নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারসহ নানা দাবিতে বিএনপি ছাড়াও সরকারবিরোধীদের নানা কর্মসূচির মধ্যে আগামী মাস থেকে রাজপথে থাকার ঘোষণা দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জোট ১৪ দল। লক্ষ্য আগামী জাতীয় নির্বাচন।
কী ধরনের কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকবেন জানিয়ে জোটের মুখপাত্র আমির হোসেন আমু বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন বিভাগে যাব, বিভিন্ন জেলায় যাব, ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন থানায় আমরা মিটিং-মিছিল করব।’
জাতীয় শোক দিবস স্মরণে বুধবার দুপুরে রাজধানীতে ১৪ দল আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য বলেন, ‘আপনারা প্রস্তুত, আমরাও প্রস্তুত। ইনশাআল্লাহ জয় আমাদের সুনিশ্চিত। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আগামী নির্বাচনে অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তির ঐক্যের জয় হবে।’
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসাইন চৌধুরী মায়া, কামরুল ইসলাম, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দীলিপ বড়ুয়া, জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আকতার, জেপির শেখ শহিদুল ইসলামও বক্তব্য রাখেন।
এরশাদবিরোধী আন্দোলনে রাজপথে বিএনপির যুগপৎ কর্মসূচি দেয়ার কথা স্মরণ করে আমু বলেন, ‘আজকে যে ভোট ব্যবস্থা শক্তিশালী হয়েছে, এগুলো তো তার প্রস্তাবে হয়েছিল। সেই আন্দোলনে শরিক হয়েছিলেন খালেদা জিয়াও। সেদিন তিন জোটের রূপরেখা পরিষ্কারভাবে ছিল, তিনটি টার্মের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার থাকবে। কিন্তু খালেদা জিয়া সরকারে আসার পর তারা সেটা সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করেনি।’
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের আন্দোলনের সময় সে সময়ের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার একটি বক্তব্যও স্মরণ করেন আমু। বলেন, “খালেদা জিয়া বলেছিলেন ‘পাগল ও শিশু ছাড়া নিরপেক্ষ বলতে কেউ নেই’।
“আজকে তারা যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা বলে। তাহলে তাদের কাছ থেকে কেন জানতে চাইব না দেশে শিশু আর পাগলের তালিকাটা কী? কাদের নিয়ে আপনারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার করতে চান?’
বিএনপি-জামায়াত জোটের আন্দোলনের সময় বেপরোয়া পেট্রলবোমা হামলারও স্মরণ করেন আমু। বলেন, ‘জনগণ আপনাদের আন্দোলনে সাড়া দেয়নি বলে জনগণের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে তাদের হত্যা করছিলেন। নির্বাচন বানচাল করার চেষ্টা করেছিলেন। দেশে-বিদেশে ধরনা দিয়েছিলেন। জাতিসংঘে ধরনা দিয়েছিলেন।
‘তারা এসেছিল, আলোচনা করেছিল। যত ষড়যন্ত্রই করেন, যত জায়গায় ধরনা দেন না, যে যে কথাই বলুক না কেন, বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। এই রাষ্ট্রে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবেই হবে। কোনো শক্তি নেই, এই নির্বাচনকে ব্যাহত করতে পারে, এই নির্বাচন পিছিয়ে দিতে পারে, সেই নির্বাচন বন্ধ করতে পারে।’
মোফাজ্জল হোসাইন চৌধুরী মায়া বলেন, ‘শোকের মাস শেষ হলে আমরা শোককে শক্তিতে পরিণত করব। যারা এতদিন উল্টাপাল্টা কথা বলেছে, আপত্তিকর কথা বলছে, মুখ বুজে সহ্য করেছি।
‘এটা আগস্ট মাস। শোক ছাড়া, ব্যথা ছাড়া, কষ্ট ছাড়া আমাদের কিছু নেই। সেপ্টেম্বরে আমরা কিন্তু তৈরি হয়ে যাচ্ছি। মাঠে দেখা হবে।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের জন্ম মাঠে। আওয়ামী লীগের মৃত্যুও হবে মাঠে। এই পিচঢালা রাজপথ আওয়ামী লীগ ছাড়া কাউকে দখল নিতে দেব না।’
একাত্তরের ঘাতক, পঁচাত্তরের ঘাতক আর ২০০৪ সালের ঘাতক একই শক্তি দাবি করে কামরুল ইসলাম বলেন, ‘সেই অপশক্তি বিএনপি। সেই অপশক্তি জামায়াত। তারা আবার আমাদের সকল অর্জনকে ধ্বংস করার চেষ্টা করছে।’