রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় পুলিশ হেফাজতে সুমন শেখের মৃত্যু নিয়ে তার পরিবার ও এলাকাবাসী রোববার রাতে পশ্চিম রামপুরায় ডিআইটি সড়ক দখল করে বিক্ষোভ করেছে। এ সময় ব্যস্ততম সড়কটিতে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। ভোগান্তি পড়ে সাধারণ মানুষ।
রোবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় পশ্চিম রামপুরায় স্বপ্ন মার্কেটের সামনে ডিআইটি সড়কে অবস্থান নেয় সুমনের স্বজন ও এলাকাবাসী। রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত সড়ক আটকে রেখে বিক্ষোভ করেন তারা। এ সময় হাতে লেখা প্লাকার্ড উঁচিয়ে ‘সুমন হত্যার বিচার চাই’ বলে স্লোগান দেন বিক্ষুব্ধরা।
এ সময় ব্যস্ততম ডিআইটি সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। রাত সাড়ে ৯টার দিকে পুলিশের পুলিশের হস্তক্ষেপে তারা রাস্তা ছেড়ে দিলে যান চলাচল শুরু হয়।
সুমনের শ্যালিকা সুমাইয়া এ সময় বলেন, ‘আমরা আজ সকাল থেকে সারাদিন হাতিরঝিল থানায় ঘুরছি মামলা করার জন্য। কিন্তু মামলা নেয় নাই৷ এই ঘটনায় আমরা সঠিক বিচার চাই। কিন্তু কারা আমাদের সঠিক বিচার দেবে? কোর্টে গেছি মামলা করতে। কিন্তু কেউ আমাদের মামলা নিতে চায় না৷’
ঘটনাস্থলে আসা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার রুবাইয়াত জামান বলে, ‘সুমনের স্বজনরা রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করছিল। আমরা আসার পর তারা সরে যায়৷ কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। দীর্ঘ সময় যান চলাচল বন্ধ থাকায় মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। এখন যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।’
পুলিশ হেফাজতে সুমন শেখের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে রোববার রাতে রামপুরায় ডিআইটি সড়কে পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসীর বিক্ষোভকালে ভয়াবহ যানজট তৈরি হয়। ছবি: নিউজবাংলা
এর আগে রাত ৮টার দিকে রামপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পশ্চিম রামপুরা এলাকায় গতকাল লোক (সুমন শেখ) মারা যাওয়াকে কেন্দ্র করে ওরা (পরিবার ও এলাকাবাসী) রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়েছে। সব মিলিয়ে একশ’র মতো মানুষ সড়কে জড়ো হয়েছে। এতে যান চলাচলও বিঘ্নিত হচ্ছে। তবে বিক্ষোভের এলাকাটা হাতিরঝিল থানার আওতায় পড়েছে।’
লাশ হস্তান্তর ইস্যুতে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য
এদিকে ময়নাতদন্ত শেষে সুমনের মরদেহ হস্তান্তর নিয়ে পরিবার ও পুলিশ পরস্পরবিরোধী বক্তব্য দিয়েছে।
পুলিশ বলছে, তারা পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তরে প্রস্তুত। অপরদিকে পরিবার বলছে, মরদেহ হস্তান্তরে পুলিশ তাদেরকে শর্ত দিচ্ছে।
সুমনের শ্যালিকা শাহনাজ আক্তার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পুলিশ বলেছে লাশ আমাদের এলাকা রামপুরায় আনতে দেবে না। তারা বলছে লাশ সরাসরি গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যেতে হবে। আমরা লাশ গ্রামের বাড়িতে নেব কেন? ছোটবেলা থেকে বড় হইছি ঢাকায়। আমাদের এলাকায় লাশ আনতে দিতে হবে।’
তবে ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার এইচ এম আজিমুল হক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘তারা যেটা বলেছে সব মিথ্যা কথা। গতকাল থেকে আমাদের লোক এই হাসপাতালের সামনে আছে। কেউ মরদেহ নিতে আসেনি। আমরা লাশ হস্তান্তরে প্রস্তুত।’
একই বিষয় নিয়ে সন্ধ্যায় তিনি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। এর কিছু সময় পরই রামপুরার ব্যস্ততম ডিআইটি সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে সুমন শেখের স্বজন ও এলাকাবাসী।