বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিতর্ক মাথায় নিয়ে শিশুদের অনুষ্ঠানে হাস্যোজ্জ্বল পররাষ্ট্রমন্ত্রী

  •    
  • ২১ আগস্ট, ২০২২ ১৫:৫৮

ডামাডোলের মাঝেও রোববার শিশু-কিশোরদের অনুষ্ঠানে বেশ নির্ভার ও হাস্যোজ্জ্বল দেখা গেছে পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে। অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যের সময়েও তিনি ছিলেন বেশ ‘সংযত’।

একের পর এক বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে তোপের মুখে থাকা পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনকে রোববার দেখা গেল রাজধানীতে শিশু-কিশোরদের এক অনুষ্ঠানে। তবে এ অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যের সময় তিনি ছিলেন বেশ ‘সংযত’।

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে শনিবার ঘাসফুল শিশু-কিশোর সংগঠনের ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

মন্ত্রী মোমেন সম্প্রতি বেশ কয়েকটি বিতর্কিত মন্তব্য করে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েন। সবশেষ গত বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামে তিনি বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় রাখতে ভারতকে ‘অনুরোধ করার তথ্য’ জানান। এই বক্তব্যে খোদ আওয়ামী লীগও বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছে।

আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের কয়েক নেতা বলেছেন, মোমেন আওয়ামী লীগের কেউ নন। মোমেনের ‘ব্যক্তিগত গল্পের’ দায় আওয়ামী লীগ নেবে না বলেও জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সরকারের মুখপাত্র তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহ্‌মুদ।

৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগ চেয়ে আব্দুল মোমেনকে আইনি নোটিশও পাঠিয়েছেন এক আইনজীবী।

তবে এসব ডামাডোলের মাঝেও রোববার শিশু-কিশোরদের অনুষ্ঠানে বেশ নির্ভার ও হাস্যোজ্জ্বল দেখা গেছে পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে।

ঘাসফুলের প্রতিষ্ঠাতা ও কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি হাসান আব্দুল্লাহ বিপ্লবের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে শিশু-কিশোরদের পরিবেশিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ অতিথিরা। পরে মন্ত্রী সংগঠনটির সদস্যদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।

অনুষ্ঠানে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘সোনার বাংলা অর্জনের দায়িত্ব বঙ্গবন্ধু আমাদের এবং আমাদের নতুন প্রজন্মকে দিয়ে গেছেন। যতদিন পর্যন্ত আমাদের সোনার বাংলা অর্জিত হবে না, ততদিন আমাদের কঠোর পরিশ্রম করে যেতে হবে।

‘এই পথ সহজ নয়, কিন্তু আমরা চাইলে অবশ্যই বিজয় লাভ করব, কারণ আমরা বিজয়ী জাতি। ’

তিনি আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনা আমাদের হৃদয়ে, নতুন প্রজন্মের হৃদয়ে আত্মপ্রত্যয় সৃষ্টি করেছেন যে আমরা পারি এবং তিনি তার নমুনা আমাদের দেখিয়েছেন। পদ্মা সেতু নিজেদের টাকায় তৈরি করে তিনি দেখিয়েছেন, যা কেউ কল্পনা করে নাই। ’

গত ১২ আগস্ট সিলেটে দেয়া পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এক বক্তব্যে প্রথম সমালোচনা শুরু হয়। ওইদিন তিনি বলেন, ‘অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের মানুষ বেহেশতে আছে।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হয়ে যাবে; একটি পক্ষ থেকে এমন প্যানিক ছড়ানো হচ্ছে। বাস্তবে এর কোনো ভিত্তি নেই।’

এই বক্তব্য নিয়ে দেশজুড়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগ বেহেশতে আছে, নরকে আছে জনগণ। বক্তব্য দেন আরও অনেকে।

সিলেটে দেয়া বক্তব্যের সমালোচনা থামতে না থামতে চট্টগ্রামে আরেক বিতর্কিত বক্তব্য দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন।

১৮ আগস্ট চট্টগ্রাম নগরীর জে এম সেন হলে জন্মাষ্টমী উৎসবের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি ভারতে গিয়ে বলেছি, শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখতে হবে। শেখ হাসিনা আমাদের আদর্শ। শেখ হাসিনার সরকার টিকিয়ে রাখার জন্য যা যা করা দরকার, আমি ভারতবর্ষের সরকারকে সেটা করতে অনুরোধ করেছি।’

মন্ত্রীর এবারের বক্তব্য আগেরবারের চেয়ে বেশি সমালোচনার জন্ম দেয়। এ নিয়ে কথা বলতে হয়েছে তার দলের অন্য নেতাদেরও। বক্তব্য দিয়েছেন বেশ কয়েকজন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিদেশে আমাদের বন্ধু আছে, কোনো প্রভু নেই। দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান দাবি করেছেন, আব্দুল মোমেন দলের কেউ নন।

তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ব্যক্তিগত গল্পের দায় আ.লীগের নয়।

মন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, যারা অন্যের আনুকূল্যে টিকে থাকে, তাদের এই দেশের সরকারে থাকার কোনো অধিকার নেই।

এ কে আব্দুল মোমেনের বক্তব্য দেশের সার্বভৌমত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান ও জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় উপনেতা জি এম কাদের।

দুই বক্তব্য নিয়েই অবশ্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্যাখ্যা দিয়েছেন। দাবি করেছেন, তিনি আসলে এটা বোঝাতে চাননি। তবে এরই মধ্যে দেশের স্বার্থে এ কে আব্দুল মোমেনকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগে আইনি নোটিশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী।

রোববার রেজিস্ট্রি ডাকযোগে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন এরশাদ হোসেন নামের ওই আইনজীবী। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আব্দুল মোমেন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করতে ব্যর্থ হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।

এ বিভাগের আরো খবর