স্বাস্থ্য পরীক্ষার অংশ হিসেবে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। সেখানে আজ তার শারীরিক বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, খালেদা জিয়া রোববার রাত ৯টা ৪০ মিনিটে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় এভার কেয়ার হাসপাতালে যান। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামীকাল (সোমবার) তিনি বাসায় ফিরবেন।’
এর আগে রাত পৌনে ৮টার দিকে তিনি গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজা’ থেকে হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা হন। এ সময় তার সঙ্গে ভাই শামীম এস্কান্দর ও তার স্ত্রী কানিজ ফাতেমা ছিলেন।
খালেদা জিয়ার হাসপাতালে যাওয়ার খবরে দলের বিভিন্ন পর্যায়ে নেতাকর্মীরা ছুটে আসেন তার বাসার সামনে। হাসপাতালের সামনেও নেতাকর্মী-সমর্থকদের অনেকে জড়ো হন।
খালেদা জিয়া এর আগে সবশেষ ২২ আগস্ট এভারকেয়ার হাসপাতালে যান। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার অংশ হিসেবে ওইদিন সেখানে তার হার্টের কয়েকটি পরীক্ষা যেমন ইকো, ইসিজি, আল্ট্রাসোনোগ্রাম ও এক্স-রে করা হয়। সেগুলোর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন পাওয়ার পর মেডিক্যাল বোর্ড আরও কয়েকটি পরীক্ষার জন্য জরুরিভাবে হাসপাতালে ভর্তির সুপারিশ করেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি রোববার পুনরায় হাসপাতালে যান।
এভার কেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একটি মেডিক্যাল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চলছে।
এভার কেয়ার হাসপাতালে ২২ আগস্ট খালেদা জিয়ার বেশকিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। সেসব পরীক্ষার প্রতিবেদন ভালো না থাকায় ষষ্ঠবারের মতো তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানান তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
রোববার রাতে বেগম খালেদা জিয়া হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
জাহিদ হোসেন বলেন, ‘কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের অধীনে ম্যাডামকে ভর্তি করা হয়েছে। তার আগের রিপোর্টের ফল ভালো নয় বলেই আরও কিছু পরীক্ষার জন্য তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘কোনো অবস্থাতেই বলা যাবে না যে ম্যাডাম সুস্থ আছেন। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মাল্টি ডিসিপ্লিন অ্যাডভান্স সেন্টারে তার সুচিকিৎসা প্রয়োজন। মেডিক্যাল বোর্ডের পরামর্শ, তাকে জরুরিভিত্তিতে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করাতে হবে।’
‘খালেদা জিয়া এখনও এক ধরনের গৃহবন্দি। চিকিৎসার অভাবে অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু হয়ে গেলে তার দায় সরকারকে নিতে হবে।’
কবে নাগাদ খালেদা জিয়া বাসায় ফিরতে পারেন- এমন প্রশ্নের জবাব জাহিদ বলেন, ‘মেডিক্যালের চিকিৎসার বিষয়ে অগ্রিম বলার সুযোগ নেই। রোগের উপসর্গ সার্বিক বিষয়ের ওপর নির্ভর করে।’
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা গুরুতর কিনা- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. জাহিদ বলেন, ‘আমি বুঝতে পারি না এমন প্রশ্নের মাধ্যমে আপনারা কী বুঝাতে চাইছেন। একটি বিষয় তো স্পষ্ট। ২০২১ সাল থেকে আজ অবধি ষষ্ঠবারের মতো তিনি এই হাসপাতালে এসেছেন। এই হচ্ছে ওনার অবস্থা। আমি এ ব্যাপারে আর কোনো মন্তব্য করতে চাই না।’