পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের একটি বক্তব্য নিয়ে দুদিন ধরে তোলপাড় চলছে দেশে। একই সঙ্গে চলছে সমালোচনা। এমন অবস্থায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান বলেছেন, আব্দুল মোমেন দলের কেউ নন। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তার বক্তব্য সঠিক নয়; আওয়ামী লীগের কমিটিতে মোমেনের নাম রয়েছে।
বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামে শুভ জন্মাষ্টমীর এক অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমি ভারতকে বলে এসেছি, আওয়ামী লীগ সরকারকে টিকিয়ে রাখতে যা যা করা দরকার সেসব করুন।’
শনিবার ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে ১৫ আগস্ট স্মরণে আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপকমিটির অনুষ্ঠান শেষে এ বিষয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমানকে। উত্তরে তিনি বলেন, ‘পররাষ্ট্রমন্ত্রী আওয়ামী লীগের কেউ নন।’
পরে এ বিষয়ে জানার জন্য নিউজবাংলার পক্ষ থেকে যোগাযোগ করলে আব্দুর রহমান বলেন, ‘পররাষ্ট্রমন্ত্রী দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। দলে তার কোনো পদ-পদবিও নেই। তিনি সরকারের মন্ত্রী। কাজেই তিনি যা বলবেন সেটা কোনোভাবেই দলের বক্তব্য হতে পারে না। কাজেই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এমন মন্তব্যের সঙ্গে আওয়ামী লীগকে জড়িয়ে ফেলা সমীচীন নয়।’
মোমেনের এমন মন্তব্যে বিস্ময় প্রকাশ করে শুক্রবার আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ভারত আমাদের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্কে আবদ্ধ। ভারত আমাদের দুঃসময়ের বন্ধু। কিন্তু তাই বলে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য ভারতকে অনুরোধ করব! এ ধরনের অনুরোধ আওয়ামী লীগ করে না, করেনি। শেখ হাসিনা সরকারের পক্ষ থেকেও কাউকে দায়িত্ব দেয়া হয়নি।’
তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সর্বশেষ কমিটিতে রয়েছেন ড. এ কে আবদুল মোমেন।
২০২১ সালের ৮ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার অনুমতিক্রমে ৭৫ সদস্যবিশিষ্ট সিলেট মহানগরের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এই কমিটির এক নম্বর সদস্য হিসেবে রয়েছেন ড. মোমেন। সেই কমিটির তালিকা নিউজবাংলার কাছে সংরক্ষিত আছে।
কমিটিতে আবদুল মোমেনের নাম থাকার তথ্য নিশ্চিত করেছেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, ‘আবদুল মোমেন আমাদের কমিটির এক নম্বর সদস্য হিসেবে আছেন। আর এক নম্বর সদস্য দলে খুবই গুরুত্বপূর্ণ পদ।’
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমানের দাবি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মাসুক উদ্দিন বলেন, ‘আব্দুর রহমান কী বলেছেন জানি না। তবে দলের কেউ না হলে তিনি কীভাবে দলীয় প্রতীকে এমপি ও পরে সরকারের মন্ত্রী হন?’