বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

চার ঘণ্টা পর মহাসড়ক ছাড়লেন চা-শ্রমিকরা

  •    
  • ২১ আগস্ট, ২০২২ ১৬:৩৪

হবিগঞ্জের লস্করপুর ভ্যালির সাধারণ সম্পাদক অনুরুদ্ধ বাড়াইক বলেন, ‘আমরা শান্তিপ্রিয় মানুষ। পেটের দায়ে আমাদের রাস্তায় নামতে হয়েছে। আমরা দুদিনের জন্য সরকারকে সময় দিয়েছি। এ সময়ের মধ্যে দাবি না মানলে আগামী ২৪ আগস্ট আবারও রাস্তায় নামতে বাধ্য হব।’

দুই দিনের আলটিমেটাম দিয়ে চার ঘণ্টা পর ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক থেকে অবরোধ তুলে নিয়েছেন চা-শ্রমিকরা।

রোববার বিকেল ৩টার দিকে শ্রমিক নেতারা অবরোধ প্রত্যাহার করেন। তবে দুইদিনের মধ্যে দাবি না পূরণ হলে আবার মহাসড়কে নামবেন বলে হুশিয়ারি দেন।

নিউজবাংলাকে তথ্য নিশ্চিত করেছেন লস্করপুর ভ্যালির সাধারণ সম্পাদক অনুরুদ্ধ বাড়াইক।

তিনি বলেন, ‘আমরা শান্তিপ্রিয় মানুষ। পেটের দায়ে আমাদের রাস্তায় নামতে হয়েছে। আমরা দুদিনের জন্য সরকারকে সময় দিয়েছি। এ সময়ের মধ্যে দাবি না মানলে ২৪ আগস্ট আবারও রাস্তায় নামতে বাধ্য হব।’

এর আগে বেতন বাড়ানোর দাবিতে বেলা ১১টার দিকে মহাসড়কের মাধবপুর উপজেলার জগদীশপুরের চৌমুহনীর মুক্তিযোদ্ধা চত্বর এলাকায় তেলিয়াপাড়া, সুরমা, নোয়াপাড়াসহ লস্করপুর ভ্যালির ২৩টি বাগানের কয়েক হাজার চা-শ্রমিক জড়ো হয়ে বিক্ষোভ ও মহাসড়ক অবরোধ করেন।

শ্রমিকরা ৩০০ টাকা মজুরির জন্য স্লোগান দেন। এ দিকে তীব্র গরমে অনেকে গাড়িতে অসুস্থ হয়ে পরেন বলেও জানা গেছে।

শনিবার মধ্যরাতে এক ভিডিও বার্তায় আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়ে চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রিয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, ‘বিকেলে শ্রম অধিপ্তরের সঙ্গে আমরা বৈঠকে বসি। সেখানে আমাদের মজুরি ২৫ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়া হয় এবং প্রধানমন্ত্রী ভারত সফর শেষে ফিরে আমাদের সঙ্গে বসবেন জানিয়ে ধর্মঘট প্রত্যাহারের অনুরোধ করা হয়।

‘প্রধানমন্ত্রীর প্রতি সম্মান জানিয়ে ধর্মঘট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেই, আমি কোনো চুক্তিতে স্বাক্ষর করিনি।’

তিনি আরও বলেন, ‘বৈঠক শেষে বেরিয়ে চা শ্রমিকদের ক্ষোভ আঁচ করতে পারি। তারা ২৫ টাকা মজুরি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার দাবি করেন।’

দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার দাবিতে গত ১৩ আগস্ট থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু করেন চা শ্রমিকরা। ধর্মঘটের ৮ দিনের মাথায় শনিবার দুপুরে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের কার্যালয়ে শ্রম অধিপ্তর ও সরকারের প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠকেও বসেন চা শ্রমিক নেতারা।

অবরোধে ভোগান্তি

চার ঘণ্টার অবরোধের কারণে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত যানজটের সৃষ্টি হয়। দুইপাশে শ শ পরিবহন আটকা পরে। তীব্র গরমে গাড়িতে বসে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ে।

বাসে মাধবপুর থেকে অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে সিলেট যাচ্ছিলেন ফয়েজা বানু। জগদীশপুর অবরোধে আটকা পরে স্বামী আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে জানান তিনি।

ফয়েজা বলেন, ‘এমনিতেই তিনি অসুস্থ। এখন রাস্তার মাঝে ৪ ঘণ্টা ধরে আটকা। তার (স্বামী) অবস্থা আরও খারাপ হচ্ছে। গরমের মধ্যে মাথায় পানি দিয়ে রাখছি।’

আরেক বাসযাত্রী আখলিমা আক্তার জানান, তার ৪ বছরের শিশুও গরমে অসুস্থ হয়ে পরে। তিনি বলেন, ‘তারা দাবি আদায় করবে ভাল কথা, কিন্তু আমাদের কষ্ট দিয়ে কেন? আমার ছেলেটা অসুস্থ হয়ে গেছে গরমে।’

বাস চালক জানে আলম বলেন, ‘তারা মজুরি কম পায়, এর লাগি আমরাও তাদের সঙ্গে আছি। কিন্তু তাই বলে মহাসড়ক অবরোধ করে মানুষকে কেন কষ্ট দিবে? তারা বাগানে আন্দোলন করতে পারত।’

চার ঘণ্টা পর শ্রমিকরা মহাসড়ক ছেড়ে দিলে যান চলতে শুরু করে। তবে দীর্ঘ জট থাকায় চলাচল স্বাভাবিক হতে সময় লেগেছে।

মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ মঈন উদ্দিন বলেন, ‘আমরা চা শ্রমিকদের বুঝিয়েছি তাদের দাবিগুলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন করা হবে। পরে তারা অবরোধ তুলে নেন। তবে যান চলাচল পুরোপুরি স্বাভাবিক করতে কিছুটা সময় লাগে।’

এ বিভাগের আরো খবর