রাজধানীর দক্ষিণখানে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। তার নাম সানজানা মোসাদ্দিক। তিনি ইংরেজি বিভাগের ছাত্রী ছিলেন।
দক্ষিণখান হাজি ক্যাম্প এলাকায় নিজ বাসার ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি পরিবারের।
শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ওপর থেকে কিছু পড়ার শব্দ পেয়ে ভবনের উত্তর পাশে সানজানাকে আহত অবস্থায় পাওয়া যায়।
তাকে উদ্ধার করে উত্তরা বাংলাদেশ মেডিক্যালে নেওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
দক্ষিণখান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আজিজুল হক এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পারিবারিক অশান্তি ও তার বাবার মারধরের কারণে সানজানার মৃত্যু হয়েছে বলে জানান তার সহপাঠীরা।
নিলয় নামে সানজানার এক বন্ধু বলেন, ‘ওর বাবা ওকে প্রায়ই মারধর করত। মারধরের কারণে মাঝে মাঝে সে ক্লাসে আসতে পারত না। ওর হাত ও শরীরে মারের দাগ রয়েছে।’
সানজানার বাবা চার-পাঁচ বছর আগে দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন। সানজানা তার মায়ের সঙ্গে আলাদা বাসায় থাকতেন। এক মাস ধরে সানজানার বাবা মো. শাহিন ওই বাসাতেই অবস্থান করছিলেন।
দক্ষিণখান থানা পুলিশ জানিয়েছে, সানজানার বাসা থেকে একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়েছে। যাতে তার মৃত্যুর জন্য বাবা শাহিনকে দায়ী করেছেন সানজানা।
বাসা থেকে পড়াশোনার জন্য টাকা না দেয়ায় লাস্ট সেমিস্টার সানজানা পড়তে পারেননি বলে জানিয়েছেন তার এক সহপাঠী।
মাইশা আতকিয়া নামের আরেক সহপাঠী নিউজবাংলাকে বলেন, সানজানা ভালো স্টুডেন্ট ছিল। আঙ্কেল ওকে প্রচুর মারধর করত। গত রমজানে ওকে মেরে তিন দিন বিছানায় ফেলে রাখছিল। বিভিন্ন সময় দেখা যাইত আঙ্কেল আন্টিকে মারতে গেছে, ও প্রটেস্ট করছে, তখন ওরে মারত। ওর হাত ভেঙে গেছিল, এ রকম অনেকবার ঘটছে। লাস্ট সেমিস্টারের আগের সেমিস্টারে ও মাঝখান থেকে ড্রপ করছে। ও নিতে পারে নাই এসব কিছু। বাসা থেকে বলে ওকে টাকা দেবে না।
সানজানার কাজিনদের বরাত দিয়ে মাইশা বলেন, ‘আজকে টাকা নিয়ে ঝগড়া বাধে। ওকে নাকি আঙ্কেল লাঠি দিয়ে পিটিয়েছে। হাত বাধা থাকলে যে রকম দাগ হয় ওর হাতে সে রকম দাগ রয়েছে। লাঠি দিয়ে মারার দাগ আছে।’
সানজানাকে প্রায়ই মারধরের বিষয়টি প্রতিবেশীদের কাছ থেকে শুনেছেন বলে জানিয়েছেন পরিদর্শক (তদন্ত) আজিজুল হক।
তিনি বলেন, ‘একটি ছোট কাগজে লেখা চিরকুট আমরা পেয়েছি। হাতের লেখা যাচাই ছাড়া বিস্তারিত বলা যাচ্ছে না।’
দক্ষিণখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুনুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘খবর পেয়ে আমাদের টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। সুরতহাল তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠাব। মৃত্যুর কারণ তদন্তসাপেক্ষে জানানো হবে।’