বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, ‘বাংলাদেশের যে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে তা পরিবর্তন করার জন্য সরকার বলেছিল সেপ্টেম্বর থেকে উন্নতি হবে। কিন্তু সরকারের পদক্ষেপে প্রমাণ করছে আগামী দিনগুলোতে আরও ভয়াবহ পরিস্থিতি হবে।’
শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জিয়াউর রহমান সমাজ কল্যাণ পরিষদের উদ্যোগে এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
দুদু বলেন, ‘বাংলাদেশ এক অসহনীয় পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। জ্বালানি তেলসহ বিদ্যুৎ, গ্যাস, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। এই মূল্যবৃদ্ধির কারণে সাধারণ মানুষের জীবন এক কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে। এর সঙ্গে মানুষের নিরাপত্তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। বিশেষ করে এই দেশের নারীদের অবস্থা ভয়াবহ। পরিবহন থেকে শুরু করে নিজের বাড়িতেও তারা নিরাপদ নয়।
ধর্ষণ, হামলা-মামলা নিত্যদিনের ঘটনায় রূপান্তরিত হয়েছে।’
তিনি বলেন, সরকার যতই আশ্বস্ত করুক না কেন, সরকারের পদক্ষেপগুলোতে এ দেশ দিন দিন আরও খারাপ অবস্থার দিকে যাচ্ছে। আমরা জানি, সরকার বর্তমানে অফিসের সময় পরিবর্তন করেছে। স্কুলের সাপ্তাহিক বন্ধ বৃদ্ধি করেছে।
‘বাংলাদেশের যে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, তা পরিবর্তন করার জন্য সরকার সেপ্টেম্বর থেকে উন্নতির কথা বলেছিল। কিন্তু সরকারের পদক্ষেপ তা প্রমাণ করছে না। এই সময়ে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বসে জাতীয় পরিস্থিতির মূল্যায়ন করা উচিত ছিল। কিন্তু সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলকে দমন করার জন্য নির্যাতনের এমন কোনো পথ নেই যে ব্যবহার করেনি।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি সাত দিনের কর্মসূচি দিয়েছিল। ঢাকাসহ প্রতিটি জেলা, মহানগর, উপজেলা, ইউনিয়নে সমাবেশ করার। কিন্তু আমরা লক্ষ করছি, উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে সমাবেশে তারা হামলা করছে এবং রক্ত ঝরাচ্ছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ করি।’
‘এই নির্যাতন করে বাংলাদেশে বেশিদিন ক্ষমতায় থাকা যাবে না। আগামী দিন বিএনপির দিন, আগামী দিন জাতীয়তাবাদের দিন, আগামীর দিন শহীদ জিয়াউর রহমানের নেতাকর্মীদের দিন। এই দেশে যখনই ভয়াবহতা সৃষ্টি হয়, তখনই বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানকে দরকার পড়ে। এবং তাদের নেতৃত্বেই অতীতে জালেম সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম গড়ে তোলা সম্ভব হয়েছিল। এর আগে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে সামরিক স্বৈরশাসনকে গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বিতাড়িত করেছিলাম।’
তিনি বলেন, এ দেশ থেকে যারা লাখ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। তাদের একদিন জবাবদিহি করতে হবে। পাচারকৃত টাকা বিশ্বের যেকোনো দেশে রাখেন না কেন, আগামীতে যে সরকার আসবে তা ফিরিয়ে আনা হবে। এবং এই লুটপাটের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের আইনে সোপর্দ করা হবে।
‘গত ৫০ বছরে এ রকম মেরুদণ্ডহীন নির্বাচন কমিশন এ দেশের জনগণ আর দেখেনি মন্তব্য করে দুদু বলেন, নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা পালনে আমরা প্রত্যাশা করি না। আমরা তাদের প্রত্যাখ্যান করেছি। আমরা মনে করি, এ দেশে নিরপেক্ষ সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হলে দল নিরপেক্ষ একটা সরকার প্রয়োজন। দল নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে যদি নির্বাচন করা না যায়, তাহলে এ দেশে যে সংকট তৈরি হয়েছে এই সংকট থেকে মুক্তির দ্বিতীয় আর কোনো পথ নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত গণতন্ত্র আপনারা ভুূলুণ্ঠিত করবেন না। এটার পরিণতি আপনাদের জন্য ভালো হবে না।’
মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সভাপতি গিয়াস উদ্দিন খোকন, মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আব্দুর রহিম, জিনাফ সভাপতি মিয়া আনোয়ার, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কামাল, জনি সরকার, মোক্তার আকন্দ প্রমুখ।