বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নানা শর্তে আইজিপিকে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা

  •    
  • ২৫ আগস্ট, ২০২২ ১৮:৪৪

জাতিসংঘের সফরে গিয়ে নিউ ইয়র্কের বাইরে যেতে পারবেন না, এমন শর্তে দেয়া হয়েছে ভিসা। আবার নিউ ইয়র্ক সিটিতেও তার কর্মকাণ্ড সীমিত থাকবে। বেনজীর জাতিসংঘ সম্মেলন ছাড়া সামাজিক, রাষ্ট্রীয় বা সরকারি-বেসরকারি কোনো অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারবেন না।

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার মধ্যে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের আমন্ত্রণে দেশটিতে যাচ্ছেন পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদ। তাকে ভিসা দিয়েছে দেশটি। তবে জুড়ে দেয়া হয়েছে নানা শর্ত।

বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, জাতিসংঘের সফরে গিয়ে নিউ ইয়র্কের বাইরে যেতে পারবেন না, এমন শর্তে দেয়া হয়েছে ভিসা। আবার নিউ ইয়র্ক সিটিতেও তার কর্মকাণ্ড সীমিত থাকবে।

বেনজীব জাতিসংঘ সম্মেলন ছাড়া সামাজিক, রাষ্ট্রীয় বা সরকারি-বেসরকারি কোনো অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারবেন না।

শর্ত ভঙ্গের সঙ্গে সঙ্গে তার ভিসা বাতিল হবে বলেও জানিয়ে দেয়া হয়েছে।

আগামী ৩১ আগস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে জাতিসংঘের পুলিশ সামিট হতে যাচ্ছে। এতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের নেতৃত্বে ছয় সদসের‌্য প্রতিনিধি দল বাংলাদেশের হয়ে অংশ নেবে।

আইজিপি ছাড়া অন্য সদস্যরা হলেন- স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের যুগ্ম সচিব আবু হেনা মোস্তফা জামান, মন্ত্রীর একান্ত সচিব (উপসচিব) মু. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত ডিআইজি) নাশিয়ান ওয়াজেদ ও সহকারী পুলিশ মহাপরিদর্শক (এআইজি) মোহাম্মদ মাসুদ আলম।

পাঁচ জনের সফর নিয়ে কোনো অনিশ্চয়তা না থাকলেও আইজিপির সফর নিয়ে অনিশ্চয়তা ছিল এ কারণে যে, মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে গত ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে র‌্যাব এবং এর সাত কর্মকর্তাকে নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। বেনজীর আগে র‌্যাবেই ছিলেন। বাহিনীটির সাবেক প্রধান হিসেবে তিনি নিষেধাজ্ঞায় পড়েন।

এর মধ্যে দেশটিতে অনুষ্ঠেয় জাতিসংঘের চিফ অফ পুলিশ সামিটে (ইউএনকপ) অংশ নিতে ছয় সদস্যের প্রতিনিধি দলে বেনজীরের নাম রাখা হয়।

গত ৫ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব (পুলিশ-৩ শাখা) হারুন অর রশিদ স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি চিঠি প্রধান অর্থ ও হিসাব কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়।

বেনজীরের যুক্তরাষ্ট্র সফর নিশ্চিত করতে দেশটির সঙ্গে নানাভাবে যোগাযোগ করেছে সরকার। ধারণা করা হচ্ছে, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেটকে বাংলাদেশে আমন্ত্রণ জানানোর পেছনেও এই সফর নিশ্চিত করার বিষয়টি কাজ করেছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সেই চিঠির তিন দিন পর ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের আন্ডার সেক্রেটারি মিশেল জে সিসেসের সঙ্গে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের বৈঠকেও বেনজীরের সফর নিয়ে আলোচনা হয়।

সেই বৈঠক শেষে সচিব বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সবুজ সংকেত পেয়েই পুলিশর মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদকে দেশটিতে পাঠানোর বিষয়ে সরকারি আদেশ জারি হয়েছে বলে তিনি মনে করেন।

মাসুদ সেদিন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে আমন্ত্রিতরা সাধারণত সফরের সুযোগ পেয়ে থাকেন। এটার রেওয়াজ আছে। পুলিশ প্রধান এই সুবিধা পাবেন কি না, সেটা সময়ের আগে বলা যাচ্ছে না। কারণ, রেওয়াজেরও অনেক ব্যতিক্রম রয়েছে।’

১৬ আগস্ট সচিবালয়ে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হ্যাসের সঙ্গে বৈঠকের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও বলেন, আইজিপির সফরে কোনো সমস্যা হবে বলে তারা মনে করেন না।

সেদিন মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা তো মনে করি ইউএন তাকে (আইজিপি) দাওয়াত দিয়েছে, তিনি যাবেন। এর জন্য যেগুলো প্রয়োজন, সেগুলোর তিনি ব্যবস্থা নিচ্ছেন। তিনি জেনেশুনেই যাবেন।’

পিটার হাস এই সফর নিয়ে কী বলেছেন, সেটিও জানান মন্ত্রী। বলেন, ‘তিনি (রাষ্ট্রদূত) যেটা বলেছেন ইউএনের সঙ্গে তাদের একটি সমঝোতা রয়েছে। সে অনুযায়ী এটা প্রক্রিয়ায় রয়েছে। সেটা শেষ হয়ে এলে এটা নিশ্চিত করতে পারবেন।’

বেনজীরের এই সফর নিশ্চিত করার পাশাপাশি র‌্যাবের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারেও দেশটির সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এ জন্য নিয়োগ করা হয়েছে লবিস্ট।

যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত যে বক্তব্য এসেছে, সেটি হলো, নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া একটি আইনি প্রক্রিয়া।

আইজিপির ভিসা বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস জানায়, কোনো ব্যক্তির ভিসা সংক্রান্ত তথ্য দেয়া যুক্তরাষ্ট্রের আইনে নিষিদ্ধ।

নিউজবাংলার পাঠানের ই-মেইলের জবাবে দূতাবাসের মুখপাত্র জেফ রিডেনর বলেন, ‘জাতিসংঘের স্বাগতিক রাষ্ট্র হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র সংস্থাটির সঙ্গে করা চুক্তি অনুযায়ী অল্প কিছু ক্ষেত্র ছাড়া সদস্য রাষ্ট্রগুলোর প্রতিনিধিদের সদর দফতরে আসার বিষয়টি নিশ্চিত করে। আমরা কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তির তথ্য আলোচনা করি না।

‘সাধারণত সেকশন ৭০৩১ (সি) এর মাধ্যমে ছাড় দেয়া হয়, যার মাধ্যমে বিশেষ ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ভ্রমণের সুযোগ দেয়া হয়। র‍্যাব এবং এর বতর্মান ও সাবেক কর্মকর্তাদের ওপর যে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিলো তা বলবৎ থাকবে। সংস্থাটির মাধ্যমে ঘটা মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় স্বচ্ছতাহীনতায় আমাদের উদ্বেগও বহাল রয়েছে।’

এ বিভাগের আরো খবর