দেশের সব জনগোষ্ঠীকে পেনশন সুবিধার আওতায় আনতে ‘সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা বিল-২০২২’ জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা হয়েছে।
সোমবার রাতে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে বিলটি উত্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
এরপর বিলটি অধিকতর বিবেচনার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। সংসদীয় কমিটি যাচাই-বাছাই করে বিলটি চূড়ান্ত করে বিবেচনার জন্য সংসদে পাঠাবে। তারপর বিলটি পাসের উদ্যোগ নেয়া হবে।
বিলটি সম্পর্কে বলা হয়েছে, জনগণের বেকারত্ব, ব্যাধি বা পঙ্গুত্ব বা বার্ধক্য কিংবা অনুরূপ অন্যান্য পরিস্থিতিজনিত অভাবগ্রস্ততা ও দেশের মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধির কারণে ক্রমবর্ধমান বয়স্ক জনগোষ্ঠীকে একটি টেকসই ও সুসংগঠিত সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের আওতাভুক্তিকল্পে ‘সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা বিল-২০২২’।
সংসদে উত্থাপিত বিলে বলা হয়- সাধারণ নিয়ম হলো ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী ব্যক্তিরা সর্বজনীন পেনশনের সুযোগ পাবেন। কিন্তু বিশেষ ব্যবস্থায় এর বেশি বয়সীরাও এ পেনশনের সুযোগ নিতে পারবেন। পেনশনের আওতায় আসার জন্য কমপক্ষে ১০ বছর পর্যন্ত নির্ধারিত পরিমাণ চাঁদা দিতে হবে। আর একজন ব্যক্তি পেনশন সুবিধা ভোগ করবেন ৬০ বছর বয়স হওয়ার পর থেকে। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি এ সুবিধা ভোগ করবেন।
বিলে উল্লেখ করা হয়, জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ভিত্তি ধরে ১৮ বছর বয়স থেকে ৫০ বছর পর্যন্ত সব বাংলাদেশি নাগরিক এ সর্বজনীন পেনশনে অংশ নিতে পারবেন। বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি কর্মীরাও এতে অংশ নিতে পারবেন। তারা যদি নিবন্ধন করেন ও প্রিমিয়াম দেন, তাহলে তারাও অংশ নিতে পারবেন। বিশেষ বিবেচনায় আলাদা বিধি অনুযায়ী ৫০ বছরের বেশি বয়সীদেরও এ পেনশন সুবিধার আওতায় আনা যাবে।
সর্বজনীন পেনশন বিলের সুবিধা পেতে সবাইকে কমপক্ষে ১০ বছর নিয়মিত কিস্তি দিতে হবে। ১৮ বছর থেকে শুরু হবে ৬০ বছর বয়সে গিয়ে কিস্তি দেয়া বন্ধ হয়ে যাবে। তারপর ৬০ বছর বয়স থেকে তিনি যতদিন জীবিত থাকবেন ততদিন পেনশন সুবিধা পাবেন।
পেনশনে থাকাকালে কেউ মারা গেলে তার ৭৫ বছর বয়স পর্যন্ত হিসাব করে নমিনি এই সুবিধা পাবেন। কোনো পেনশনভোগী যদি ৬৫ বছর বয়সে মারা যান, তাহলে তার নমিনি আরও ১০ বছর পেনশন সুবিধা পাবেন। তবে ব্যক্তি জীবিত থাকলে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এ সুবিধা পাবেন।
আবার কেউ যদি কিস্তি দেওয়াকালীন মারা যান, কিন্তু তার বয়স ৬০ বছর হয়নি, তাহলে ওই ব্যক্তির নমিনি জমা করা টাকা ও এককালীন সুবিধা পাবেন। পেনশন পাবেন না। যেমন কোনো ব্যক্তির বয়স ২০ বছর হলো এবং এ পেনশনের জন্য চাঁদা দিচ্ছিলেন, তিনি যদি ৩০ বছর বয়সে মারা যান, তাহলে তার নমিনি ওই ব্যক্তির জমা করা টাকা এবং এককালীন সুবিধা পাবেন।