পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর শরীয়তপুরের মাঝিরঘাট থেকে মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া নৌপথে লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল বন্ধ ছিল প্রায় দুই মাস। বেকার হয়ে পড়া লঞ্চ ও স্পিডবোট শ্রমিক এবং যাত্রীদের সুবিধার জন্য এই রুটে বৃহস্পতিবার থেকে ফের চলবে লঞ্চ।
নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) সহকারী বন্দর ও পরিবহন কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন।
মাঝিরঘাটের ঘাট সুপারভাইজার মোখলেছুর রহমান মাদবর জানান, বৃহস্পতিবার থেকে ২০টি লঞ্চ ও ৪০টি স্পিডবোট চলবে। ২৫ মিনিট পরপর এক একটি লঞ্চ ছেড়ে যাবে এ ঘাট থেকে।
মাঝিরঘাট কর্তৃপক্ষ জানায়, পদ্মা সেতু চালুর পর এই নৌপথে লঞ্চ বন্ধ হয়ে যায়। কিছু যাত্রী নিয়ে স্পিডবোট চললেও তা ছিল অনিয়মিত। নদীর আশপাশের এলাকার যাত্রীদের দীর্ঘ পথ ঘুরে পদ্মা সেতু হয়ে পারাপার করতে হতো।
লঞ্চ ও স্পিডবোট বন্ধ থাকায় বেকার হয়ে পড়েন এই পেশার সঙ্গে যুক্ত শত শত চালক ও শ্রমিক।
সরেজমিন বুধবার দুপুরে দেখা গেছে, লঞ্চ-স্পিডবোট চালুর ঘোষণা শুনে ঘাট ধুয়ে-মুছে প্রস্তুত করছেন শ্রমিকরা। ঘাটে আনা হয়েছে ১০টি লঞ্চ। মাঝনদীতে থাকা ডুবোচর শনাক্ত করে সতর্ক সংকেতের পতাকা টানানো হয়েছে নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে। দুই মাস পর যেন প্রাণ ফিরেছে ঘাটে।
এ রুটে চলাচলকারী এমভি মকবুল প্লাস লঞ্চের মালিক ইকবাল খান বলেন, ‘অনেক দিন বন্ধ থাকায় লঞ্চে ধুলো-ময়লা জমে ছিল। সেসব পরিষ্কার করে প্রস্তুত করা হচ্ছে। ইঞ্জিন ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা শেষ। আশা করি যাত্রীদের মানসম্মত সেবা দিতে পারব। সেতুতে পার হতে না পারায় ভোগান্তিতে থাকা মোটরসাইকেল আমাদের ঘাটে এলে আমরা পারাপারের ব্যবস্থা করব।’
ঘাটে থাকা স্পিডবোটচালক ইমরান হাওলাদার বলেন, ‘দীর্ঘদিন লঞ্চ না চলায় ঘাটে কোনো যানবাহন আসত না। মাঝে মাঝে কিছু যাত্রী আসতেন। তাদের আমরা স্পিডবোটে নিয়ে যেতাম। দিনে একটা ট্রিপের মতো যাত্রীও হতো না। এখন লঞ্চ চালু হলে যাত্রী বাড়বে। আমাদের রোজগারের পথ তৈরি হবে।’
ঘাট সুপারভাইজার মোখলেছুর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘লঞ্চঘাটের পন্টুন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে প্রস্তুত করা হয়েছে। জ্বালানি তেলের দাম বাড়লেও আপাতত লঞ্চ ভাড়া বাড়ানো হচ্ছে না। আগের মতোই যাত্রীপ্রতি ৪৫ টাকা করে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভাড়ার বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে।’
বিআইডব্লিউটিএ কর্মকর্তা শাহাদাত বলেন, ‘এখানে থাকা লঞ্চ ও স্পিডবোটের চালক ও শ্রমিকদের বিভিন্ন নৌপথ চালু করে পুনর্বাসনের চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। এ কারণে এখানে লঞ্চ ও স্পিডবোট চালুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। নৌপথ পাড়ি দিতে যাত্রীদের শতভাগ নিরাপদ ভ্রমণ নিশ্চিত করা হয়েছে।’