অ্যাভোকাডো মেক্সিকো ও গুয়াতেমালার ফল হলেও বাংলাদেশেও এর চাষ সীমিতভাবে শুরু হয়েছে। মাদারীপুর হর্টিকালচার সেন্টারে দুটি গাছে ফল ধরেছে দুই শয়ের মতো। দক্ষিণাঞ্চলের মাদারীপুরেই প্রথম চাষ হচ্ছে অ্যাভোকাডো।
অনেকে কৌতূহল নিয়ে দেখতে ও কিনতে আসেন ফলগুলো। ভেষজগুণে ভরপুর ফলটি বাণিজ্যিকভাবে চাষ করতে কৃষকের কাছে পৌঁছে দেয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে হর্টিকালচার সেন্টার কর্তৃপক্ষ।
অ্যাভোকাডো গাছটি ১০ ফুট উচ্চতার। তাতে থোকায় থোকায় ঝুলছে চকচকে সবুজ রঙের ফল। দেখতে অনেকটা পেয়ারা বা নাশপাতির মতো। একেকটির ওজন প্রায় আধা কেজি। পাতার ফাঁকে হাওয়ায় দোল খাচ্ছে ফলগুলো।
দামি এ ফল ঘিরে মানুষের কৌতূহলের অন্ত নেই। অনেকে দাঁড়িয়ে দেখেন ফলগুলো। অনেকে ভালো লাগা থেকে কিনে রোপণ করতে চান এটি।
কুনিয়া ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামের মফেল মাতুব্বর বলেন, ‘বিদেশি এই ফলের নাম শুনে আসছি। এসে ফলটা দেখে প্রাণ জুড়িয়ে গেল। দেখতে যেমন সুন্দর, খেতেও সুস্বাদু হবে। কিন্তু খাওয়ার উপায় নেই। কর্তৃপক্ষের কাছে অগ্রিম টাকা দিলেও যদি এক বা দুটি গাছ দিত, তাহলে কিনে নিতাম। আশা করি, ভবিষ্যতে গাছ কিনে বাড়িতে লাগাতে পারব।’
আল-আমীন মোল্লা নামে আরেক দশনার্থী বলেন, ‘আমি মাদারীপুর হর্টিকালচারে এসে বিভিন্ন রকমের ফল দেখেছি। তার মধ্যে অ্যাভোকাডো ফলটি দেখে আমার খুব ভালো লেগেছে। এখানকার কৃষিবিদদের কাছে শুনলাম এই ফলটিতে অনেক পুষ্টিগুণ। আমার খুব ইচ্ছা এটির একটি চারা আমি বাসায় লাগাব।’
উদ্যানতত্ত্ববিদ শাকির আহম্মেদ বলেন, ‘ অ্যাভোকাডো খেতে যেমন সুস্বাদু, তেমনি প্রচুর ভিটামিনে ভরপুর। এ ফলটি সম্প্রসারণের জন্য বাংলাদেশের হর্টিকালচারগুলো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এটি যেহেতু দামি একটি ফল এবং সম্ভাবনাময়, তাই যারা নতুন কৃষি উদ্যোক্তা আছেন, তারা এগিয়ে এলে ভালো কিছু করতে পারবেন বলে আমি মনে করি।’
মাদারীপুর হর্টিকালচার সেন্টারের উপপরিচালক এস এম সালাহউদ্দিন বলেন, ‘২০১৮ সালে তিনটি গাছ রোপণ করা হয়। এর মধ্যে একটি মারা যাওয়ায় এখন রয়েছে দুটি অ্যাভোকাডো গাছ। এ বছর দুটি গাছে দুই শতাধিক ফল এসেছে। বিশেষ যত্নে এ গাছের পরিপক্ব ফলের ওজন ৪০০ গ্রাম থেকে ১ কেজি পর্যন্ত।
‘অ্যাভোকাডো ফলে ২২ প্রকারের ভিটামিন ও বিভিন্ন খনিজ উপাদান রয়েছে। এতে ক্যানসার প্রতিরোধের উপাদানও বিদ্যমান। এ ছাড়া ডায়াবেটিক রোগীদের বিশেষ ওষুধ হিসেবে এটি কাজ করে। কলম ও বীজ থেকে চারা তৈরির মাধ্যমে সাধারণ চাষিদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে।
‘দক্ষিণাঞ্চলের মাটি ও জলবায়ু এই গাছ বেড়ে ওঠার উপযোগী। তাই পুষ্টিগুণসম্পন্ন এ ফলের প্রসার ঘটাতে কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে বিশেষ প্রণোদনার দাবি মাদারীপুরবাসীর।’