বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

জমি নিয়ে বিরোধে কমিউনিটি ক্লিনিকে তালা

  •    
  • ১৮ আগস্ট, ২০২২ ১২:০১

বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. খালেদুর রহমান বলেন, ‘ক্লিনিকটা নিয়ে একটু বিরোধ রয়েছে। তাই ভয়ে ওই ক্লিনিকের উপ সহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার যাচ্ছেন না বলে জানতে পেরেছি। ওই স্কুলের দুই শিক্ষকের সঙ্গে বহিরাগত কিছু স্কুলশিক্ষক আমার সহকর্মীর সঙ্গে খুবই রূঢ় আচরণ করেন, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।’

ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার একটি কমিউনিটি ক্লিনিকে ঝুলছে তালা। উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার যাচ্ছেন না অফিসে। তার দাবি, সরকারি বিদ্যালয় ও হাসপাতালের জমি নিয়ে বিরোধের কারণে তিনি ক্লিনিক তালাবদ্ধ করে রেখেছেন। এতে ওই এলাকার মানুষ সরকারি ক্লিনিকের সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।

উপজেলার কাদিরদী বাজারের ‘কাদিরদী উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র’ কমিউনিটি ক্লিনিক ও কাদিরদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নিয়ে এ বিরোধ।

গত ১৪ দিন ধরে ওই ক্লিনিকের দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার মো. নুরুল ইসলাম ক্লিনিকে যাচ্ছেন না।

ক্লিনিকটি বন্ধ থাকার কারণে বুধবার স্বেচ্ছাসেবী মুরাদ মাহমুদ বিদ্যালয়ের বারান্দায় বসে বাচ্চাদের ইপিআই টিকা দিয়েছেন।

মুরাদ মাহমুদ বলেন, ‘স্যার ক্লিনিকটি বন্ধ রাখায় অনেকেই টিকা না নিয়ে ফিরে যাচ্ছেন। বাধ্য হয়ে যে স্কুলের সঙ্গে বিরোধের ভয়ে হাসপাতাল তালাবদ্ধ করে রেখেছেন, সেই স্কুলের বারান্দায় বসে টিকা দিয়েছি।’

স্থানীয়রা জানান, ক্লিনিকের জমির সঙ্গে বিদ্যালয়ের জমির সীমানা নিয়ে অনেক দিন ধরে বিরোধ চলছে। বিরোধের একপর্যায়ে গত ৪ আগস্ট উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মারিয়া হক জমিটি মাপেন।

এতে কমিউনিটি ক্লিনিকের মধ্যে কিছু জায়গা পায় বিদ্যালয়। এই জমির বিরোধের জেরে ক্লিনিকের দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার ক্লিনিকে না গিয়ে তালা দিয়ে এটি বন্ধ করে রেখেছেন।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মারিয়া হক বলেন, ‘সরকারি বিদ্যালয় ও হাসপাতালের জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ ছিল। আমি জমি মেপে যার যার সীমানা নির্ধারণ করে দিয়েছি। কেন বা কোন ভয়ে হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার অফিসে না গিয়ে হাসপাতাল তালাবদ্ধ করে রেখেছেন, সেটা আমার জানা নেই। তিনি কেন অফিস করছেন না, আমি খোঁজ নেব।’

উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার নুরুল ইসলাম বলেন, ‘কাদিরদী উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সঙ্গে কাদিরদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সীমানা বিরোধ চলছিল নিষ্পত্তির জন্য। গত ৪ আগস্ট সেখানকার জমি মাপাা হয়। জমি মেপেছিলেন এসিল্যান্ড অফিসের সার্ভেয়ার।

‘সে সময় আমার ওপর ক্ষিপ্ত হন কাদিরদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খন্দকার মাহবুবুর রহমান এবং সহকারী শিক্ষক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন। তারা অকথ্য ভাষায় আমাকে গালাগালি করেন ও হাত-পা ভেঙে দেয়ার হুমকি-ধমকি দেন। সে সময় স্কুলের অন্য শিক্ষকরাও তেড়ে আসেন ও আমাকে হেয় করেন। এ ঘটনার পর নিরাপত্তার জন্য রোববার বোয়ালমারী থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি।’

তিনি আরও জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ও সিভিল সার্জন তাকে ক্লিনিকে যেতে বললে তিনি যাবেন।

এ বিষয়ে কাদিরদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খন্দকার মাহবুবুর রহমান এবং সহকারী শিক্ষক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন জানান, ওই চিকিৎসকের সঙ্গে কোনো ধরনের খারাপ আচরণ করা হয়নি। তাকে কোনো হুমকিও দেননি তারা।

অন্য স্কুলের শিক্ষকদের ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা প্রসঙ্গে প্রধান শিক্ষক খন্দকার মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আমাদের এখানে সেদিন মিটিং ছিল, সে কারণেই তারা এসেছিলন।’

বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. খালেদুর রহমান বলেন, ‘ক্লিনিকটা নিয়ে একটু বিরোধ রয়েছে। তাই ভয়ে ওই ক্লিনিকের উপ সহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার যাচ্ছেন না বলে জানতে পেরেছি। সেদিন দুটি প্রতিষ্ঠানেরই সরকারি সীমানা নির্ধারণের জন্য সরকারি সার্ভেয়ার উপস্থিত ছিলেন।

‘সেখানে ওই স্কুলের দুই শিক্ষকের সঙ্গে বহিরাগত কিছু স্কুলশিক্ষক আমার সহকর্মীর সঙ্গে খুবই রূঢ় আচরণ করেন, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। এ ব্যাপারে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে বসে দ্রুত সমাধান করে ক্লিনিকটি পুনরায় চালু করার ব্যবস্থা করব।’

বোয়ালমারী থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আব্দুল ওহাব বলেন, ‘ঘটনাটি সম্পর্কে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাকে জানিয়েছে। সেদিন ঘটনাস্থলে কিছুটা কথা-কাটাকাটি হয়। আমরা উভয় পক্ষকে বিষয়টি মীমাংসা করে ফেলতে বলেছি।’

এ বিভাগের আরো খবর