বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘মোগো ওপর দিয়া বাস চালাইয়া যাউক’

  •    
  • ৩১ আগস্ট, ২০২২ ২৩:৩২

বরগুনা-নিশানবাড়িয়া সড়কে বেলা ২টার আগে কোনো ইজিবাইক চলতে পারবে না- বাস মালিক সমিতির এমন নির্দেশনা ও নানামুখী নির্যাতনের প্রতিবাদে বুধবার বরগুনা সদরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন পাঁচ শতাধিক ইজিবাইক চালক।

‘গাড়ি লইয়া রাস্তায় নামলেই হেরা মোগো গাড়ি থামাইয়া দ্যায়, মোড়ো গাড়ি ফুডা হইর‌্যা যাত্রী নামাইয়া মাইর-ধইর করে। সরকারের রাস্তায় গাড়ি চালাই, হেরা আইন বানাইয়া মোগো গাড়ি চালাইতে দেয় না। গাড়ি না চালাইতে দেলে গুরাগার লই্যয়া কী খামু মোরা। আইছিলাম এমপি সাবের দারে। হে মোগো কোনো সমাধান দেয় নায়। এহন আর কিছু হরার নাই। গাড়ি রাস্তার মাঝে থুইয়া হুইয়া থাকমু, হেরা মোগো ওপর দিয়া বাস চালাইয়া যাউক।’

কথাগুলো ইজিবাইকচালক কামাল ভাণ্ডারীর। বাড়ি বরগুনা সদর উপজেলার এম নলটোনা ইউনিয়নের গর্জনবুনিয়া এলাকায়।

ইজিবাইক চলাচলে বাধা দেয়া, চালকদের মারধর ও গাড়ি ভাঙচুরের প্রতিবাদে ইজিবাইকচালকরা বুধবার দুপুরে বাস মালিক সমিতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে।

বরগুনা-নিশানবাড়িয়া সড়কের ৫ শতাধিক ইজিবাইকচালক এদিন সার্কিট হাউস মাঠে জড়ো হন। পরে সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে শহর প্রদক্ষিণ শেষে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন তারা। পরে সেখানে বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু ও বরগুনার জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমানের কাছে তারা বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন।

বরগুনা-নিশানবাড়িয়া সড়কের ইজিবাইকচালক-মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু সালেহ শান্ত বলেন, ‘এটা আঞ্চলিক মহাসড়ক না। ২৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়কে বাস মালিক সমিতি নিজেদের মতো আইন বানিয়েছে। বেলা ২টার আগ পর্যন্ত তারা এই সড়কে ইজিবাইক চলতে দেয় না।

‘আমরা এর আগে আন্দোলন করার পর এই অত্যাচার এতদিন বন্ধ ছিল। হঠাৎ করেই বাস মালিক সমিতি ঘোষণা দেয় যে ১ সেপ্টেম্বর থেকে এই সড়কে সকালে ইজিবাইক চলতে দেয়া হবে না। আগের নিয়মে বেলা ২টার পর চলবে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা সকাল থেকে এই রুটে অবাধে ইজিবাইক চালাতে চাই। বিষয়টি আমরা বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা প্রশাসককে জানিয়েছি। কিন্তু এমপি মহোদয় ও ডিসি স্যার আমাদের দাবির সঙ্গে একমত হননি। তারা বাস মালিক সমিতির কথামতো বেলা ২টার পর ইজিবাইক চালাতে বলেছেন। আমরা হতাশ হয়ে ফিরে এসেছি। এখন আমাদের মতো করে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব। দাবি না মানা পর্যন্ত আমরা রাস্তা ছাড়ব না।’

মাইঠা চৌমুহুনী এলাকার ইজিবাইকচালক আল আমিন বলেন, ‘প্রতি সপ্তাহে আমাকে ছয় হাজার টাকা কিস্তি দিতে হয়। আমার ওয়াইফ অন্তঃসত্ত্বা। এ অবস্থায় গাড়ি চালাতে না পারলে আমার খুব বিপদ হবে। আমি রাস্তায় অবাধে গাড়ি চালাইতে চাই। এটা আমার অধিকার।’

গর্জনবুনিয়া এলাকার চালক মো. জুলহাস মিয়া বলেন, ‘বাস মালিক সমিতির লোকজন আমাদের ওপর অন্যায় করে। রাস্তায় আমাদের চলতে বাধা দেয়, যাত্রী নামিয়ে দিয়ে গাড়ির চাবি নিয়ে যায়, গাড়ি ভাঙচুর করে। আমরা স্বাধীন বাংলাদেশের নাগরিক। কেন আমাদের এমন অত্যাচারের শিকার হতে হবে। আমরা এর সমাধান চাই।’

জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান এ বিষয়ে বলেন, ‘ইজিবাইকচালকদের দাবিদাওয়া নিয়ে আমরা বাস মালিক সমিতির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করব। উভয় পক্ষের কথা শোনার পর কার্যকর সমাধানের পথ বের করার চেষ্টা করব।’

সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু বলেন, ‘ইজিবাইকচালকরা খুবই নিডি। সংসার চালানোর জন্য রাস্তায় গাড়ি নিয়ে নেমে রুজি-রোজগার করে। আমি বাস মালিক সমিতির সঙ্গে কথা বলে বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধানের চেষ্টা করব।'

এ বিভাগের আরো খবর