গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী অনুরোধ করে আসার পর নতুন দলের নিবন্ধনের সময় দুই মাস বাড়িয়েছে নির্বাচন কমিশন। ফলে ২৯ আগস্টের মধ্যে আবেদন করার যে সময় বেঁধে দেয়া হয়েছিল, সেটি অক্টোবরের শেষ পর্যন্ত করা যাবে।
বুধবার সকালে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের সঙ্গে দেখা করে এই অনুরোধ জানিয়ে আসার পর বিকেলেই কমিশনের জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক এস এম আসাদুজ্জামান এই তথ্য জানা।
নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা বলছেন, প্রতি সংসদ নির্বাচনের আগে নতুন দলগুলোকে নিবন্ধন দিতে আবেদন আহ্বান করার বিধান আছে। গত ২৬ মে দলগুলোর কাছে আবেদন আহ্বান করে ২৯ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়া হয়েছিল।
এখন পর্যন্ত ১০টির মতো দল আবেদনপত্র তুলেছে। এদের মধ্যে আবেদনপত্র জমা দিয়েছে দুটি। একটি হলো বাংলাদেশ ন্যাশনাল রিপাবলিকান পার্টি, অন্যটি বঙ্গবন্ধু দুঃস্থ ও প্রতিবন্ধী উন্নয়ন পরিষদ।
এবার নতুন দল হিসেবে যারা নিবন্ধনের আবেদন করবে, তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচিত ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের গণ অধিকার পরিষদ। অন্যদিকে আগে আবেদন করে নিবন্ধন না পাওয়া গণসংহতি আন্দোলন চেষ্টা করে যাচ্ছে।
গণঅধিকার পরিষদ নিবন্ধনের আবেদন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ জন্য তারা শর্তগুলো পূরণ করার চেষ্টা করছে। আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে সব শর্ত পূর্ণ করা সম্ভব কি না, এ নিয়ে প্রশ্নের মুখে সকালে ভাসানী অনুসারী পরিষদের নেতাদের সঙ্গে নিয়ে সিইসির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী। এই সাক্ষাতের উদ্দেশ্য ছিল রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন প্রক্রিয়া সহজ করা। তিনি গণসংহতি আন্দোলনের নিবন্ধন দেয়ার অনুরোধ জানান।
সর্বশেষ দল নিবন্ধনের জন্য ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল ইসি। সময় দেয়া হয় ওই বছর ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এতে নিবন্ধন পেতে আবেদন করে ৭৬ টি দল।
কে এম নূরুল হুদা কমিশন নানা কারণে সবার আবেদন বাতিল করে দেয়। পরে আদালতের আদেশে নিবন্ধন পায় জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএম ও বাংলাদেশ কংগ্রেস।
তার পাঁচ বছর আগে ২০১৩ সালে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করলে ৪৩টি দল আবেদন করে। কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ কমিশন সে সময় বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ) ও সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটকে নিবন্ধন দেয়।
সেনা সমর্থিত তত্বাবধায়ক সরকারের সময় এ টি এম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন ২০০৮ সালে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিবন্ধনের আওতায় আনে। সে সময় ১১৭টি দল আবেদন করে নিবন্ধন পায় ৩৯টি।
অর্থাৎ সব মিলিয়ে গত ১৪ বছরে মোট ৪৪টি দলকে নিবন্ধন দিয়েছে ইসি। এর মধ্যে শর্ত পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় ও আদালতের নির্দেশে পাঁচটি দলের নিবন্ধন বাতিলও করা হয়। ফলে বর্তমানে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল রয়েছে ৩৯টি।
এ পর্যন্ত যে পাঁচ দলের নিবন্ধন বাতিল হয়েছে, সেগুলো হলো: জামায়াতে ইসলামী, ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন, ফ্রিডম পার্টি, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক পার্টি (পিডিপি) ও জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা)।