ফৌজদারি মামলায় সরকারি কর্মচারীদের গ্রেপ্তারে সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেয়ার বিধান বাতিল করে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সরকার লিভ টু আপিল করবে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।
সোমবার রাতে একাদশ জাতীয় সংসদের ১৯তম অধিবেশনে ২০১৮ সালের সরকারি চাকরি আইন সংশোধনে আনা একটি বিল উত্থাপনের সময় আপত্তির জবাব দিতে গিয়ে প্রতিমন্ত্রী এ তথ্য জানান।
প্রতিমন্ত্রী সরকারি চাকরি (সংশোধন) বিল-২০২২ সংসদে তোলার বিষয়ে স্পিকারের অনুমতি চাইলে বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ আপত্তি করেন। তবে তার আপত্তি কণ্ঠভোটে খারিজ হয়ে যায়।
হারুন বলেন, এই আইনটি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। সম্প্রতি উচ্চ আদালতের একটি রায় হয়েছে। তাই এই আইনটি অকার্যকর।
জবাবে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আইনে কারও ব্যক্তিগত অপরাধের দায়মুক্তি নেই। সরকারি কর্মচারীরা যাতে অহেতুক হয়রানির শিকার না হন সে জন্য ভারতসহ বিভিন্ন দেশের আইনে এই বিধান আছে। সিআরপিসির ১৯৭ ধারাতেও এটি আছে। এ বিষয়ে আমরা লিভ টু আপিল করব।’
হাইকোর্ট ২৫ আগস্ট এক রায়ে ফৌজদারি মামলায় সরকারি কর্মচারীদের গ্রেপ্তারে সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেয়ার বিধান ‘বেআইনি’ ঘোষণা করে।
২০১৮ সালের ১৪ নভেম্বর সরকারি চাকরি আইন-২০১৮-এর গেজেট জারি হয়। এরপর ২০১৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর সরকারের এক গেজেটে ১ অক্টোবর থেকে এ আইন কার্যকর হয়।
আইনের ৪১ (১) ধারায় বলা হয়, ‘কোনো সরকারি কর্মচারীর দায়িত্ব পালনের সহিত সম্পর্কিত অভিযোগে দায়েরকৃত ফৌজদারি মামলায় আদালত কর্তৃক অভিযোগপত্র গৃহীত হইবার পূর্বে তাহাকে গ্রেপ্তার করিতে হইলে সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি গ্রহণ করিতে হইবে।’
আইনের এই ধারা চ্যালেঞ্জ করে ২০১৯ সালের ১৪ অক্টোবর জনস্বার্থে হাইকোর্টে আবেদন করে পরিবেশবাদী ও মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি)।
সরকারি চাকরি আইন-২০১৮-এর সরকারি কর্মচারী গ্রেপ্তারে পূর্বানুমতি সংক্রান্ত ধারা ৪১ (১) ও ৩ চ্যালেঞ্জ করে কুড়িগ্রামের সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগ্যান আরেকটি রিট আবেদন করেছিলেন। তার প্রাথমিক শুনানির পর ২৬ সেপ্টেম্বর রুল দেয় হাইকোর্ট। এটি হাইকোর্টের আরেক বেঞ্চে বিচারাধীন।