বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কুয়াকাটায় হোটেল মালিকদের হঠাৎ ধর্মঘটে বিপাকে পর্যটকরা

  •    
  • ১৭ আগস্ট, ২০২২ ১৩:৫৩

হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. কলিম মিয়া বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে ভ্রাম্যমাণ আদালত এসে খাবারের মান নিয়ে অভিযোগ তুলে জরিমানাসহ বিভিন্নভাবে হয়রানি করছে। ছোট ছোট হোটেল মালিককেও ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এমনকি একেক জনকে মাসের মধ্যে তিন-চারবার জরিমানা করা হয়েছে। তাই সব হোটেল ও রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী বসে অনির্দিষ্টকালের জন্য হোটেল ও রেস্টুরেন্ট বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।’

পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় খাবার হোটেল ও রেস্টুরেন্ট মালিকদের অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট চলছে। আকস্মিক এ ধর্মঘটের কারণে বিপাকে পড়েছেন এখানকার পর্যটকরা।

খাবারের নিম্ন মান এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের অভিযোগে বিভিন্ন সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের জরিমানার প্রতিবাদে মঙ্গলবার রাতে এ ঘোষণা দেয় খাবার হোটেল মালিক সমিতি। বুধবার সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য হোটেল-রেস্টুরেন্ট বন্ধ রেখেছেন মালিকরা।

সংগঠনের সভাপতি মো. সেলিম মুন্সি নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন ম্যাজিস্ট্রেট খাবার হেটেলে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন; আবার একই হোটেলে একাধিকবার জরিমানা করা হয়। মোবাইল কোর্টের নামে আমাদের হয়রানি করা হচ্ছে। তাই সব হোটেল মালিক এক হয়ে আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

সংগঠনের এই নেতা আরও বলেন, ‘গত ১১ আগস্ট আল-মদিনা নামের একটি হোটেলে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তখন ওই হোটেল মালিক তার সমস্যা সমাধানে ১৫ দিন সময় চেয়ে নেন; কিন্তু গতকাল (মঙ্গলবার) আবার ওই হোটেলেই ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

‘মালিক জরিমানা না দিতে পারায় তাকে বেশ কিছুক্ষণ আটকে রাখা হয়। পরে তার পরিবারের সদস্যরা ধার করে টাকা এনে তাকে ছাড়িয়ে নেয়।’

বিষয়টি সমাধানে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, ‘খাবার হোটেল বন্ধ থাকলে পর্যটকরা বড় সমস্যায় পড়বেন। তাই আশা করব, প্রশাসন আমাদের বিষয়টি সহজ করে দেখবে। তাহলে আমরা হোটেল খুলে দিব।’

অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে পচা-বাসি ও ভেজাল খাবার পরিবেশন এবং অধিকমূল্য আদায় নিয়ে পর্যটকদের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রশাসন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে- এ বিষয়ে মালিক সমিতির সভাপতি বলেন, ‘মোবাইল কোর্ট অবশ্যই হবে, কিন্তু যার যার সাধ্য মোতাবেক জরিমানা করা উচিত। আর পর্যটকদের যাতে খাবার, পরিবেশের কোনো অভিযোগ না থাকে, সেদিকে আমি আমার সংগঠনের সবাইকে কড়া নির্দেশনা দিয়েছি।’

জরিমানার নামে হয়রানির অভিযোগ করে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. কলিম মিয়া বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে ভ্রাম্যমাণ আদালত এসে খাবারের মান নিয়ে অভিযোগ তুলে জরিমানাসহ বিভিন্নভাবে হয়রানি করছে। ছোট ছোট হোটেল মালিককেও ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এমনকি একেক জনকে মাসের মধ্যে তিন-চারবার জরিমানা করা হয়েছে।

‘এতে ব্যবসায়ীদের এখন পথে বসার উপক্রম। তাই হোটেল ও রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ীদের নিয়ে মঙ্গলবার রাতে জরুরি সভা করা হয়েছে। এতে সবার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বুধবার সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য হোটেল ও রেস্টুরেন্ট বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।’

এর প্রতিকারে জেলা প্রশাসক ব্যবস্থা না নেয়া পর্যন্ত সব হোটেল ও রেস্টুরেন্ট বন্ধ থাকবে বলেও তিনি জানান।

এদিকে হঠাৎ ধর্মঘট ডাকায় বিপাকে পড়েছেন পর্যটকরা।

খুলনা থে‌কে আসা পর্যটক হান্নান মিয়া নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মঙ্গলবার পরিবার নি‌য়ে আস‌ছি বেড়াতে। রাতে হো‌টে‌লেই খে‌য়ে‌ছি। সকা‌লে দে‌খি সব বন্ধ। যেখা‌নে উঠেছি, সেখানকার বয়‌কে ব‌লে‌ছি দুপু‌রের খাবা‌রের ব্যবস্থা কর‌তে।’

সাতক্ষীরা থে‌কে এসেছেন ক‌লেজ শিক্ষার্থী আবু রায়হান। তিনি বলেন, ‘খাবার হো‌টেল সব বন্ধ, তাই কলাপাড়ার এক প‌রি‌চিত জন‌কে ফোন দি‌ছি। দুপু‌রে তাদের ওখা‌নে খে‌য়ে বিকেলেই চ‌লে যাব।’

এ বিষয়ে কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র আনোয়ার হোসেন বলেন, বিষয়টি সকালেই আমি জেনেছি। জেলা প্রশাসনকেও জানিয়েছি। আমি হোটেল মালিক কর্তৃপক্ষকে বলেছি যে, খাবারের মানও ঠিক রাখতে হবে, আবার মোবাইল কোর্টও চালাতে হবে। দুটি বিষয়ই একে অপরের সঙ্গে জড়িত।

‘আগে পর্যটকদের সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে। তারপর আন্দোলন সংগ্রাম। ভালো মানের খাবার পরিবেশন না করতে পারলে কুয়াকাটার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে। কুয়াকাটার বদনাম হয় এমন কোনো কাজ এখানকার কারও করা উচিত নয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘আশা করি এর একটি সমাধান হয়ে যাবে। কারণ এখানে এখনও বেশ কিছু পর্যটক আছেন। তাদের যেন খাবারে কোনো রকমের সমস্যা না হয়, সে বিষয়টিও দেখভাল করতে হবে।’

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু হাসনাত শহীদুল্লাহ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পদ্মা সেতু চালুর পর কুয়াকাটায় পর্যট‌কের উপ‌স্থি‌তি বাড়‌ছে। এখানকার হো‌টেলগু‌লোর খাবা‌রের মান নি‌য়ে পর্যটকরা প্রশ্ন তুলেছেন। পচা-বাসি খাবার দেয়া, অ‌তি‌রিক্ত দাম রাখার অভিযোগ তুলেছেন।’

তাই জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ভ্রাম্যমাণ আদালত প‌রিচালনার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, পর্যটক‌দের সেবার মান অক্ষুণ্ন রাখ‌তে, খাবার হো‌টেলগু‌লো‌তে মানসম্মত খাবার পরিবেশন, তাদের সঙ্গে পর্যটকবান্ধব আচরণ করতে হবে। মূলত আমরা এসব নিয়েই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছি।

কিছু কাজ সম্পন্ন করতে ওনারা (হোটেল মালিক) কিছুদিন সময় নিয়েছেন। এ ছাড়া আজ হোটেল বন্ধ রাখার বিষয়ে তারা জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলবেন।’

এ বিভাগের আরো খবর