ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে তৃতীয় বর্ষের ছাত্র পরিচয়ে ক্লাস করেছেন তিন বছর। অংশ নিয়েছেন বিভিন্ন পরীক্ষায়। বন্ধুদের সঙ্গে গেছেন ট্যুরেও। অবশেষে জানা গেল তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নন।
বিভাগের ষষ্ঠ সেমিস্টারের একটি কোর্সের মিডটার্ম পরীক্ষায় বুধবার অংশ নেয়ার পর তাকে সন্দেহ হলে প্রক্টর অফিসে হস্তান্তর করা হয়। প্রক্টর অফিস সেই শিক্ষার্থীকে শাহবাগ থানা পুলিশের কাছে তুলে দেয়।
তরুণের নাম সাজিদ উল কবির। তিনি গত তিন বছর নিজেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের আবাসিক ছাত্র বলে পরিচয় দিতেন, তবে হলে থাকতেন না।
বিভাগের তৃতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘এতদিন ধরে সাজিদকে আমরা সহপাঠী ভেবে এসেছি। একসঙ্গে আমরা ট্যুরেও গিয়েছি। আজ জানলাম সে আমাদের কেউ না। আমরা হতবাক।’
বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বুধবার বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ষষ্ঠ সেমিস্টারের মিডটার্ম পরীক্ষা ছিল। এতে সাজিদও অংশ নেন। পরে সন্দেহ হলে বিভাগের অধ্যাপক মামুন আল মোস্তফা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। পরিচয়পত্র দেখাতে না পারায় বিভাগ তাকে প্রক্টর অফিসে পাঠায়।
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারপারসন অধ্যাপক ড. তাসনিম সিদ্দিকী বলেন, ‘আমাদের এক শিক্ষকের একটি কোর্সের পরীক্ষায় ওই শিক্ষার্থী একটি রোল নম্বরে পরীক্ষা দিচ্ছিলেন, যেটি তার নয়। প্রাথমিকভাবে আমরা তাকে আমাদের বিভাগের ছাত্র নয় বলে শনাক্ত করেছি।’
পরে প্রক্টর অফিস ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের অফিসের প্রতিনিধিদের কাছে সাজিদকে তুলে দেয়া হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সহকারী প্রক্টর আবু হোসেন মুহম্মদ আহসান বলেন, ‘মিডটার্ম পরীক্ষা চলার সময় বিভাগের শিক্ষকদের অভিযোগের ভিত্তিতে আমি এবং পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিসের দুই কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট বিভাগে যাই।
‘জানতে পেরেছি তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নন। বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে তার পড়াশোনার অনেক ইচ্ছে ছিল, সুযোগ পাননি। তাই এক বন্ধুর সঙ্গে মাঝেমধ্যে ক্লাস করতেন। কয়েকটি পরীক্ষাও দিয়েছেন।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, ‘অভিযুক্ত শিক্ষার্থী স্বীকার করেছেন তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নন, বহিরাগত হিসেবে ক্লাস-পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। জবানবন্দি ও বিভাগের অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে শাহবাগ থানায় কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তারাই পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে।’
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদুত হাওলাদার নিউজবাংলাকে জানান, সাজিদ নামে একজন তাদের হেফাজতে আছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।