বগুড়ার ধুনটে চাহিদা অনুযায়ী সার না পেয়ে সড়ক অবরোধ করেছেন কৃষকরা।
বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ঘণ্টাব্যাপী ধুনট-বগুড়া বাইপাস সড়ক অবরোধ করে রাখেন তারা। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, পুলিশ ও কৃষি কর্মকর্তা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
উপজেলার ধুনট-বগুড়া বাইপাস সড়কের খাদ্যগুদাম এলাকায় মেসার্স এশিয়া এন্টারপ্রাইজের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এটির মালিক শামিম সরকার ধুনট ইউনিয়নের বিসিআইসি সার ডিলার।
বিক্ষুব্ধ কৃষকরা জানান, দুই দিন ধরে সার নিতে এসে না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন অনেকে। মঙ্গলবারও তারা এখানে সার নিতে আসেন। পরে তাদের বলা হয়, চাহিদামতো সার দেয়া হবে না। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে গাছের গুঁড়ি ফেলে সড়ক অবরোধ করেন তারা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলছেন, উপজেলায় নতুন করে সার বরাদ্দের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে।
ধুনট ইউনিয়নের কৃষক আমিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সকালে এসে লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর শুনি সার দেবে না। পরে আমরা সবাই মিলে রাস্তা অবরোধ করি।’
সার না পেয়ে ক্ষুব্ধ একই ইউনিয়নের সামসুল আলমও। বলেন, ‘সারা সকাল দাঁড়িয়ে থাকার পর ডিলার জানান, মাত্র তিনটি ওয়ার্ডের কৃষকদের সার দেয়া হবে। তখন সব কৃষক ক্ষুব্ধ হন। এখন ধান লাগানোর শেষ সময়। এ সময় কৃষককে ভোগান্তিতে ফেলা কী ঠিক?’
জানতে চাইলে ডিলার শামিম সরকার কথা বলতে রাজি হননি। তিনি বলেন, ‘যা কিছু বলার ইউএনও বলবেন।’
ধুনট উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, উপজেলায় আগস্টের জন্য সরকারিভাবে ৮৯০ টন ইউরিয়া সার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় একজন করে বিসিআইসি সার ডিলার রয়েছেন। বরাদ্দের এই সার ডিলারদের মাঝে ভাগ করে দেয়া হয়েছে।
কৃষি অফিসের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতিদিন একটি ইউনিয়নের তিনটি ওয়ার্ডের কৃষকদের সার দেয়া হবে।
ধুনট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বুধবার সকাল থেকে ধুনট ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কৃষকদের মাঝে জমির পরিমাণ অনুযায়ী দুজন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার উপস্থিতিতে ইউরিয়া সার বিক্রি করার কথা ছিল। কিন্তু সার বিক্রি শুরু করার আগেই কৃষকরা ক্ষুব্ধ হয়ে সড়ক অবরোধ করেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইউনিয়নের সব ওয়ার্ড থেকে কৃষকের আসার কারণে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছিল। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে পরিস্থিতি শান্ত হয়েছে। আগামী ২১ আগস্ট পর্যন্ত কৃষকদের কাছে সার বিক্রি করা হবে।’
ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সঞ্জয় কুমার মহন্ত নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঘটনাস্থলে গিয়ে কৃষকদের শান্ত করে সার বিক্রি হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সব ওয়ার্ডের কৃষকদের সার দেয়া হবে। এ ছাড়া উপজেলায় নতুন করে সার বরাদ্দের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে।’