গাজীপুরের টঙ্গীতে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যার ৫ ঘণ্টার মধ্যে চারজনকে আটক করেছে পুলিশ।
এ সময় একজনকে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করলে পুলিশের গুলিতে তিনি গুলিবিদ্ধ হন এবং পুলিশের তিন সদস্য আহত হন। ঘটনাস্থল থেকে দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে আটকদের শনাক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
দত্তপাড়া কসাইবাড়ী রেলগেট এলাকায় রোববার মধ্যরাতে এ ঘটনা ঘটে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার (ডিবি ও মিডিয়া) আবু সায়েম নয়ন সোমবার সকালে নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আটককৃতরা হলেন টঙ্গীর আউচপাড়া এলাকার ৩৮ বছরের মো. ইসমাইল হোসেন, এরশাদনগর এলাকার ২২ বছরের মোবারক হোসেন, দত্তপাড়া জহির মার্কেট এলাকার ২২ বছরের জাহাঙ্গীর আলম ও দত্তপাড়ার ২২ বছর বয়সী সাকিব।
নিহত ৩৩ বছর বয়সী সুমন মাহমুদ পাটোয়ারি ওরফে তানন টঙ্গীর বড় দেওড়া ফকির মার্কেট এলাকার ফজলুল হক পাটোয়ারির ছেলে। তিনি বড় দেওড়া এলাকায় পাইকারি ডিমের ব্যবসা করতেন।
সহকারী কমিশনার (ডিবি ও মিডিয়া) আবু সায়েম নয়ন জানান, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে রোববার রাত পৌনে ৮টার দিকে আউচপাড়া মেরিট স্কুলের সামনে আড্ডা দেয়ার সময় ২০-২৫ জনের একটি দল ধারালো ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে তাননকে হত্যা করে। এ সময় তার সঙ্গে থাকা সালাউদ্দিন তুহিন নামে এক যুবক আহত হন।
এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে টঙ্গী পূর্ব ও পশ্চিম থানার চারটি টিম এবং গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) দুটি টিম কাজ শুরু করে। রাতভর টঙ্গীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা ইসমাইলসহ চারজনকে আটক করা হয়।
তিনি আরও জানান, মোবারককে নিয়ে দত্তপাড়া কসাইবাড়ী রেলগেটে সহযোগীদের আটকে অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় সহযোগীরা মোবারককে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে এবং পুলিশের ওপর হামলা চালায়।
পুলিশ আত্মরক্ষার্থে গুলি করলে সহযোগীরা পালিয়ে যায়। পরে ঘটনাস্থল থেকে মোবারককে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এ সময় ঘটনাস্থল থেকে দুটি ছোরা ও একটি চায়নিজ কুড়াল উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযানের সময় পুলিশের তিন সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
এদিকে স্থানীয় কয়েকজন জানান, এলাকার সন্ত্রাসী ইসমাইলের সঙ্গে চলাফেরা করতেন নিহত তানন। ইসমাইলের বিরুদ্ধে মাদক, অস্ত্র, চাঁদাবাজিসহ অন্তত ছয়টি মামলা রয়েছে। সম্প্রতি মাদক ব্যবসা ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ইসমাইলের সঙ্গে মনোমালিন্য চলছিল তাননের।
এর জেরে রোববার রাতে সুরতরঙ্গ রোড, দত্তপাড়া ও এরশাদনগরের তিনটি গ্রুপ পূর্বপরিকল্পিতভাবে তাননকে কুপিয়ে হত্যা করে থাকতে পারে।
তারা আরও জানান, সুরতরঙ্গ রোড এলাকা নিয়ন্ত্রণ করেন সন্ত্রাসী ইসমাইল হোসেন। তার সঙ্গে দত্তপাড়া ও এরশাদনগর এলাকার কয়েকটি কিশোর গ্যাংয়ের যোগসূত্র রয়েছে বলেও জানান তারা।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (অপরাধ) মোহাম্মদ ইলতুৎমিশ বলেন, ‘ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় তার পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে।’