ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান বলেছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন দলের কেউ নন। তাই তার বিতর্কিত বক্তব্যে আওয়ামী লীগ বিব্রত হওয়ার প্রশ্নই আসে না।
শনিবার ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে ১৫ আগস্ট স্মরণে আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপ-কমিটির আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামে শুভ জন্মাষ্টমীর এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘আমি ভারতকে বলে এসেছি, আওয়ামী লীগ সরকারের টিকিয়ে রাখতে যা যা করা দরকার সেসব করুন।’ মোমেনের এই বক্তব্যের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আব্দুর রহমান বলেন, ‘আমার প্রথম কথা হচ্ছে, এটার ব্যাখ্যা তিনিই ভালো দিতে পারেন। কারণ মিডিয়াতে তার যে বক্তব্য এসেছে, সে ব্যাপারে হয়তো তার কথা থাকতে পারে। আর মিডিয়ায় আসা কথাটি যদি তিনি বলেই থাকেন তাহলে আমি দলের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করেই বলি, এটি আমাদের দলের কোনো কথা না। আমাদের দল সবসময় মনে করে ভারত আমাদের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ও পরীক্ষিত বন্ধু। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে তাদের অবদান আমরা কোনো অবস্থাতেই ভুলতে পারব না।’
আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর এই সদস্য আরও বলেন, ‘যে দল বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দেশের মাটি ও মানুষের ভেতর দিয়ে গড়ে উঠেছে, সেই দল কখনও কোনো বিদেশি শক্তিনির্ভর হয়ে ক্ষমতায় যাওয়া বা টিকে থাকার নীতিতে বিশ্বাস করে না। এই দল সেটি আশাও করে না। তিনি (পররাষ্ট্রমন্ত্রী) তো আমাদের দলের কেউ না। আমাদের দল তার এই বক্তব্যে বিব্রত হওয়ার প্রশ্নই আসে না।’
এ বিষয়ে জানার জন্য নিউজবাংলার পক্ষ থেকে যোগাযোগ করলে আব্দুর রহমান বলেন, ‘পররাষ্ট্রমন্ত্রী দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। দলে তার কোনো পদ-পদবিও নেই। তিনি সরকারের মন্ত্রী। কাজেই তিনি যা বলবেন সেটা কোনোভাবেই দলের বক্তব্য হতে পারে না। এ বিষয়ে আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদক গতকাল (শুক্রবার) পরিষ্কার করে বলেছেন।
‘ভারত সম্পর্কিত বক্তব্য একান্তভাবেই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নিজের। কাজেই তার এমন মন্তব্যের সঙ্গে আওয়ামী লীগকে জড়িয়ে ফেলা সমীচীন নয়।’
আলোচনা অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে আব্দুর রহমান বলেন, ‘কথাবার্তা ও আচরণের ভেতর দিয়ে এমন কিছু বলবেন না যাতে দুষ্ট লোকেরা এর সুবিধা নিতে পারে, মানুষকে বিভ্রান্ত করতে পারে। সে ব্যাপারে সতর্ক থাকবেন। এতটুকুই আপনার কাছে আমাদের চাওয়া।’
এর আগে আওয়ামী লীগের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপকমিটি আয়োজিত শোক দিবসের আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, তথ্যমন্ত্রী ও প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক প্রমুখ। আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এবং কমিটির সদস্য সচিব ড. শাম্মী আক্তারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অ্যাম্বাসেডর মো. জমির।