লালমনিরহাটের বুড়িমারি শুল্ক বন্দর থেকে একযোগে ১৬ কর্মকর্তা কর্মচারীকে বদলি করা হয়েছে। নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ এই আদেশটি গত ২৫ আগস্ট গেজেট আকারে প্রকাশ করে।
বদলির খবরটি জানাজানি হলে বন্দর এলাকায় আমদানি রপ্তানীকারক ব্যবসায়ী ও অন্যান্য কর্মকর্তার মধ্যে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। অনিয়ম ও দূর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগেই এই বদলির আদেশ হয়েছে বলে দাবি করেছেন অনেকেই।
স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ আগারগাঁও কার্যালয়ের পরিচালক (প্রশাসন) ডি এম আতিকুর রহমান স্বাক্ষরিত আদেশে উল্লেখিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আগামী ৩১ আগস্টের মধ্যে নতুন কর্মস্থলে যোগ দিতে বলা হয়েছে। একই দিনে অন্য একটি আদেশে অন্যান্য বন্দর থেকে ১১ কর্মকর্তা কর্মচারীকে বুড়িমারি স্থলবন্দরে যোগদানের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে বন্দরের সিঅ্যান্ডএফ ব্যাবসায়ী ও বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নিশাদ নেওয়াজ বলেন, ‘কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীরা দুদকে অনিয়মের অভিযোগ দেয়ায় এই গণ বদলির আদেশ হতে পারে।’
তিনি জানান, ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাক থেকে চাঁদা আদায়, ওয়্যার হাউসে রাতে আদায় করা অর্থ জমা না দিয়ে আত্মসাৎ, ট্রাক ওজন স্টেশনে অতিরিক্ত অর্থ আদায়, অর্থের বিনিময়ে ভুয়া পরিমাপ, ভুয়া চালান জমা দিয়ে রাজস্ব ফাঁকি, ভুয়া বিল ভাউচার জমা, ছুটি নিয়ে দীর্ঘদিন কর্মস্থলে না থাকা, বন্দরের গোপনীয়তা প্রকাশ করে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা গ্রহণসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে বদলি হওয়া কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, বুড়িমারি স্থল বন্দরের সহকারী পরিচালক (ট্রাফিক) রুহুল আমিন, ট্রাফিক পরিদর্শক জাহিদুর রহমান, বন্দর হিসাবরক্ষক আদনান খালিদ বসুনিয়া, ক্যাশিয়ার ভ্রমর কুমার সরকারকে কুড়িগ্রাম জেলার সোনাহাট স্থলবন্দরে বদলির আদেশ হয়েছে।
এ ছাড়া ট্রাফিক পরিদর্শক সালাউদ্দিন, ওয়্যার হাউস সুপারিনটেনডেন্ট মানিকুর রহমানকে ফেনী জেলার বিলোনিয়া স্থলবন্দর, ট্রাফিক পরিদর্শক শাহিন মাহমুদ, আমিনুল হককে ময়মনসিংহের গোবরাকুড়া-কড়াইতলী স্থলবন্দর, সুপারিনটেনডেন্ট আবুল বাশার, মিনহাজ, হারুন-উর-রশিদ, কম্পিউটার অপারেটর হাসমত উল্লাহকে যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর, ওয়্যার হাউস সুপারিনটেনডেন্ট মাসুদ রানাকে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর, একই পদের ফিদা হাসানকে পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধায়, মাসুম বিল্লাহকে খাগড়াছড়ি জেলার রামগড় স্থলবন্দর, কম্পিউটার অপারেটর সেলিম রেজাকে শেরপুরের নকুগাঁও স্থলবন্দরে বদলির আদেশ দেয়া হয়।
গণ বদলির বিষয়টি স্বীকার করে সহকারী পরিচালক (ট্রাফিক) রুহুল আমিন বলেন, ‘অনিয়মের অভিযোগে নয়, এটি স্বাভাবিক বদলি পক্রিয়া। তবে একসঙ্গে এত বদলি হওয়ায় বিরূপ মন্তব্য করছে মানুষ।’