বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সরকারের সঙ্গে আঁতাতে বিএনপির একাংশ, সন্দেহ গয়েশ্বরের

  •    
  • ২৮ আগস্ট, ২০২২ ১৭:৪৩

‘সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা এবং বিভিন্ন কথাবার্তা, যেটা পর্দার অন্তরালে… এখন আমরা যারা বসে আছি তাদের মধ্যে কে কোন সংস্থার সঙ্গে কথা বলেছি, সেটা চিন্তার বিষয় না। এবং আমাদের রাতের অন্ধকারে কে কার সঙ্গে যোগাযোগ করছে, কাকে কী আসনের নিশ্চয়তা দিতেছে, কাকে টাকা দিতেছে, এগুলো আমাদের জানা নাই। এই কথা যাচাই করা বা প্রমাণ করার সুযোগ নাই, তবে আকাশে-বাতাসে এই কথাগুলো ভাসতেছে। কিন্তু জনগণের সন্দেহ যেটা রয়েছে, এই জায়গাটা পরিষ্কার করতে হবে রাজপথের আন্দোলনে।’

বিএনপির কেউ কেউ সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করছে বলে ‘আকাশে-বাতাসে’ নানা কথা ভেসে বেড়াচ্ছে বলে জানতে পেরেছেন স্থায়ী সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি শঙ্কা প্রকাশ করেছেন, বিএনপি গতবারের মতোই ভোটে অংশ নিতে পারে, যদিও তাদের ঘোষণা হচ্ছে ভোট বর্জন।

বিএনপির নীতিনির্ধারণী সর্বোচ্চ পর্ষদ স্থায়ী কমিটির এই নেতা বলেন, ‘কিছুদিন আগ পর্যন্ত মানুষ বিশ্বাস করত বিএনপি নির্বাচনে যাবে না। একশ্রেণি বিশ্বাস করছে নির্বাচনে কীভাবে যায় আবার আরেক শ্রেণি মনে করছে নির্বাচনে যাবে।’

এ নিয়ে গত এক মাসের মধ্যে গয়েশ্বর দুবার এ ধরনের সংশয় প্রকাশ করেছেন।

আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিএনপির ঘোষণা হচ্ছে, নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার না হলে তারা ভোটে আসবে না। ২০১৪ সালে এই দাবিতে ভোট বর্জন করার পর আওয়ামী লীগ সরকার তার মেয়াদ পূরণ করে, যদিও এর আগে একতরফা নির্বাচন করে জাতীয় পার্টি ও বিএনপি সরকার মেয়াদ শেষের আগেই পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়।

২০১৮ সালেও একই দাবিতে বিএনপি আবার ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েও পরে নির্বাচনে অংশ নেয়। সেবার জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নামে নতুন জোট করে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংলাপেও তারা অংশ নেয়। সেই সংলাপে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যাপারে আশ্বস্ত হলেও ভোট শেষে কারচুপির অভিযোগ আনে জোট।

রোববার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন: ইভিএম মেশিন ও আজকের গণতন্ত্র’ শীর্ষক এক আলোচনায় বক্তব্য রাখছিলেন গয়েশ্বর। জাতীয়তাবাদী প্রজন্ম ’৭১ নামের একটি সংগঠন এই সভার আয়োজন করে।

গয়েশ্বর বলেন, ‘সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা এবং বিভিন্ন কথাবার্তা, যেটা পর্দার অন্তরালে… এখন আমরা যারা বসে আছি তাদের মধ্যে কে কোন সংস্থার সঙ্গে কথা বলেছি, সেটা চিন্তার বিষয় না। এবং আমাদের রাতের অন্ধকারে কে কার সঙ্গে যোগাযোগ করছে, কাকে কী আসনের নিশ্চয়তা দিতেছে, কাকে টাকা দিতেছে, এগুলো আমাদের জানা নাই।

‘এই কথা যাচাই করা বা প্রমাণ করার সুযোগ নাই, তবে আকাশে-বাতাশে এই কথাগুলো ভাসতেছে। কিন্তু জনগণের সন্দেহ যেটা রয়েছে, এই জায়গাটা পরিষ্কার করতে হবে রাজপথের আন্দোলনে।’

বিএনপি নেতা বলেন, ‘আমাদের কেউ কেউ বিশ্বাস করবে আগামী নির্বাচনে আমাদের আশ্বস্ত এবং বিশ্বাস তৈরি করার জন্য সরকার আর কোনো ঝুটঝামেলা করবে না। যারা এই কথা বিশ্বাস করে, তারা আওয়ামী লীগকে চিনে না। আওয়ামী লীগ যা করে তার উল্টোটা করে।

