে হারুনুর রশীদ মাতুব্বর অভিভূত। নিউজবাংলার কাছে অভিব্যক্তি প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমি গরিব মানুষ। বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসি, শেখ হাসিনাকে ভালোবাসি। কিন্তু রুটি-রুজিতে ব্যস্ত থাকায় সেভাবে দল করতে পারি না, দলকে কিছু দিতেও পারি না। তাই বঙ্গবন্ধুর নাতির জন্য মনের মাধুরী, মিস্ত্রি জীবনের পুরো সৃষ্টিশীলতা আর পরিশ্রম দিয়ে অনেক দিন ধরে পালঙ্কটি বানাই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে ফিরতি উপহার হিসেবে বাড়ি দিয়েছেন। এটা পেয়ে তিনি অভিভূত। আমি শেখ হাসিনা ও জয়কে প্রাণভরে দোয়া করি।’

এ বিভাগের আরো খবর