বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলায় উন্নত বিশ্বকে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়াতে হবে’

  •    
  • ১৭ আগস্ট, ২০২২ ১৬:৩৬

মিশেল ব্যাচলেট বলে, ‘জলবায়ু সংকটের ফলে সবচেয়ে বেশি যেটি ক্ষতির সম্মুখীন হয় তা হলো মানবাধিকার। একটি জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত ও ঝুঁকির দেশ হিসেবে উন্নত বিশ্বের উচিত বাংলাদেশের সাহায্যে এগিয়ে আসা।’

জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় বিশ্ব নেতৃত্বকে বাংলাদেশের পাশে চাইলেন জাতিসংঘ মানবাধিকারবিষয়ক প্রধান হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচলেট।

বুধবার রাজধানীতে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) আয়োজিত সেমিনারে এ কথা বলেন তিনি।

মিশেল ব্যাচলেট বলেন, ‘জলবায়ু সংকটের ফলে সবচেয়ে বেশি যেটি ক্ষতির সম্মুখীন হয় তা হলো মানবাধিকার। একটি জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত ও ঝুঁকির দেশ হিসেবে উন্নত বিশ্বের উচিত বাংলাদেশের সাহায্যে এগিয়ে আসা।’

এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘শরণার্থীদের জায়গা দেয়া অনেক বড় ব্যাপার। বাংলাদেশের এ বিষয়ে অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছে। কোনো একটা এলাকায় হুট করে অনেক মানুষের আগমন ঘটলে পরিস্থিতি এলোমেলো হয়ে যায়। এতে পরিবেশের ওপর প্রভাব পড়ে।’

জাতিসংঘের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও আবাসনগত সুবিধা নিশ্চিত করা না গেলে তাদের ফেরালে মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের আশ্রয়ের ফলে শুধু পরিবেশ নয়, অর্থনৈতিক নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

‘রোহিঙ্গারা ফিরে যেতে চায়। কিন্তু সে পরিবেশ এখনও রাখাইনে প্রস্তুত হয়নি। মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিবেশ খুবই জটিল। এ অবস্থায় ফেরত পাঠালে এ মানুষগুলো আবারও ফিরে আসার শঙ্কা থেকে যাবে।’

তিনি বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন সর্বত্র, প্রত্যেকের মানবাধিকারকে প্রভাবিত করছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে কমপক্ষে ৩.৩ বিলিয়ন মানুষ এর প্রভাবের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।’

এক প্রশ্নে মিশেল ব্যাচলেট বলেন, ‘তরুণদের কাছে কোনো বাধাই বাধা নয়। জলবায়ু জরুরি অবস্থায় এই অংশই বাঁচাতে পারে বিশ্বকে। তাদের কণ্ঠস্বরকে আরও জোরালো করতে হবে, আগামীর ভবিষ্যতের জন্য।’

তিনি বলেন, ‘এসডিজির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অনেক অর্জন রয়েছে। সবার জন্য, ন্যায়বিচারের প্রয়োজনে বাংলাদেশের অনেক কিছু করার রয়েছে। বৈষম্য করে চললে সামাজিক নিরাপত্তা রক্ষিত হবে না। মানবাধিকার নষ্ট হবে। পরিবেশের ক্ষেত্রে পুরো বিশ্বই ক্ষতির মুখোমুখি রয়েছে। এটা মানবতার জন্য বড় বাধা।

‘দূষণ আর জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বসে থাকবার সুযোগ নেই। বাংলাদেশের অর্জন কম নয়। কিন্তু, এটা একা এক দেশের পক্ষে মোকাবিলা করা সত্যি দুষ্কর। নতুন প্রজন্মের সুরক্ষা দিতে কিছু একটা করতেই হবে।’

তিনি বলেন, ‘মানুষের অধিকার রক্ষা করতে হলে, পরিবেশের সুরক্ষা দিতে হবে। অভিযোজন অনেক ব্যয়বহুল। তুরাগ নদী নিয়ে হাইকোর্টের নির্দেশনা একটি বড় মাইলফলক। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত, ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর জন্য কথা বলা। স্বল্প মেয়াদি, মধ্যম মেয়াদি উদ্যোগ এখনই বাস্তবায়নে যাওয়ার সময়। রাজনৈতিক সদিচ্ছার বড় অভাব খুব বেশি দেখা যাচ্ছে। কোভিড-পরবর্তী সময়ে গতানুগতিক নয়, নতুন কৌশলে এগোনর দরকার। নিউ নরম্যালিটি এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই।’

কার্বন নিঃসরণ সম্পর্কে এক প্রশ্নে জাতিসংঘের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘কিছু দেশ দ্বায়িত্বশীল। আবার কারও মধ্যে কোনো উদ্বেগ নেই। কীভাবে আমরা সংগঠিত করব, তহবিল জোগাড় করব, সেটা এখন গুরুত্বপূর্ণ। সকল চুক্তি, সমঝোতার যথাযথ বাস্তবায়ন দরকার।

‘কোনো কোনো দেশ বড় ধরনের কার্বন নিঃসরণের জন্য দায়ী। শুধু মানুষ এটা করছে তা নয়, বায়োলজিক্যাল কার্বন নিঃসরণ আছে। সবাইকে দ্বায়িত্বশীলতা দেখাতে হবে। কোনো চুক্তিই আলোর মুখ দেখেনি। এটা হলে, এ বিশ্বকে কতটা সুরক্ষা দেয়া যাবে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘একটি দেশ নিজে দায়ী না হয়েও যখন তাকে ভালনারেবল কান্ট্রি বলা হয়, তখন সত্যি তা বড় হতাশাজনক। সিলেটে এবার বিশাল ফ্লাশ ফ্লাড হয়েছে, যা কোনোদিনই হয়নি।

‘আবার তিন সপ্তাহের মধ্যে অতি খরা, অতি বন্যা দেখার অভিজ্ঞতা এ দেশের মানুষের আছে। কুড়িগ্রামে এটা হয়েছে। ফরিদপুরে মানুষ বৃষ্টির অভাবে পাঠ পচাতে পারছে না। এটা এবারই প্রথম হলো।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘প্যারিস চুক্তিতে সব দেশ কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ক্লিন এনার্জির কমিটমেন্ট করেছিল। কিন্তু রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ মানুষকে কঠিন পরিস্থিতিতে ফেলেছে। জার্মানির মতো দেশ কয়লা বিদ্যুতে ফিরে আসছে।’

বিআইআইএসএস মহাপরিচালক মাসুদুর রহমান বলেন, ‘মানবতার জন্য, জলবায়ুর পরিবর্তন এখন বড় একটি হুমকি। বৈশ্বিক সম্প্রদায় জলবায়ু তহবিল গঠনে উদাসীনতা দেখিয়ে আসছে। সবার মধ্যে মানসিকতার পরিবর্তন এনে একটি ঐকমত্যে পৌঁছাতে হবে নিজেদের অস্তিত্বের প্রয়োজনে। এনভায়রনমেন্টাল জাস্টিস আনতে জাতিসংঘের মতো সংস্থাকে সক্রিয় ভূমিকা নিতেই হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর