সরকারি কর্মকর্তাদের জ্ঞানচর্চা ও পাঠাভ্যাস বাড়ানোর জন্য বই কেনার তালিকায় অতিরিক্ত সচিব মো. নবীরুল ইসলামের ২৯টি বই কীভাবে ঢুকেছে সেটি তদন্ত করে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।
তিনি বলেন, ‘একজন কর্মকর্তা যিনি এই দায়িত্বের মধ্যে ছিলেন তার ২৯টি বই থাকবে কেন। এটি অশোভনীয়। আমি নিজে বলছি যে এটা ঠিক হয়নি। এটা নিয়ে আমরা বসব। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি সুফিয়া কামাল হলে রোববার রাতে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘কিন্তু আমরা যতটুকু জেনেছি তার বইগুলো কেনা হয়নি, তবে নামগুলো আছে। কেনা হয়েছে সেরা বইগুলো, যেগুলো জগৎ বিখ্যাত ও আমাদের দেশের ইতিহাসের জন্য বিখ্যাত। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ওপর লেখা এবং সুপাঠ্য উপন্যাস কেনা হয়েছে।’
ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘আমি আজ আমার নির্বাচনী এলাকায় গিয়েছিলাম। সেখানে আমি মানুষকে জিজ্ঞাসা করেছি ওনার বই কেউ কিনেছেন কিনা। কেউ তার বই কিনেনি। আমার সচিব বললেন যে, ঢাকাতেও কিন্তু ওনার বই কেনা হয়নি। যে বইগুলো পাঠক সৃষ্টি করবে সেই বইগুলো কিন্তু কেনা হয়েছে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘১৪৭০ বইয়ের তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে। কিন্তু কোথাও বাধ্য করা হয়নি যে এই বইগুলো কিনতে হবে। এটির আলোকে বা বিবেচনায় রেখে কিনতে বলা হয়েছে। যে কর্মকর্তা এটি করেছেন তিনি ঠিক করেননি।’
বইয়ের তালিকায় অনেক সরকারি কর্মকর্তার বই আছে জানালে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্কিমচন্দ্রও সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন। তার লেখা বইও আছে। এরকম আরও অনেক কর্মকর্তা আছে যাদের বইগুলো খুবই ভালো। যেমন মোবাইল কোর্ট আইনের ওপর বই আছে, ভূমি আইনের ওপর বই আছে, আয়করের ওপর অনেক ভালো বই আছে। সেটা যদি কোনো সরকারি কর্মকর্তার হয় এখানে অসুবিধার কোনো কারণ নেই।’
১ হাজার ৪৭০টি বই এর তালিকায় পল্লী কবি জসিমউদদীন-এর বই নেই এই প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘পল্লী কবি জসিমউদদীন-এর বই থাকার কথা অবশ্যই। আমি তালিকাটি এখনও দেখিনি। দেখে তারপর বলা যাবে আছে কি না। এখন যেহেতু বিষয়টি সামনে এসেছে এবং কিছু ত্রুটি লক্ষ্য করা যাচ্ছে আমরা বিষয়টিকে দেখছি এবং এটা আমরা সংশোধন করে দিব যাতে সেরা বইগুলো কেনা যায়৷’
কবি সুফিয়া কামাল হল শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি পূজা কর্মকারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক লাবিছা রিমার সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া।
বিশেষ আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সদস্য রেমন্ড আরেং, সংরক্ষিত নারী আসন-২৮ এর সংসদ সদস্য সৈয়দা রুবিনা মীরা, কবি সুফিয়া কামাল হলের প্রাধ্যক্ষ ড. তৌহিদা রশীদ প্রমুখ।
এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস, সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি তিলোত্তমা শিকদার প্রমুখ।