প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসে চা-শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা সোমবার থেকে ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দিলেও চাপা ক্ষোভ ও অসন্তোষ রয়েছে সাধারণ শ্রমিকদের মধ্যে। কাজেও যোগ দেননি বেশির ভাগ শ্রমিক। ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে করছেন বিক্ষোভ।
এ পরিস্থিতিতে বাগান পঞ্চায়েত নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন চা-শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা।
মঙ্গলবার দুপুরে সিলেট গলফ ক্লাবে সিলেট ভ্যালির ২৩ বাগানের পঞ্চায়েত নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন শ্রমিক ইউনিয়ন নেতারা। এ সময় ক্লাবের বাইরে অবস্থান নিয়ে শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করেন। এ ছাড়া বিভিন্ন বাগান থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শ্রমিকরা এসে জড়ো হচ্ছেন এখানে।
বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের সিলেট ভ্যালির সভাপতি রাজু গোয়ালা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসে চা-শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছিলেন। তবে সাধারণ শ্রমিকদের মধ্যে এ নিয়ে অসন্তোষ ও ভুল-বোঝাবুঝি আছে। তাই সবাই মিলে একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছতে আমরা বাগান পঞ্চায়েতদের সঙ্গে বসেছি।’
এর আগে রোববার রাতে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের সঙ্গে চা-শ্রমিক নেতাদের বৈঠক হয়। বৈঠকের পর জানানো হয়, শিগগির প্রধানমন্ত্রী চা-শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে বসে তাদের মজুরি নির্ধারণ করে দেবেন এবং দাবি পূরণে পদক্ষেপ নেবেন। এই আশ্বাসে ধর্মঘট প্রত্যাহার করে আগের ১২০ টাকা মজুরিতেই কাজে ফেরার সিদ্ধান্তের কথা জানান চা-শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা।
নেতাদের এই সিদ্ধান্তে ক্ষোভ দেখা দেয় সাধারণ শ্রমিকদের মধ্যে। সোমবার কাজে যোগ দেননি সিলেটের বেশির ভাগ বাগানের শ্রমিকরা। মঙ্গলবারও তারা ধর্মঘট চালিয়ে যাচ্ছেন।
মঙ্গলবার গলফ ক্লাবের সামনে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন মালনীছড়া চা বাগানের শ্রমিক রতন হাজরা। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব। হয় দাবি পূরণ, অথবা প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি আশ্বাস- এর বাইরে অন্য কারো আশ্বাসে আমরা কাজে ফিরব না।’
ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা নেতাদের কথা বিশ্বাস করি না। তারা আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করছে।’
দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা করার দাবিতে চলতি মাসের শুরু থেকেই আন্দোলনে নামেন দেশের ১৬৬ চা বাগানের দেড় লক্ষাধিক শ্রমিক। ১৩ আগস্ট থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু করেন তারা। প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকের পর চা-শ্রমিক ইউনিয়ন ধর্মঘট প্রত্যাহারে দুই দফা ঘোষণা দিলেও তা প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন সাধারণ শ্রমিকরা।