বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

১৭০ টাকা মজুরি: নেতারা খুশি, শ্রমিকদের সিদ্ধান্ত রাতে

  •    
  • ২৭ আগস্ট, ২০২২ ২১:১০

নতুন মজুরি নির্ধারণের প্রতিক্রিয়ায় লাক্কাতুরা চা বাগানের শ্রমিক মলয় গোয়ালা বলেন, ‘এইটা কিছু হইল? প্রধানমন্ত্রী মাত্র ৫০ টাকা বাড়ালেন। তিনি আমাদের মা, অথচ আমাদের দুঃখটা বুঝলেন না।’

চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১৭০ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা সন্তুষ্টি প্রকাশ করলেও সাধারণ চা শ্রমিকরা খুশি হননি।

বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে ১৭০ টাকা দিয়েও চলা যাবে না বলে দাবি তাদের।

দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে ১৮ দিন ধরে ধর্মঘট পালন করছেন দেশের সব চা বাগানের শ্রমিক। এ অবস্থায় শনিবার বাগান মালিকদের নিয়ে বসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে ১৩ জন বাগান মালিক অংশ নেন।

প্রায় ২ ঘণ্টার ওই বৈঠক শেষে গণভবনের সামনে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমেদ কায়কাউস। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী চা শ্রমিকদের মজুরি ৫০ টাকা বাড়িয়ে ১৭০ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছেন।

রোববার থেকে কাজে যোগ দিতে শ্রমিকদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী অনুরোধ করেছেন বলেও জানান মুখ্য সচিব।

চা শ্রমিকরা বর্তমানে ১২০ টাকা মজুরি পান। এ অবস্থায় মাত্র ৫০ টাকা মজুরি বাড়ায় তারা সন্তুষ্ট নন বলে জানিয়েছেন। সিলেটের মালনীছড়া চা বাগানের শ্রমিক স্বপন নায়েক বলেন, ‘৩০০ টাকার দাবিতে আমরা ১৮ দিন ধরে আন্দোলন করছি। এখন মাত্র ৫০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। ১৭০ টাকায় আমরা কীভাবে চলব?’

লাক্কাতুরা চা বাগানের শ্রমিক মলয় গোয়ালা বলেন, ‘এইটা কিছু হইল? প্রধানমন্ত্রী মাত্র ৫০ টাকা বাড়ালেন। তিনি আমাদের মা, অথচ আমাদের দুঃখটা বুঝলেন না।’

মলয় বলেন, ‘এই মজুরিতে আমরা কাজে যোগ দিতে আগ্রহী না। তবে অন্য সব শ্রমিক যোগ দিলে আমাকেও তো যোগ দিতে হবে।’

মালনীছড়া চা বাগানের পঞ্চায়েত সভাপতি সুফল বাড়ৈই বলেন, ‘১৭০ টাকা মজুরি নির্ধারণে আমরা সন্তুষ্ট না। আমরা ৩০০ টাকা দাবি করেছিলাম। প্রধানমন্ত্রী অন্তত ২০০ টাকা নির্ধারণ করে দিতে পারতেন। কিন্তু এখন যেটি নির্ধরণ করা হয়েছে তাতে আমাদের খেয়ে বাঁচাই সম্ভব না। বাচ্চাদের লেখাপড়া করাব কী করে?’

সুফল আরও বলেন, আমরা রাতে সব শ্রমিককে নিয়ে বসব। সেখানে সিদ্ধান্ত হবে ধর্মঘট প্রত্যাহার করে কাজে যোগ দেব কি না।

সাধারণ শ্রমিকরা এমন অসন্তোষের কথা জানালেও চা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তে সন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন।

চা সংসদের সিলেট ভ্যালির সভাপতি রাজু গোয়ালা বলেন, ‘আমরা প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তে খুশি। তিনি আমাদের দুঃখ বুঝে মজুরি বাড়িয়ে দিয়েছেন। আমরা আগামীকাল থেকে কাজে যোগ দেব।’

সাধারণ শ্রমিকদের অসন্তোষ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কিছু লোককে কোনো কিছুতেই সন্তুষ্ট করা যায় না। তাদের অসন্তোষ থাকবেই।’

এ সময় বাগান থেকে শ্রমিকদের যে রেশন দেয়ার কথা তা ঠিকমতো দেয়া হচ্ছে কি না তদারক করতে একটি কমিটি গঠন করে দিতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ জানান রাজু।

১৭০ টাকা মজুরি নির্ধারণ করে দেয়ায় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে শ্রমিক ইউনিয়নের সিলেট ভ্যালির সাবেক সভাপতি শ্রীবাস মাহালি বলেন, ‘আমরা প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞ। তার সিদ্ধান্তে খুশি।’

তিনি বলেন, ‘কাল আমাদের বাগান বন্ধ। সোমবার থেকে এখানকার সব শ্রমিক কাজে যোগ দেবে।’

কিছু শ্রমিকের অসন্তোষ নিয়ে শ্রীবাস বলেন, ‘তাদের মধ্যে রাজনীতি ঢুকে পড়েছে। এরা এই ইস্যুতে রাজনীতি করতে চাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তই যদি তারা না মানে, তাহলে আর কার কথা মানবে?’

এ বিভাগের আরো খবর