বাগেরহাটের মোংলা বন্দরে মেট্রোরেলের বগি ও ইঞ্জিনের আরও একটি চালান এসে পৌঁছেছে।
বন্দরের ৭ নম্বর জেটিতে ওই চালান নিয়ে সোমবার সকালে নোঙর করে বিদেশি জাহাজ এমভি হোসি ক্রাউন। গত ২৭ জুলাই জাপানের কোবে বন্দর থেকে মালামাল নিয়ে মোংলা বন্দরের উদ্দেশে ছেড়ে আসে জাহাজটি।
২৪ ঘণ্টার মধ্যে মেট্রোরেলের সরঞ্জাম খালাস শেষ হবে বলে জানিয়েছে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ। এর আগে মেট্রোরেলের সরঞ্জাম নিয়ে আরও ১০টি চালান দেশে এসেছে।
বিদেশি জাহাজটির স্থানীয় শিপিং এজেন্ট এনশিয়েন্ট স্টিম শিপ কোম্পানির ব্যবস্থাপক মো. ওয়াহিদুজ্জামান জানান, কোবে বন্দর থেকে ৮টি রেলওয়ে কোচ ও চারটি ইঞ্জিনসহ ৩৪ বক্স মেশিনারি পণ্য এসেছে।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মো. মূসা বলেন, ‘খুব দ্রুত এসব সরঞ্জাম খালাসের কাজ শেষ হবে।’
রাজধানী ঢাকায় মেট্রোরেল প্রকল্পের জন্য ২৪ সেট ট্রেন তৈরি করছে জাপানের কাওয়াসাকি-মিতসুবিশি। প্রতি সেট ট্রেনের দুই পাশে দুটি ইঞ্জিন থাকবে। এর মধ্যে থাকবে চারটি করে কোচ। ট্রেনগুলোয় ডিসি ১৫০০ ভোল্ট বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা থাকবে।
স্টেইনলেস স্টিল বডির ওই ট্রেনগুলোতে থাকবে লম্বালম্বি আসন। প্রতিটি ট্রেনে থাকবে দুটি হুইলচেয়ারের ব্যবস্থাও। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত প্রতিটি বগির দুই পাশে থাকবে চারটি করে দরজা। প্রতিটি ট্রেনের যাত্রী ধারণক্ষমতা হবে ১ হাজার ৭৩৮ জন।
এদিকে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক জানিয়েছেন, প্রথমে ১০টি ট্রেন দিয়ে মেট্রোরেল চালু করা হবে।
তিনি বলেন, ‘প্রথম দিন ১০ মিনিট পর পর ট্রেন চালু হবে। দ্বিতীয় দিন হয়তো আমরা ৭ মিনিটে নামিয়ে আনব। ক্রমান্বয়ে যাত্রীর চাপের ওপর নির্ভর করবে আমরা কতক্ষণ পর পর ট্রেন ছাড়ব। অনেক বেশি যাত্রী অপেক্ষমাণ থাকলে আমরা সাড়ে ৩ মিনিট পর পর ট্রেন ছাড়ব। ফজরের নামাজের সময় থেকে শুরু করে রাত ১২টা পর্যন্ত ট্রেন চলবে।’
সোমবার মেট্রোরেল প্রকল্পের বাস্তবায়ন অগ্রগতি প্রসঙ্গে এম এ এন ছিদ্দিক এসব কথা বলেন।
তিনি জানান, এমআরটি লাইন ৬-এর সার্বিক অগ্রগতি ৮১ দশমিক ৭০ শতাংশ। প্রথম পর্যায়ে নির্ধারিত উত্তরা থেকে আগারগাঁও রুটে কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৯৩ দশমিক ৮৬ শতাংশ। দ্বিতীয় পর্যায়ে নির্ধারিত আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত কাজের অগ্রগতি ৮১ দশমিক ৮৬ শতাংশ এবং ইলেকট্রিক্যাল ও মেকানিক্যাল কাজের সার্বিক অগ্রগতি ৮৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ।
তিনি আরও জানান, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত মেট্রোরেল লাইন বর্ধিত করার কাজ হাতে নেয়া হয়েছে। সেখানে ইউটিলিটি সার্ভে চলছে।
এম এ এন ছিদ্দিক বলেন, ‘সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ডিসেম্বর মাসে উত্তরা থেকে আগারগাঁও এমআরটি লাইন চালু করার লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। ১ সেপ্টেম্বর থেকে আমরা ইন্টিগ্রেশন টেস্ট শুরু করব। এই টেস্ট সর্বোচ্চ তিন মাস লাগতে পারে। এরপর আমরা যাত্রীবিহীন চলাচল পরীক্ষা করব। এটি আমরা ১৫-২০ দিন করব। তারপর আমরা প্রত্যাশিত যাত্রী নিয়ে চলাচল শুরু করতে পারব।’