দ্য ফারমার্স ব্যাংকের (বর্তমান পদ্মা ব্যাংক) সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতীসহ (বাবুল চিশতী) ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। দায়িত্বে থাকার সময় ক্ষমতার অপব্যবহার করে ১০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে।
রোববার দুদকের সহকারী পরিচালক মো. এনামুল হক সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ মামলাটি করেন।
বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন সংস্থাটির উপ-পরিচালক মো. নাজমুচ্ছায়াদাত।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- ফারমার্স ব্যাংকের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ড. আতহার উদ্দিন, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক চৌধুরী মোস্তাক আহম্মদ, সাবেক এসভিপি শওকত ওসমান চৌধুরী, খাতুনগঞ্জ শাখার সাবেক এসইও অ্যান্ড ম্যানেজার অপারেশন মো. আনোয়ার হোসেন, এস বি অটো ব্রিকস ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটিডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ছগীর চৌধুরী, ব্যাংকের তখনকার পরিচালক মো. আবু আলম ও তার স্ত্রী পারভীন আজাদ, ন্যাশনাল সার্ভে বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মাজেদুল ইসলাম, ফারমার্স ব্যাংকের সাবেক সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট (বর্তমানে ব্যবস্থাপনা পরিচালক) ফয়সাল আহসান চৌধুরী ও সাবেক অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম শামীম।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ফারমার্স ব্যাংকের ঋণগ্রহীতা এস বি অটো ব্রিকসের এমডি ছগীর চৌধুরীর দুটি ঋণের বিপরীতে চট্টগ্রামের পটিয়া খাশিয়াইস মৌজায় অবস্থিত ১৯৯ দশমিক ৪০ শতক জমি রেজিস্টার্ড মর্টগেজ দলিল নং- ৪০৫৬ মূলে বন্ধকীকরণ করা হয়। এ সময় ওই সম্পত্তির ফোর্সড সেল ভেল্যু ২৩.৫৩ কোটি টাকা বলে দাবি করে ন্যাশনাল সার্ভে বাংলাদেশ। পরে ২০১৫ সালে এস বি অটো ব্রিকসের এমডি ছগীর চৌধুরীকে ২৪ কোটি টাকা ঋণ প্রদান করা হয়।
তবে সে সময় বন্ধকী সম্পত্তির ফোর্সড সেল ভেল্যু কম থাকার বিষয়টি ব্যাংক জানতো বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে একই ব্যাংকের ওই বন্ধকী সমম্পত্তির মার্কেট ভ্যালু ১ কোটি ৯৬ লাখ ৭০ হাজার টাকা এবং ফোর্সড সেল ভেল্যু ১ কোটি ৩৫ লাখ ৭৬ হাজার টাকা নির্ধারণের মাধ্যমে বিষয়টি স্পষ্ট হয়।
বন্ধকী সম্পত্তির ফোর্সড সেল ভেল্যু কম জানা সত্ত্বেও গ্রহীতাকে আগে দেয়া ১৪ কোটি টাকা ঋণের অতিরিক্ত আরও ১০ কোটি টাকা ৩ মাস মেয়াদি টাইম ঋণ দেয়া হয়।
ঋণের এসব টাকা গ্রাহক ছগীর চৌধুরী ব্যাংকটির তখনকার পরিচালক আবু আলম ও তার স্ত্রী পারভীন আক্তারের সহায়তায় তাদের হিসাবে স্থানান্তর, রূপান্তরের মাধ্যমে ও নগদে উত্তোলন করে প্রতারণামূলকভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে আত্মসাৎ করেছেন। আর এই কাজের বিভিন্ন ধাপে অভিযুক্তরা পরস্পর যোগসাজশ করেছেন।
এ বিষয়ে দুদকের উপ-পরিচালক মো. নাজমুচ্ছায়াদাত বলেন, ‘আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/১০৯ ধারা এবং ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারাসহ মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ২০১২ এর ৪ (২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করায় মামলাটি করা হয়েছে।’