‘আওয়ামী লীগের কথা শোনা, তাদের কথার উত্তর দেয়া আর তাদের স্বীকার করে নেয়া সমান। তাই আমরা কী করব, আমাদের কী করা উচিত সেটা নিয়ে ভাবতে হবে।’

গয়েশ্বর বলেন, ‘২০১৮ সালের নির্বাচনে আমরা বলেছিলাম এই সরকারের অধীনে নির্বাচন নয়, খালেদা জিয়া মুক্তি না হলে নির্বাচন নয়। আমরা শেষ পর্যন্ত সেই সিদ্ধান্তে থাকি নাই। খালেদা জিয়া এখনও মুক্তি হন নাই। …বিএনপি এখন বলছে নির্বাচনে যাবে না। পরে যদি আবার যায়, এই সংশয়টা কাটিয়ে ওঠার দায়িত্ব আমাদের। আমাদের কর্ম, কর্মপদ্ধতি, আন্দোলনের কর্মসূচিতে আমাদের আন্তরিকতা- এর মধ্যেই নির্ভর করে জনগণের মাঝে আস্থাটা ফিরিয়ে আনা।’

তিনি বলেন, ‘বিরোধী দলের কর্মসূচিতে বাধা না দেয়ার নির্দেশকে আমাদের দলের অনেক নেতা বিশ্বাস করেছেন। তাহলে জ্বালানি তেল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়ার প্রতিবাদে সেখানে তাদের জীবন কেন দিল?

‘তার পরও আমাদের কোনো কোনো নেতা বলেন, সরকার বিদেশিদের চাপে আমাদের কর্মসূচিতে ঝামেলা করছে না। দুইটা প্রাণ কেড়ে নিল, তার পরও বলছে ঝামেলা করছে না।’

আলোচনা সভার আলোচ্যসূচি নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন গয়েশ্বর। বলেন, ‘আজকে দেশে গণতন্ত্র নাই, তাই গণতন্ত্রের আলোচনা হয় না। আর আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, এই সরকারের অধীনে এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচনে যাব না। এইটা বারবার আমাদের নেতৃবৃন্দের মুখ থেকে উচ্চারিত হচ্ছে। সকল নেতাকর্মী এতে বিশ্বাস করে এই সরকারের অধীনে নির্বাচন নয়। সুতরাং যেখানে এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়, সেখানে ইভিএম নিয়ে কোনো কথা নয়।’

তিনি বলেন, ‘আজকেই পেক্ষাপটে সরকারের পতন এবং এর কৌশল নির্ধারণ তার প্রস্তুতি এবং কী কী কর্মসূচির মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটানো যায় সেই আলোচনা হওয়াই উচিত। এবং এটি আমাদের জন্য বেশি জরুরি।’

‘আ.লীগ-ভারতের গোপন ডায়েরি ফাঁস’

সরকারকে টিকিয়ে রাখতে ভারতকে অনুরোধ করার বিষয়ে বক্তব্য রাখায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেনকে ধন্যবাদও জানান গয়েশ্বর। তার ভাষায়, ‘আওয়ামী লীগ আর ভারতের গোপন ডায়েরি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফাঁস করে দিয়েছেন।’

তিনি বলেন, ‘পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই আমি। তাকে বেকুব বললে আওয়ামী লীগ বলতে পারে। কিন্তু আমি তাকে ধন্যবাদ জানাব। কারণ, ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে সিক্রেট ডায়েরিটা তিনি প্রকাশ করে দিয়েছেন। ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে একটা লেনদেনের সম্পর্ক আছে, এখানে তিনি রাজসাক্ষী।’

বিএনপি এখন মার খায় না, দেয়ও

দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরকারি দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের মধ্যে ইতিবাচকতা দেখছেন গয়েশ্বর। বলেন, ‘একটা পজিটিভ দিক হলো, বিএনপি এখন শুধু মার খায় না, তারা মার দেয়ও। এটা বিএনপির জন্য গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার যুদ্ধ।

‘জনগণের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেয়ার যুদ্ধে অনেক রক্ত যাবে, অনেক ক্ষয়ক্ষতি হবে। জনগণের জন্য বিএনপিকে এই যুদ্ধে নামতেই হবে।’

তিনি বলেন, ‘পুলিশকে আক্রমণ করা ঠিক নয়। তারা কর্তব্য পালন করছে। যদি তারা বাড়াবাড়ি করে, আর জনগণ মনে করে ইউনিফর্মকে সম্মান করবে না, তাহলে কিছুই করার নেই।’

আয়োজক সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ঢালী আমিনুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে আলোচনায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খান, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, কার্যনির্বাহী সদস্য মীর শরাফত আলী সপু।

এ বিভাগের আরো খবর