দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিএনপির কর্মসূচিতে হামলার মধ্য দিয়ে এবার সহিংসতা হলো দক্ষিণের জেলা বাগেরহাটে। জ্বালানি তেল ও নিত্যপণ্যের দরবৃদ্ধির প্রতিবাদে জেলার চিতলমারীতে দলটির কর্মসূচিতে হামলায় অন্তত ১৫ জনের আহত হওয়ার দাবি করছেন নেতারা।
তবে আওয়ামী লীগ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। আর পুলিশের বক্তব্য হলো যুবলীগের মিছিলে একটি মোটরসাইকেল ঢুকে সেটি ফেলে চলে যায় একজন। এর বাইরে কোনো কিছু ঘটেনি।
তবে মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়ার ছবি পাওয়া গেছে। এটি ছাত্রদল নেতা শফিকুল ইসলাম বাবুর ছিল। লাঠিসোঁটা হাতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের মহড়া দেয়ার বিষয়টিও ধরা পড়েছে ক্যামেরায়।
স্থানীয়রা বলছেন, মঙ্গলবার সকাল থেকে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের রামদা, হকিস্টিক, লাঠিসোঁটা নিয়ে বিভিন্ন সড়কে মহড়া দিতে দেখা যায়। এর মধ্যে বিএনপির নেতা-কর্মীরা মিছিল বের করতে চাইলে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়।
উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব ঠান্ডা বলেন, ‘চিতলমারী কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে আমাদের সমাবেশ হওয়ার কথা ছিল। এই সমাবেশ বানচাল করতে দুই-তিন দিন ধরে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা আমাদের নেতা-কর্মীদের হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিল। গত রাতেও বিভিন্ন গ্রামে মহড়া দিয়েছে। সকাল থেকে তারা উপজেলা সদরে মহড়া দিচ্ছিল।’
তিনি বলেন, ‘সকালে সাবেক ছাত্রদল নেতা শফিকুল ইসলাম বাবুকে মারধর ও তার মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দিয়েছে যুবলীগের নেতা-কর্মীরা। কৃষকদল নেতা শেখ মোহাম্মাদ আলী, যুবদল নেতা কামাল বিশ্বাস, বিএনপি নেতা মনিরুল ইসলাম মনিসহ আমাদের ১৫ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। আমরা এই ন্যক্কারজনক হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’
তবে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বাবুল হোসেন খান এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘বিএনপির কোনো নেতা-কর্মীর ওপরে আওয়ামী লীগের লোকজন কোনো হামলা করেনি। বিএনপির সব অভিযোগ মিথ্যা।’
চিতলমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এইচ এম কামরুজ্জামান খান বলেন, ‘শুনেছি যুবলীগের মিছিলের মধ্যে প্রবেশ করে মোটরসাইকেল ফেলে চলে গেছে এক ব্যক্তি। এ ছাড়া তেমন কোনো হামলার ঘটনা শুনিনি আমরা।’
গত ২২ আগস্ট থেকে ধারাবাহিক কর্মসূচি নিয়ে বিএনপি মাঠে আছে। এসব কর্মসূচির লক্ষ্য ভিন্ন হলেও দলটির চূড়ান্ত লক্ষ্য নির্দলীয় সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় নির্বাচনের দাবি আদায়।
এসব কর্মসূচিতে দেশের বিভিন্ন এলাকায়ই হামলার ঘটনা ঘটছে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ স্পষ্ট।
এসব কর্মসূচি আগামী ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সোমবার কর্মসূচি ঘোষণা করে তিনি বলেন, ‘কর্মসূচিতে জনগণের সম্পৃক্ততা দেখে আওয়ামী লীগ ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে। তাদের চরিত্র যে সন্ত্রাসী চরিত্র সেটা আরও একবার উদ্ভাসিত হয়েছে।‘