জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, ‘পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেনের বক্তব্য দেশের সার্বভৌমত্ব প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। এর দায় সরকার এড়াতে পারে না।’
শনিবার জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে জন্মাষ্টমী উপলক্ষে সনাতন ধর্মাবলম্বী সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ ও বিশিষ্টজনদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরীর জে এম সেন হলে জন্মাষ্টমীর উৎসবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন বলেন, ‘আমি ভারতে গিয়ে বলেছি, শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখতে হবে। শেখ হাসিনা আমাদের আদর্শ। তাকে টিকিয়ে রাখতে পারলে আমাদের দেশ উন্নয়নের দিকে যাবে এবং সত্যিকারের সাম্প্রদায়িকতামুক্ত, অসাম্প্রদায়িক একটা দেশ হবে।
‘শেখ হাসিনার সরকার টিকিয়ে রাখার জন্য যা যা করা দরকার, আমি ভারতবর্ষের সরকারকে সেটা করতে অনুরোধ করেছি।’
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই বক্তব্য প্রতিবেশী বন্ধুদেশ ভারতকেও অস্বস্তিতে ফেলেছে।
জি এম কাদের বলেন, ‘সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন ও সংখ্যালঘু কমিশন গঠনে সরকার উদ্যোগ নিতে পারে। জাতীয় পার্টি আইনের খসড়া পেলে বিবেচনা করে সংসদে তুলতে পারবে। রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম করার পাশাপাশি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সব ধর্মের সমান অধিকার নিশ্চিত করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে কথা উঠলে সরকারের পক্ষ থেকে এটিকে হাস্যকর বলে উড়িয়ে দেয়া হয়। ফলে সারা বিশ্বের কাছে আমরা মিথ্যাবাদী রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত হচ্ছি।
‘দেশের নির্বাচনব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। মানুষ নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করে প্রতিনিধি নির্বাচন করবে। আবার প্রতিনিধি পছন্দ না হলে ভোটের মাধ্যমে পরিবর্তন করার অধিকার চায়। প্রজাতন্ত্র মানে দেশের মালিকানা সাধারণ মানুষের। দেশের মালিকানা সাধারণ মানুষের না থাকলে এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত না হলে কখনই দুর্নীতি রোধ করা সম্ভব হবে না।’
জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ও বিএনপির শাসনামলেই সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। জাতীয় পার্টি সব সময় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় ঐতিহ্য সৃষ্টি করেছে। ভোটের রাজনীতির জন্য কিছু রাজনৈতিক দল উসকানি দেয়, আবার ধর্মীয় গোঁড়ামি আর ব্যক্তিস্বার্থেও কখনও কখনও বিচ্ছিন্নভাবে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। সবার ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় এ দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করতে হবে।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভ রায় ও চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা শেরীফা কাদের।
সনাতন ধর্মাবলম্বী নেতাদের মধ্যে বক্তব্য দেন নিমচন্দ্র ভৌমিক, সুব্রত চৌধুরী, জে এল ভৌমিক, গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক, নকুল চন্দ্র সাহা, সুমন কুমার রায়, দ্বীজমনি গৌরাঙ্গ দাস ব্রহ্মচারী, জাতীয় পার্টির সমবায়বিষয়ক সম্পাদক শংকর পাল ও সজন মিশ্র।