ঢাকার সাভারে একটি মাদ্রাসার শিক্ষকের বিরুদ্ধে এক শিশু শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দিতে গেলে অভিযোগ না নিয়ে নিজেরাই বিষয়টি মীমাংসা করতে পুলিশ পরামর্শ দিয়েছে বলে দাবি শিশুটির বাবার। বিষয়টি মীমাংসা করতে শুক্রবার তাকে ডেকে নিয়েছেন স্থানীয় উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান।
সাভারের বাইপাইল বসুন্ধরা এলাকার দারুল কুরআন তালিমুল ইসলাম মাদ্রাসায় বুধবার সন্ধ্যায় ১০ বছরের শিশুটিকে পিটিয়ে জখম করলেও ঘটনাটি তার বাবা জেনেছেন পরদিন বৃহস্পতিবার।
শুক্রবার দুপুরে ভুক্তভোগী মাদ্রাসাছাত্রের বাবা নিউজবাংলাকে জানান, তার ছেলেকে বেধড়ক পেটানোর পর শিক্ষকরা নিজেরাই হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা করান। বৃহস্পতিবার ঘটনা জানতে পেরে ছেলেকে বাসায় নিয়ে যান। এরপর থানায় গেলেও অভিযোগ নেয়নি পুলিশ। বলেছে, নিজেরাই মিলমিশ করতে।
ভুক্তভোগী শিশুর বাবা মো. মাসুদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সাত দিন হলো আমার ছেলেকে বসুন্ধরা এলাকার হাবিবুর রহমান হুজুরের মাদ্রাসায় ভর্তি করাই। বুধবার সন্ধ্যায় হাবিবুর হজুর আমার ছেলেকে পড়া জিজ্ঞাসা করেন। পড়া না পারায় বাঁশের কঞ্চি দিয়ে মারধর করেন হুজুর। পরে তারা আমার ছেলেকে চিকিৎসাও করান। বিষয়টি জানতে পেরে মাদ্রাসা থেকে আমার ছেলেকে বৃহস্পতিবার বাড়িতে নিয়ে আসি।’
তিনি অভিযোগ করেন, ‘গতকাল রাতে থানায় গিয়েছিলাম অভিযোগ করতে। তখন ডিউটি অফিসার ও এলাকার লোকজন ঘটনা মিলমিশ করতে বলেন। পরে আজ (শুক্রবার) ভাইস চেয়ারম্যানের অফিসে মীমাংসার জন্য আসছি।’
অভিযুক্ত শিক্ষক হাবিবুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বুধবার সন্ধ্যায় ছেলেটা মাদ্রাসার পাশে বিদ্যুতের খুঁটি বেয়ে পালানোর চেষ্টা করছিল। তখন একজন তাকে দেখে ধরে নিয়ে আসে। রাগের মাথায় তাকে পাঁচ-সাতটা বাড়ি দেয়া হয়েছে। কারণ একটা বিপদ হতে পারত। পরে গতকাল রাতে ওই ছেলের বাবা-মা এসে মাদ্রাসা থেকে তাকে নিয়ে গেছে। বিষয়টা মীমাংসার জন্য ভাইস চেয়ারম্যান শাহাদাত ভাইয়ের অফিসে আসছি।’
তবে শিশুটির বাবা থানায় অভিযোগ না নেয়ার যে দাবি করেছেন, তা অসত্য বলছেন আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল আউয়াল।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘গতকাল রাতে মারধরের অভিযোগ নিয়ে ওনারা আসছিলেন। ওনারা জিডির কপি নিয়েছিলেন লেখার জন্য। তারপর সেটা জমা না দিয়েই চলে গেছেন। তবে তারা এখন এলে অভিযোগ নিব।’
কপি জমা না দিয়ে কীভাবে ভুক্তভোগীরা চলে গেল? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘অনেক লোকজন ছিল। অত খেয়াল করতে পারিনি।’
ভুক্তভোগীকে আইনি সহায়তা না দিয়ে মীমাংসার পরামর্শ কেন দিয়েছেন- জানতে চাইলে সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।
শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনা মীমাংসার বিষয়ে সাভার উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন খান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাচ্চাটা কারেন্টের পোল বাইয়া পলাইতে গেছিল। পরে মাদ্রাসার হুজুর বাচ্চাটারে তিন-চারটা বাড়ি দিছে। আইজ আমার অফিসে ওইডা মীমাংসা কইরা দিছি।’
কীভাবে মীমাংসা করলেন জানতে চাইলে ফোন কেটে দেন তিনি।