জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কাছে প্রেরণা নিয়ে সরকার পতন চায় বিএনপি। বলেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
অন্যদিকে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন নজরুল ছাড়া তাদের কোনো উপায় নাই।
জাতীয় কবির ৪৬ তম মৃত্যুবার্ষিকীকে সামনে রেখে শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনায় বক্তব্য রাখেন দুই নেতা।
‘নজরুলের রাজনীতি-বাংলাদেশের রাজনীতি’ বিষয়ে এই আলোচনার আয়োজন করে ‘জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক ফাউন্ডেশন’ নামে বিএনপিপন্থি একটি সংগঠন।
ফখরুল বলেন, ‘চলমান রাজনৈতিক সংকট এবং ক্ষমতাসীন সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ গড়ে তোলার জন্য জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এখনও প্রাসঙ্গিক ও প্রেরণাদায়ক।
‘কবিদের মধ্যে মানুষকে জাগিয়ে তোলা, অন্যায়ের বিরুদ্ধে, অত্যাচারের বিরুদ্ধে, নির্যাতনের বিরুদ্ধে, নিপীড়নের বিরুদ্ধে… আমার মনে হয় এই সময়ে নজরুল ইসলামকে যদি স্মরণ করি তাহলে আরও বেশি অনুপ্রাণিত হব।’
বিএনপি নেতা বলেন, ‘যখন ভোলাতে আমার ভাই নুর আলমকে গুলি করে হত্যা করা হয়, যখন ইলিয়াস আলীকে গুম করে দেয়া হয়, অথবা যখন আমাদের নেতা কর্মীদের উপর নির্যাতন-নিপীড়ন করা হয়, যখন আমরা দেখি আমাদের নেতা গণতন্ত্রের মাতা বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে বন্দি করে রাখা হয়, যখন আমাদের নেতা তারেক রহমানকে অন্যায়ভাবে বিদেশে নির্বাসিত করে রাখা হয়, তখন কাজী নজরুল ইসলাম আমার কাছে অনেক বেশি প্রাসঙ্গিক মনে হয়। তাকে অনেক বেশি অনুসরণ করতে ইচ্ছে করে।’
ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার দেশের সব কিছু দুমড়ে মুচড়ে ধ্বংস করে দিয়েছে। ক্ষমতাসীনরা ফ্যাসিস্ট ও দানবে পরিণত হয়েছে। এই সরকারকে প্রতিহত ও পরাজিত করাই বিএনপির মূল লক্ষ্য।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘বাংলাদেশে দুঃশাসন চলছে। এই দুঃশাসন থেকে মুক্ত হতে নজরুলের গান-কবিতা প্রতিটা মুহূর্তে প্রেরণা যোগাবে। কারণ, এখনও আমাদেরকে কারাগারে যেতে হয়, সংগ্রামে করতে হয়, তাই নজরুল ছাড়া আমাদের গত্যন্তর নেই।’
জাতীয় কবিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশে নিয়ে এলেও তাকে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান নাগরিকত্ব দিয়েছিলেন উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘জিয়াউর রহমান বুঝেছিলেন তার (কাজী নজরুল ইসলাম) গান, কবিতা, চিন্তা-চেতনা, সুর আমাদের মাটি থেকেই উৎসারিত হয়।’
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘নেতাজী সুভাষচন্দ্র বোস বলেছেন আমরা, যখন যুদ্ধে যাব নজরুলের গান গাইব, আমরা যখন মিছিলে যাব, নজরুলের গান গাইব, আমরা যখন কারাগারে যাব, তখনও নজরুলের গান গাইব। তাই নজরুলকে কেউ ছোট করলেও এ দেশের সাধারণ মানুষ সত্যিকারের বিজ্ঞজনেরা, দেশপ্রেমিকরা তাকে মাথার মুকুট করে নিয়েছে।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নজরুল গবেষক ও বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কবি আবদুল হাই শিকদার। আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির ব্যাপারীও বক্তব্য রাখেন।