বেসরকারি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী সানজানা মুসাদ্দিকাকে হত্যা করা হয়েছে অভিযোগ করে তার বাবাকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা।
মহাখালীর ওয়্যারলেস গেট এলাকায় রোববার দুপুরে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে মানববন্ধনে এমন দাবি করেন সানজানার বন্ধুরা।
সানজানা ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্রী ছিলেন। রাজধানীর দক্ষিণখানের হাজি ক্যাম্প এলাকায় নিজ বাসার ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ায় তার মৃত্যু হয় বলে দাবি পরিবারের।
শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ওপর থেকে কিছু পড়ার শব্দ পেয়ে ভবনের উত্তর পাশে সানজানাকে আহত অবস্থায় পাওয়া যায়। তাকে উদ্ধার করে উত্তরার বাংলাদেশ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে জানান।
মানববন্ধনে যোগ দেয়া সানজানার বন্ধু অর্ণব দেব নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এটা পুরাপুরি একটা হত্যা ছিল। আমি সানজানাকে চিনি ইউনিভার্সিটির শুরুর থেকে। শুরু থেকেই আমরা বন্ধু। ওর বাবা কখনও ওকে মেয়ে হিসেবে ট্রিট করে না। ওকে সব সময় মারধরের ওপর রাখে। আমি এটাও শুনেছি সানজানাকে এক মাসের মতো বাসায় বেঁধে রাখা হয়েছিল, যেটা ওর খালা আমায় জানিয়েছেন।
‘ওর খালা আমায় এও বলেছেন, সানজানার হৃদয় নামের এক কাজিন আছে। সেও সানজানার গায়ে হাত তুলত। সানজানার বাবার পরিবার সানজানার বিরুদ্ধে কথা বলত সব সময়। সানজানার মায়ের গায়ে হাত তোলা হতো। ঠেকাতে গেলে সানজানার গায়ে হাত তোলা হতো।’
তিনি আরও বলেন, ‘গতকাল (শনিবার) সানজানা মারা যাওয়ার পরে তার এক আত্মীয় এসে বলেন, সানজানার নামে যে ৫২ লাখ টাকার একটা প্লট আছে, এই প্লটটা কোথায় যাবে। তার মধ্যে অনুশোচনা বলতে কিছু নেই যে, একটা মেয়ে মারা গেছে। তার প্রথম কথাই ৫২ লাখ টাকার প্লট কী হবে। থানায় একটা কথা ছড়ানো হচ্ছিল, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট নাকি পরিবর্তন করে ফেলা হবে; সানজানার বডি গায়েব করে ফেলা হবে।
‘পরে আমরা ১০ থেকে ১২ জন লাশের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। ১২ তলা থেকে লাফ দিলে ব্লিডিং হবে না, হাত-পা ভাঙবে না, বডি থেঁতলে যাবে না, এটা অসম্ভব।’
সানজানার ওপর তার বাবা কেন চড়াও ছিল, তা জানতে চাইলে অর্ণব বলেন, ‘সানজানার বাবা দুইটা বিয়ে করেছেন। সানজানার মায়ের সঙ্গে নিয়মিত ঝামেলা হতো। সানজানা ঠেকাতে গেলে তাকেও মারা হতো।’
সানজানার আরেক বন্ধু ধ্রুব বলেন, ‘সানজানার শরীরে মারের দাগ ছিল। ঘটনার পর তার বাবা পলাতক।
‘দ্রুত তাকে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হোক। সানজানা তার চিরকুটে তার বাবার নাম লিখে গেছিল।’