বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ব্যাচেলেটের বক্তব্য নিয়ে ভুল তথ্য প্রচার হয়েছে: জাতিসংঘ

  •    
  • ৩০ আগস্ট, ২০২২ ২১:৫৮

জাতিসংঘ এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেটের জেনেভায় দেয়া বক্তব্য কোনোভাবেই বৈশ্বিক রিপোর্ট নয়। যেহেতু হাইকমিশনার বাংলাদেশের মানবাধিকার বিষয়টি ইতোমধ্যে বিস্তারিত তুলে ধরেছেন, সেহেতু ২৫ আগস্ট জেনেভায় তার মেয়াদ শেষের বক্তব্যে জোর দিয়েছেন বৈশ্বিক ইস্যুগুলোর ওপর, যা বাংলাদেশসহ সব দেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।’

বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে মিশেল ব্যাচেলেট উদ্বেগ প্রকাশ না করার বিষয়ে সরকারের দুই মন্ত্রী যে বক্তব্য দিয়েছেন, সে সম্পর্কে অবস্থান প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ।

জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকমিশন মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এ ক্ষেত্রে ‘ভুল তথ্য’ ছড়ানোর কথা তুলে ধরে ব্যাচেলেট কোন প্রেক্ষাপটে কী বক্তব্য দিয়েছেন তার উল্লেখ করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ভুল তথ্যের (মিস-ইনফরমেশন) বিষয়ে আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি।’

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হাইকমিশনার সরকার, নাগরিক সমাজ ও অন্যদের সঙ্গে সংলাপে এবং তার ঢাকা সফরের বিবৃতিতে মানবাধিকারের বিস্তৃত ক্ষেত্রে তার উদ্বেগের জায়গাগুলো নিয়ে সবিস্তারে আলোচনা করেছেন।

সফরের শেষ দিন ঢাকায় সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি এবং সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে এ বিষয়ে আলোচনার বিস্তারিত তুলে ধরেন তিনি।

হাইকমিশনারের সফরে বিভিন্ন বৈঠকে মানবাধিকার পরিস্থিতির পাশাপাশি গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিষয়টি উঠে আসে বলে জানিয়েছিলেন মন্ত্রীরা।

সংবাদ সম্মেলনে মিশেল ব্যাচেলেটের বক্তব্যের বড় অংশজুড়েও ছিল এসব বিষয়। সাংবাদিকদের প্রশ্নের কেন্দ্রও ছিল গুম এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে জাতিসংঘের অবস্থান ঘিরে।

স্বাধীন ও বিশেষায়িত নতুন একটি সংস্থার মাধ্যমে গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ তদন্তের আহ্বান জানান চিলির সাবেক এই প্রেসিডেন্ট।

মিশেল ব্যাচেলেট ওই সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘জাতিসংঘের নির্যাতনবিরোধী কমিটিসহ সংস্থার বিভিন্ন মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থা গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও নির্যাতনের অভিযোগের বিষয়ে কয়েক বছর ধরে উদ্বেগ জানিয়ে আসছে।

‘এসব অভিযোগের অনেকগুলোই বর্তায় র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) ওপর এবং এ ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে জবাবদিহির অভাবের অভিযোগ নিয়েও উদ্বেগ রয়েছে। সরকারের মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে এসব গুরুতর অভিযোগের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছি এবং এসব অভিযোগের নিরপেক্ষ, স্বাধীন ও স্বচ্ছ তদন্তের পাশাপাশি নিরাপত্তা বাহিনীর সংস্কারের ওপর জোর দিয়েছি।’

ঢাকা সফর শেষে ফিরে যাওয়ার এক সপ্তাহ পর ২৫ আগস্ট জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার হিসাবে জেনেভায় শেষ সংবাদ সম্মেলন করেন মিশেল ব্যাচেলেট।

তবে ওই সংবাদ সম্মেলনে বৈশ্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে মোটাদাগে আলোচনা করলেও বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আলাদা করে কিছু বলেননি তিনি।

ওই সংবাদ সম্মেলনের সূত্র ধরে করা প্রশ্নে নিজেদের অবস্থান জানান আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

শনিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ সফরকারী জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, জাতিসংঘের দৃষ্টিতে মানবাধিকার বা অন্যান্য বিষয়ে বাংলাদেশ সম্পর্কে কোনো উদ্বেগ প্রকাশিত হয়নি।’

