ঘুষ কেলেঙ্কারির মামলায় বিচারিক আদালতে দণ্ডপ্রাপ্ত দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) বরখাস্ত পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরকে জামিন দেয়ার ২৪ ঘণ্টা না যেতেই সেটি প্রত্যাহার করে নিয়েছে হাইকোর্ট।
বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার সকালে আদেশটি প্রত্যাহার করে নেয়। এর ফলে এনামুল বাছিরকে কারাগারেই থাকতে হচ্ছে।
মঙ্গলবার বিকেলে বাছিরকে জামিন দিয়েছিল এ বেঞ্চ।
আদালত এনামুল বাছিরের আইনজীবী ফারুক আলমগীর চৌধুরীর উদ্দেশে বলে, ‘আইনজীবীদের কথা আমরা বিশ্বাস করি। এ কারণে আপনাদের কথার ওপর বিশ্বাস করে অনেক আদেশ দিয়ে থাকি। আপনি এনামুল বাছিরের আপিলের নথিতে জামিনের দরখাস্ত সংযুক্ত না করেই জামিন শুনানি করেছেন। এটা একটা অপরাধ।
‘দ্বিতীয়ত, আপনি আদালতকে না জানিয়ে পরে জামিনের দরখাস্ত বেঞ্চ অফিসারের কাছে দিয়েছেন। এটা আরেকটা অপরাধ। এই পেশাগত অসদাচরণের জন্য আমরা আপনাকে বার কাউন্সিলে পাঠাতে পারতাম, কিন্তু তা করছি না, তবে খন্দকার এনামুল বাছিরের জামিন আদেশ প্রত্যাহার করে নিচ্ছি এবং মামলাটি কার্যতালিকা থেকে বাদ দিচ্ছি।’
আপিল আবেদনের সঙ্গে জামিন আবেদন না থাকায় আদেশটি প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খানও।
এনামুল বাছিরের আইনজীবী ফারুক আলমগীর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ভুলবশত আপিলের সঙ্গে জামিনের নথি না থাকায় জামিন দিয়ে আদেশটি মহামান্য আদালত আবার প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।’
এখন কী করবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কয়েক দিন পর আবার বিষয়টি আদালতের নজরে আনব। তখন জামিনের বিষয়টি আদালত বিবেচনা করবেন।’
চলতি বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি খন্দকার এনামুল বাছিরকে আট বছর ও পুলিশের বরখাস্ত উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেয় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম।
এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করে জামিন আবেদন করেন এনামুল বাছির। অন্যদিকে তার সাজা বাড়াতে হাইকোর্টে আবেদন করে দুদক। দুদকের আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুলও জারি করে।
২০১৯ সালের ২২ জুলাই দুদকের পরিচালক ফানাফিল্লাহর নেতৃত্বে কমিশনের একটি টিম মিরপুরের দারুস সালাম এলাকা থেকে এনামুল বাছিরকে গ্রেপ্তার করে। পরের দিন জামিনের আবেদন নাকচ করে ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ কে এম ইমরুল কায়েস তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন, কমিশনের তথ্য পাচার ও শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে দুদক পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে দুদক।
২০১৯ সালের ১৬ জুলাই ৪০ লাখ টাকার ঘুষ কেলেঙ্কারির অভিযোগে পুলিশের বরখাস্ত ডিআইজি মিজানুর রহমান ও দুদক পরিচালক এনামুল বাছিরের নামে মামলা করে দুদক।
এনামুল বাছির ১৯৯১ সালে তৎকালীন দুর্নীতি দমন ব্যুরোতে যোগ দেন। দুর্নীতি দমন কমিশন গঠিত হওয়ার পর তিনি সহকারী পরিচালক, উপ-পরিচালক ও পরিচালক হিসেবে পদোন্নতি পান।