লক্ষ্মীপুরে জোর করে মুখে কীটনাশক (বিষ) ঢেলে পিটিয়ে স্ত্রী শিল্পী আক্তারকে হত্যার দায়ে স্বামী মো. হোসেনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন। রায়ের সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন না আসামি।
লক্ষ্মীপুর জজ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জসিম উদ্দিন এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, আসামি হোসেন তার স্ত্রীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছেন। আদালতে ঘটনাটি প্রমাণ হয়েছে। এতে আদালত তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেয়। আসামি পলাতক আছেন।
দণ্ডিত হোসেনের বাড়ি লক্ষ্মীপুর সদরের ভবানীগনু ইউনিয়নের চরমনসা গ্রামে।
আদালত ও এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০০৩ সালে হোসেনের সঙ্গে লক্ষ্মীপুর সদরের মান্দারী ইউনিয়নে যাদৈয়া গ্রামের আব্দুল হাসেমের মেয়ে শিল্পীর পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তাদের সংসারে তিন মেয়ে ও এক ছেলে। ২০১৬ সালে হোসেন দ্বিতীয় বিয়ে করেন। দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে তিনি চট্টগ্রামে বসবাস করতেন। এর পর থেকে তিনি প্রথম স্ত্রী ও সন্তানদের ভরণপোষণ বন্ধ করে দেন। হোসেন একপর্যায়ে শিল্পীকে হত্যার পরিকল্পনা নিয়ে চরমনসা গ্রামের বাড়িতে যান।
২০১৮ সালের ২৭ আগস্ট সন্ধ্যায় পাশের তোরাবগঞ্জ বাজার থেকে হোসেন কীটনাশক কেনেন। বাড়ি গিয়ে পানিতে কীটনাশক মিশিয়ে স্যালাইন বলে শিল্পীকে খেতে বলেন। পানি ঘোলা ও গন্ধ হওয়ায় শিল্পী তা খেতে চাননি। একপর্যায়ে হোসেন জোর করে মুখ চেপে ধরে শিল্পীকে বিষ খাইয়ে দেন৷ পরে শিল্পী কয়েকবার বমি করেন। এ সময় ঘর থেকে বেরিয়ে যান হোসেন।
এদিন রাতে হোসেন ঘরে ফিরে শিল্পীর মাথায় আঘাত করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেয়ার পথে তিনি মারা যান। এ ঘটনার দুদিন পর শিল্পীর বাবা আব্দুল হাসেম বাদী হয়ে হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
২০১৯ সালের ২০ অক্টোবর পুলিশ হোসেনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন৷ দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে দুপুরে এ রায় দেয় আদালত। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশের সঙ্গে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও এক বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।