বারবার এ নিয়ে বিএনপির অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা সব সময় বলে আসছি যে বিএনপি একটি অবস্থা সৃষ্টির জন্য বিভিন্নভাবে রটনা করে যাচ্ছে। যেগুলোর কোনো ভিত্তি নেই এবং তারা এর সত্যতা দেখাতে পারেনি।

‘ভিত্তি না থাকার কারণে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার আমাদের দেশের মানবাধিকার নিয়ে কোনো উদ্বেগ প্রকাশ করেননি।’

জেনেভায় গিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ না করার বিষয়ে এক প্রশ্নে রোববার আইনমন্ত্রী বলেন, মানবাধিকার সংগঠন ও অন্যান্য বিষয়ে যেসব সংগঠন আছে, যারা বলে যে বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে, তারাও জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকমিশনারের সঙ্গে দেখা করেছেন, কথা বলেছেন।

‘সবকিছু দেখে তিনি এমন মন্তব্য করেছেন। সে ক্ষেত্রে আমরা বুঝতে পারি যে মন্তব্যটি অত্যন্ত ডিপ রুটেড এবং ওয়েল আন্ডারস্টুড।’

জেনেভায় দেয়া বক্তব্য কোনোভাবেই ‘বৈশ্বিক রিপোর্ট’ নয় উল্লেখ করে মঙ্গলবারের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘যেহেতু হাইকমিশনার বাংলাদেশের মানবাধিকার বিষয়টি ইতোমধ্যে বিস্তারিত তুলে ধরেছেন, সেহেতু ২৫ আগস্ট জেনেভায় তার মেয়াদ শেষের বক্তব্যে জোর দিয়েছেন বৈশ্বিক ইস্যুগুলোর ওপর, যা বাংলাদেশসহ সব দেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।’

‘পাশাপাশি পাঁচ বছর পূর্তির ওই দিনে রোহিঙ্গা সংকটের ওপরও তিনি আলোকপাত করেছেন। এটাকে বৈশ্বিক রিপোর্ট হিসেবে ধরার কথা ছিল না।’

ঢাকায় হাইকমিশনারের দেয়া একটি বক্তব্য মঙ্গলবারের বিবৃতিতে উল্লেখ করে বলা হয়, ‘যেভাবে হাইকমিশনার ঢাকায় তার বিবৃতিতে বলেছেন, ‘চ্যালেঞ্জকে স্বীকার করাই হচ্ছে সেটাকে উত্তরণের প্রথম পদক্ষেপ’ এবং হাইকমিশনারের সুপারিশ অনুযায়ী সহযোগিতার পাশাপাশি বাংলাদেশের মানবাধিকারের উন্নয়ন ও সুরক্ষায় কাজ করতে জাতিসংঘ মানবাধিকার কার্যালয় প্রস্তুত রয়েছে।’

ব্যাচেলেটের আহ্বান মানতে বলছে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস

আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশে গুমের অভিযোগগুলো গভীরভাবে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস। মঙ্গলবার সকালে দূতাবাসের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে দেয়া পোস্টে এই আহ্বান জানানো হয়।

এতে বলা হয়, সম্প্রতি জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট বাংলাদেশে জোরপূর্বক গুমের অভিযোগগুলো নিয়ে যে গভীর তদন্তের আহ্বান জানিয়েছিলেন তা পুনর্ব্যক্ত করছে দূতাবাস।

ওই পোস্টের সঙ্গে মিশেল ব্যাচেলেটের বক্তব্যের লিংক যুক্ত করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস। বাংলাদেশ সফর শেষে ঢাকার একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলন করেন ব্যাচেলেট। এতে তিনি বলেছিলেন, গত কয়েক বছর ধরে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা গুম নিয়ে তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করে যাচ্ছিল। ঢাকায় সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ নিয়ে তার গভীর উদ্বেগের কথা তিনি জানিয়েছেন।

ব্যাচেলেট সরকারকে একটি স্বাধীন এবং বিশেষ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে বলেছেন, যাতে করে এ ধরনের ঘটনার শিকার ব্যক্তি, পরিবার এবং সিভিল সোসাইটির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও গুমের ঘটনাগুলো তদন্ত করা যায়। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনে এ রকম একটি সংস্থা গড়ে তুলতে তার দফতর বাংলাদেশকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে প্রস্তুত।

এ বিভাগের আরো খবর