বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিআরটি চালু হতে অপেক্ষা আরও এক বছর

  •    
  • ২৬ আগস্ট, ২০২২ ২০:৪২

প্রকল্পটি চার বছরে শেষ হওয়ার কথা ছিল। এখন এটি শেষ হতে সময় লেগে যেতে পারে প্রায় এক যুগ। বর্তমানে প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি ৭৯ দশমিক ২ শতাংশ।

এয়ারপোর্ট থেকে গাজীপুর পর্যন্ত দেশের প্রথম বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পে বাস চলাচল করতে সময় লাগবে আরও এক বছরের বেশি। যার ফলে এই রুটে চলাচলকারী জনগণের ভোগান্তি লাঘব হচ্ছে না শিগগিরই।

প্রকল্পটি চার বছরে শেষ হওয়ার কথা ছিল। এখন এটি শেষ হতে সময় লেগে যেতে পারে প্রায় এক যুগ। বর্তমানে প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি ৭৯ দশমিক ২ শতাংশ।

চলতি বছরের ডিসেম্বরে এ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার সময় থাকলেও সে সময়ে কাজ শেষ হবে না। পুরো কাজ শেষ হতে আগামী বছরের মার্চ লেগে যেতে পারে। এরপর বাস চলাচলের জন্য আরও ছয় মাস সময় লাগতে পারে বলে জানান বিআরটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শফিকুল ইসলাম।

শুক্রবার প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে শফিকুল ইসলাম এসব কথা বলেন।

মাত্র ৩৫-৪০ মিনিটে এয়ারপোর্ট থেকে গাজীপুর যাওয়ার প্রতিশ্রুতিতে ২০১২ সালে দেশের প্রথম বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট প্রকল্প বিআরটি হাতে নেয় সরকার, যা ২০১৬ সালে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মেয়াদ বাড়াতে বাড়াতে সর্বশেষ সময় নির্ধারণ করা হয় ২০২২ সালের ডিসেম্বর। তবে চলতি বছরেও এ কাজ শেষ হবে না।

এদিকে সম্প্রতি উত্তরায় গার্ডার দুর্ঘটনায় পাঁচজন নিহত হওয়ায় বর্তমানে এ প্রকল্পের কাজ বন্ধ রয়েছে।

বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর এবং স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর যৌথভাবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।

বিআরটি প্রকল্প কবে অপারেশনে যাবে– এমন প্রশ্নের উত্তরে বিআরটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘বিআরটি প্রকল্প হাতে পাওয়ার পর (বাস চালাতে) ছয় মাস লাগবে। আগে এটা বুঝে নিতে হবে তারপর। আমাদের প্ল্যান অনুযায়ী ডিসেম্বর ২০২২ সালের মধ্যে প্রধান কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। তবে মার্চ ২০২৩ পর্যন্ত যেতে পারে। তারপর বাস চলাচলের জন্য ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত সময় লাগবে।’

তিনি বলেন, ‘বাসের কাজ ছয় মাসের জায়গায় তিন মাসে করতে পারব।’

সে হিসেবে আগামী বছরের সেপ্টেম্বর নাগাদ বিআরটি রুটে বাস চলাচলের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। ২০ দশমিক ৫ কিলোমিটার দূরত্বের এই সড়কের ১৬ কিলোমিটারের কাজ করছে সড়ক ও জনপদ বিভাগ। এটির অগ্রগতি ৮২ শতাংশ। বাকি সাড়ে চার কিলোমিটার বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ করছে, যার অগ্রগতি ৭২ দশমিক ৩৫ শতাংশ। দুটো মিলিয়ে প্রকল্পের অগ্রগতি ৭৯ দশমিক ২ শতাংশ।

কবে নাগাদ প্রকল্পটি শেষ হবে এমন প্রশ্নের উত্তরে বিআরটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘আমাদের যে পরিমাণ কাজ বাকি আছে, আমাদের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের যে সক্ষমতা, তাতে যদি আমরা তাদের শতভাগ ব্যবহার করতে পারি, তাতে এ সময় যথেষ্ট। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, এই দুর্ঘটনার আগেও ঠিকাদারদের আর্থিক অসংগতি ছিল, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সমস্যা ছিল। এর ফলে কখনই আমরা তাদের শতভাগ কাজ পাইনি।

‘এ ঘটনার পর আমরা তাদের চেপে ধরেছি। তারাও কাজকর্মে উন্নতি ঘটাচ্ছে। আমরা আশা করি এই চাপ অব্যাহত রাখতে পারব। আগে যেমন কোনো কিছু বলার আগেই তারা একটা কমিটমেন্ট দিয়ে বসত, বাস্তবে সেটা পালন করত না।’

ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘ঠিকাদারদের অথোরিটির দুটি দল চায়না থেকে এসেছে। তাদের সঙ্গে আমরা মিটিং করেছি, তারা আশ্বস্ত করেছে। তাদের কাছে আমাদের মূল তিনটা চাওয়া। ফান্ডের যে ঘাটতি এটা পূরণ করতে হবে। লোকবলের ঘাটতি পূরণ করতে হবে। শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। তারা সব বিষয়ে একমত হয়েছে।’

বিআরটি প্রকল্পের কাজ এখন বন্ধ আছে বলতে নারাজ এমডি। তিনি বলেন, ‘আমরা অফিশিয়ালি বলি সাসপেন্ডেট আছে। যে যে পয়েন্টে নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়ে যাবে, সেটা যদি আমাদের পরামর্শকরা সন্তুষ্ট হয়ে যায়, তাহলে সেখানে কাজ শুরু হয়ে যাবে।’

কাজের নিরাপত্তা দেয়ার ক্ষেত্রে কোনো রকম আপস করা হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের পরামর্শকরা যখন বলবে নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়েছে, তখনই কাজ শুরু হয়ে যাবে, সেটা আজকে নাগাদ হতে পারে, কালকেও হতে পারে। সম্পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত হলেই কাজ শুরু করব।’

নিরাপত্তা নিশ্চিত ছাড়াই এত বড় প্রকল্পের ৮০ শতাংশ কাজ কীভাবে শেষ হলো– জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘ভাবা যাক আর না যাক, ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হয়ে গেছে। এত ঘাটতির পরও ৮০ শতাংশ কাজ হয়ে গেছে। যদি এই ঘাটতি না থাকত, কোথাও কোথাও শতভাগ কাজ শেষ হয়ে যেত। তাদের ঘাটতির জন্যই আমরা পিছিয়ে আছি।’

তদারকি প্রতিষ্ঠানের গাফলতি আছে কি না- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘গাফলতির বিষয়ে তদন্ত কমিটি কাজ করছে। তাদের প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলতে পারছি না। বাস্তব ব্যাপারটা হলো ঠিকাদারদের ওপরে দোষ চাপালেই হয়। পরামর্শদাতাদের যারা তদারক করছে, তাদের দায় কিছুটা থাকে। তবে মূল দায় ঠিকাদারের।’

নতুন করে সময় বাড়লে খরচ বাড়বে কি না– এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন,‘সময় বাড়লেই যে খরচ বাড়বে, বিষয়টা এমন না। কোনো ক্ষেত্রে খরচ বাড়তে পারে।’

এ বিভাগের আরো খবর