বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

অন্য রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ আ. লীগ সহ্য করেনি, করবেও না: কাদের

  •    
  • ২২ আগস্ট, ২০২২ ১৭:০৭

‘অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অন্য কোনো রাষ্ট্রের প্রভাব বিস্তার এবং রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কখনও সহ্য করেনি করবেও না। আওয়ামী লীগ সর্বদা সকল ধরনের সাম্রাজ্যবাদী নীতির বিরোধিতা করে আসছে এবং সেজন্য চরম মূল্যও দিতে হয়েছে এই সংগঠনকে। তারপরও আওয়ামী লীগ দেশের ভেতরে ও বাইরে কোনো শক্তির নিকট মুচলেকা দিয়ে পথ চলে না।’

শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার টিকিয়ে রাখতে ভারতকে অনুরোধের বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের তোলপাড় করা বক্তব্যের মধ্যে ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন উল্টো কথা।

তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগ দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অন্য কোনো রাষ্ট্রের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ও নিয়ন্ত্রণ বরাবর সহ্য করেনি। ভবিষ্যতেও করবে না।

সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এ কথা বলেন।

গত ১৮ আগস্ট চট্টগ্রামে জন্মাষ্টমীর এক আয়োজনে গিয়ে বলেন, ‘আমি ভারতে গিয়ে বলেছি, শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখতে হবে। শেখ হাসিনা আমাদের আদর্শ। তাকে টিকিয়ে রাখতে পারলে আমাদের দেশ উন্নয়নের দিকে যাবে এবং সত্যিকারের সাম্প্রদায়িকতামুক্ত, অসাম্প্রদায়িক একটা দেশ হবে। শেখ হাসিনার সরকার টিকিয়ে রাখার জন্য যা যা করা দরকার, আমি ভারতবর্ষের সরকারকে সেটা করতে অনুরোধ করেছি।’

এ নিয়ে তুমুল বিতর্কের মধ্যে পরদিন গোপালগঞ্জে গিয়ে সাংবাদিকদেরকে মন্ত্রী বলেন, ভারতে আসাম রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপের জের ধরে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারকে তিনি বলেছেন, ‘স্থিতিশীলতা সবচেয়ে ইম্পর্টেন্ট। রাজনৈতিক এবং রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতা খুব দরকার। তাতে আপনার দেশেরও মঙ্গল হবে, আমাদের দেশেরও মঙ্গল হবে।’

অবশ্য মন্ত্রী এখন বক্তব্য পাল্টেছেন। সোমবার সচিবালয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘শেখ হাসিনার সরকারকে টিকিয়ে রাখতে হবে- ভারতে গিয়ে এমন কথা বলিনি। এটা একটা ডাঁহা মিথ্যা কথা। নির্বাচন নিয়েও কোনো কথা বলিনি। গ্লোবাল কনটেক্সটে যে অস্থিতিশীলতা হচ্ছে, সেটা নিয়ে কথা বলেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে ভারতের সঙ্গে কোনো কথা বলি নাই। আমাকে যে অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে, আমি তার ধারেকাছেও নেই।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী যেদিন তার তুমুল বিতর্ক তোলা বক্তব্যটি দিয়েছিলেন, তার পরদিনই এর প্রতিক্রিয়া দেন ওবায়দুল কাদের। ঢাকায় জন্মাষ্টমীর মিছিল উব্দোধন করে সেদিন তিনি বলেন, ‘যিনি এ কথা বলেছেন সেটি তার ব্যক্তিগত অভিমত হতে পারে। এটি আমাদের সরকারেরও বক্তব্য না, দলেরও বক্তব্য না। এই বক্তব্যের কারণে ভারতও লজ্জা পাবে। কীভাবে আমরা এই কথা বলি! বন্ধু বন্ধু আছে। অহেতুক কথা বলে এটি নষ্ট করবেন না।’

তারও দিন দিন পর বিবৃতিতে আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অন্য কোনো রাষ্ট্রের প্রভাব বিস্তার এবং রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কখনও সহ্য করেনি করবেও না। আওয়ামী লীগ সর্বদা সকল ধরনের সাম্রাজ্যবাদী নীতির বিরোধিতা করে আসছে এবং সেজন্য চরম মূল্যও দিতে হয়েছে এই সংগঠনকে।

‘তারপরও আওয়ামী লীগ দেশের ভেতরে ও বাইরে কোনো শক্তির নিকট মুচলেকা দিয়ে পথ চলে না। সাম্র্রাজ্যবাদবিরোধী জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের অন্যতম মুখপাত্র সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবিসংবাদিত নেতৃত্বে বিকশিত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সর্বদা জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতা ও গণতান্ত্রিক অধিকারের অতন্দ্র প্রহরী।’

আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘শান্তি, নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের এই নীতির যে কোনো বিকল্প নেই, বর্তমান বৈশ্বিক বাস্তবতায় তা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে।

‘অসাম্প্রদায়িক-প্রগতিশীল শান্তিপূর্ণ ও কল্যাণকর বাংলাদেশ বিনির্মাণে অন্যান্য রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ও পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে কাজ করে যাচ্ছে বর্তমান সরকার। আমরা প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে পারস্পরিক ঐতিহ্য, কৃষ্টি, সংস্কৃতি, সহযোগিতা-সহমর্মিতা মানবিক মূল্যবোধ, নীতি ও আদর্শের মেলবন্ধন সৃষ্টির মধ্য দিয়ে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ভিত্তি রচনা করি এবং বন্ধুত্বের গতি-প্রকৃতি নির্ণয় করি।’

আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই দীর্ঘ স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটির জন্ম হয়েছে বলে স্মরণ করিয়ে দেন ক্ষমতাসীন দলের নেতা। বলেন, “বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকে বিশ্বের সকল গণতন্ত্রকামী, মুক্তিকামী মানুষ ও রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। পবিত্র সংবিধানে পররাষ্ট্র নীতির মূলমন্ত্র হলো ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সাথে বৈরিতা নয়’।”

‘বিএনপির অন্তরে ১৫ ও ২১ আগস্ট’

বিএনপি নেতারা তাদের চিরায়ত মিথ্যাচারের রাজনীতি অব্যাহত রেখে নানামুখী ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত ও অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের। বলেন, ‘মুখে গণতন্ত্রের কথা বললেও তারা অন্তরে ১৫ই আগস্টের নির্মম-নিষ্ঠুর পাশবিক মানসিকতা এবং ২১ আগস্টের বর্বরতা ও পৈচাশিকতাকে ধারণ করে।

‘ঐতিহাসিকভাবেই বিএনপি স্বৈরতান্ত্রিক আচরণ এবং জঙ্গি-সন্ত্রাস ও প্রতিহিংসার রাজনীতিকে লালন করে আসছে। গণতান্ত্রিক অধিকার ও মূল্যবোধের প্রতি দায় সমান্তরালভাবে এগিয়ে চলে। বিএনপি গণতন্ত্র এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে কখনও হৃদয়ে ধারণ এবং রাজনৈতিক কার্যক্রমে তা চর্চা করে না।

‘তারা কখনই প্রথাসিদ্ধ গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের যে দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে তা পালন করেনি। বিএনপির জন্মই হয়েছে সংবিধান লঙ্ঘন করে বন্দুকের নলের মুখে অবৈধভাবে জোরপূর্বক ক্ষমতা দখলের মধ্য দিয়ে।

‘তাদের প্রতিষ্ঠাতা ইতিহাসের নিষ্ঠুর স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান নিজেকে অবৈধভাবে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেছিল। জিয়াউর রহমান একই সঙ্গে সেনাপ্রধান, প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও রাষ্ট্রপতি পদে অধিষ্ঠিত থেকে বিএনপি নামক রাজনৈতিক দল সৃষ্টি করেছিল; কারফিউ মার্কা গণতন্ত্রের প্রবর্তন করে এবং সামরিক শাসন বলবৎ রেখেই একাধিক প্রহসনের নির্বাচন করেছিল।’

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এদেশে হত্যা-ক্যু ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত দুর্নীতি-দুর্বৃত্তায়ন সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের প্রধানতম পৃষ্ঠপোষক বিএনপি। জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার পর থেকে গণতন্ত্র, মানবিক মুক্তি ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের পথে এদেশের মুক্তিকামী মানুষকে যে সকল সংকটের সম্মুখীন হতে হয়েছে বিএনপিই সে সকল সঙ্কটের প্রেক্ষাপট সৃষ্টি করেছে।’

এই অপরাজনীতির কারণে বিএনপি যখন জনরোষের মুখে নিজেদের অস্তিত্ব বিপন্ন মনে করে দেশবিরোধী ষড়ন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগ নেতা।

তিনি বলেন, করোনা মহামারি এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ফলে বিশ্বব্যাপী অর্থনীতিতে যখন একটি অনাকাঙ্ক্ষিত সংকট সৃষ্টি হয়েছে তখন এই বৈশ্বিক সংকটকে পুঁজি করে জাতীয় রাজনীতিতে সংকট সৃষ্টির গভীর ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে।

‘আর এই ষড়যন্ত্রের মূলে রয়েছে একুশে আগস্টের মাস্টারমাইন্ড খুনি তারেক রহমান ও তার দল বিএনপি’-বলেন ওবায়দুল কাদের।

এ বিভাগের আরো খবর