৯ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় চট্টগ্রামের সাবেক সিভিল সার্জন ডা. সরফরাজ খান চৌধুরীকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
রোববার দুপুরে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা ও স্পেশাল জজ বেগম জেবুননেছার আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।
দুদকের এই মামলায় অন্য আসামিদের মধ্যে পাঁচজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন দুদকের আইনজীবী (পিপি) কাজী ছানোয়ার আহমেদ লাভলু।
মামলার এজাহারে সূত্রে তিনি জানান, ২০১৯ সালের নভেম্বরে দুর্নীতির মাধ্যমে ৯ কোটি ১৫ লাখ ৩০ হাজার ৪২৫ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সাতজনকে আসামি করে চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ মামলা করা হয়। ওই মামলায় সাবেক সিভিল সার্জন ডা. সরফরাজ খানসহ জেনারেল হাসপাতালের তিন চিকিৎসক ও তিন ঠিকাদারকে আসামি করা হয়েছে।
অন্য আসামিরা হলেন জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট (মেডিসিন) ডা. মো. আব্দুর রব, জুনিয়র কনসালট্যান্ট (অর্থোপেডিক সার্জারি) ডা. মো. মইন উদ্দিন মজুমদার, সিনিয়র কনসালট্যান্ট (সার্জারি) ডা. বিজন কুমার নাথ, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বেঙ্গল সায়েন্টিফিক অ্যান্ড সার্জিক্যাল কোম্পানির স্বত্বাধিকারী জাহের উদ্দিন সরকার, মেসার্স আহম্মদ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মুন্সী ফারুক হোসেন এবং এএসএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও আফতাব আহমেদ।
আসামিদের মধ্যে জাহের উদ্দিন সরকার জামিনে রয়েছেন।
এজাহারে বলা হয়, দায়িত্বে থাকার সময় ২০১৪ সালের ২৯ মে থেকে ২০১৬ সালের ৩০ জুনের মধ্যে আসামিরা পরস্পরের যোগসাজশে বিভিন্ন অঙ্কের মোট ৯ কোটি ১৫ লাখ ৩০ হাজার ৪২৫ টাকা আত্মসাৎ করেন। মূলত ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বাজেট ও বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনা ছাড়াই তিনটি ভুয়া দরপত্র দেখিয়ে বাজারদরের চেয়ে বেশি মূল্যে হাসপাতালে ভারী যন্ত্রপাতি সরবারহ করেন তারা।
মেসার্স ওয়ার্সি সার্জিক্যাল, জেনেটিক ট্রেডিং ও রিলায়েন্স সলিউশন লিমিটেডের ভুয়া প্যাডে ভুয়া স্বাক্ষর দিয়ে বাজারদরের কাগজপত্র তৈরি করেন আসামিরা।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, তিনটি দরপত্রে ১ কোটি ৬৮ লাখ ৯৫ হাজার ৪২৫ টাকা, ১ কোটি ৩০ লাখ ৪০ হাজার টাকা ও ৬ কোটি ১৫ লাখ ৯৫ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন আসামিরা।
পিপি কাজী ছানোয়ার বলেন, ‘তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়ায় ২০১৯ সালে মামলাটি করা হয়। ওই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক মোহাম্মদ সিরাজুল হক ছয় মাস আগে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। দুপুরে আদালত অভিযোগপত্রটি গ্রহণ করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ডা. সরফরাজ খান চৌধুরী অভিযোগপত্র জমা হওয়ার আগ পর্যন্ত উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়েছিলেন। ছয় মাস আগে অভিযোগপত্র জমা হলেও তিনি আদালতে হাজির হননি।
‘রোববার আদালতে হাজির হলে অভিযোপত্রটি গ্রহণ করে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। আসামিদের মধ্যে একজন জামিনে থাকায় বাকিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।’