ময়মনসিংহে ট্রাকচাপায় পেট ফেটে জন্ম নেয়া শিশুটির জন্য তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে চেকের মাধ্যমে আপাতত পাঁচ লাখ টাকা দিয়েছে সড়ক পরিবহন আইনের ৫৪ ধারা অনুসারে গঠিত ট্রাস্টি বোর্ড।
মঙ্গলবার এ তথ্য হাইকোর্টকে জানিয়েছে ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যানের আইনজীবী মো. রাফিউল ইসলাম।
ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যানের আইনজীবী বলেন, ‘ওই শিশুর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৫ লাখ টাকার চেক ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসকের কাছে ২৮ আগস্ট হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে আজ হাইকোর্টে হলফনামা করেছি।’
গত ১৬ জুলাই ময়মনসিংহে ট্রাকচাপায় মায়ের পেট ফেটে জন্ম হয় শিশুটির। দুর্ঘটনায় মা-বাবা ও বোন মারা যায়। জন্ম নেয়া শিশুটির যথাযথ ক্ষতিপূরণ এবং কল্যাণ নিশ্চিতে গত ১৮ জুলাই আইনজীবী কানিজ ফাতেমা তুনাজ্জিনা হাইকোর্টে রিট করেন।
এরপর গত ১৯ জুলাই হাইকোর্ট এক আদেশে ১৫ দিনের মধ্যে ৫ লাখ টাকা দিতে নির্দেশ দেয়।
একই সঙ্গে শিশুটির চিকিৎসা চালিয়ে যেতে বলা হয়।
পাশাপাশি ওই শিশুর দেখভালের জন্য একটি কমিটি গঠন করতে বলা হয়। কমিটিকে তিন মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন জমা দিতেও বলা হয়।
একইসাথে শিশুর জন্য যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, তা জানতে রুল জারি করা হয়।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, সমাজ কল্যাণ সচিব, সড়ক পরিবহন সচিব, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি, ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং ট্রাক মালিক মঞ্জুরুল ইসলামকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
এরপর গত ৭ আগস্ট আপাতত ৫ লাখ টাকা দিতে এক মাস সময় চেয়ে আবেদন করে বোর্ড। আদালতও তাদেরকে সময় দেয়।
গত ১৬ জুলাই বিকেলে ময়মনসিংহের ত্রিশালে দিনমজুর জাহাঙ্গীর আলম তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে নিয়ে গিয়েছিলেন চিকিৎসকের কাছে। এ সময় তাদের সঙ্গে ছিল ছয় বছরের শিশুকন্যা সানজিদা। একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আল্টাসনোগ্রাম করে তারা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ধরে বাড়ি ফিরছিলেন। কিন্তু মহাসড়ক পার হওয়ার সময় হঠাৎ বেপরোয়া একটি মালবাহী ট্রাক চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তিনজনের।
তবে দুর্ঘটনার সময় মায়ের পেটের ওপর দিয়ে মালবাহী ট্রাকের চাকা চলে গেলেও মায়ের গর্ভ ফেটে ভূমিষ্ট হয় ফুটফুটে এক নবজাতক। জন্মের সময় নবজাতকের ডান হাতের দুটি হাড় ভেঙে যায়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত জনতা তাৎক্ষণিক ওই নবজাতককে ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। এরপর তাকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এবং কমিউনিটি বেজড মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দেয়া হয় উন্নত চিকিৎসা। পরে রাজধানীর আজিমপুরে অবস্থিত ছোটমণি নিবাসে শিশুটিকে স্থানান্তর করা হয়।