দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে চা শ্রমিকদের আন্দোলনে একাত্মতা জানিয়েছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাসের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ভবনের সামনে মঙ্গলবার দুপুরে মানববন্ধনও করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট।
মানববন্ধন শেষে সমাবেশে সাংস্কৃতিক জোটের সমন্বয়ক ইফরাতুল হাসান রাহিম বলেন, ‘দেশের অর্থনীতিতে চা শ্রমিকরা বড় একটা জোগান দিয়ে থাকেন। তবে তাদের সেভাবে মূল্যায়ন করা হয় না। বর্তমানে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম যেভাবে বাড়ছে তাতে তাদের জীবন আরও দুর্বিষহ হয়ে পড়ছে।
‘১২০ টাকা পর্যন্ত মজুুরি বাড়াতে প্রায় ৫০ বছর লেগেছে তাদের। এই সময়ে ১২০ টাকা মজুরি দেয়া একটা জুলুম। আমরা সরাসরি তাদের পাশে দাঁড়াতে পারছি না, কিন্তু আমরা চেষ্টা করছি এখান থেকে সংহতি জানাতে। সরকার চাইলেই এই সমস্যার সমাধান অচিরেই করতে পারে।’
সমাবেশে চা শ্রমিকদের প্রতিনিধি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী রূপালী পাল বলেন, ‘চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির এই আন্দোলন অনেক আগে থেকেই। এখন জিনিসপত্রের দাম বাড়ার কারণে এ আন্দোলন আরও জোরদার করা হয়েছে। প্রায় ছয় দিন হয়ে গেছে তাদের আন্দোলন চলছে, কিন্তু মালিকপক্ষ থেকে এখনও কোনো আশানুরূপ ফল আসেনি।
‘চায়ের শ্রমের মজুরিনির্ভর মানুষগুলো একবেলা খেতে পেলে আরেক বেলা খেতে পায় না। চায়ের সঙ্গে রুটি বা চা দিয়ে ভাত এমন খাবার তাদের শরীরের পুষ্টিমান পূরণ করতে পারে না। চা শ্রমিকদের ছেলেমেয়েদের পড়ালেখার প্রতি আগ্রহ থাকলেও তারা ঝরে পড়ছে অচিরেই।’
শোক দিবসের কারণে দুদিন আন্দোলন কর্মসূচি শিথিল ছিল। মঙ্গলবার থেকে ফের কর্মবিরতি শুরু করেছেন দেশের ১৬৬টি চা বাগানের শ্রমিকরা।
চা শ্রমিক ইউনিয়নের সিলেট ভ্যালির সভাপতি রাজু গোয়ালা বলেন, ‘দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতিসহ আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।’
গত মঙ্গলবার থেকে চা বাগানের শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার দাবিতে চার দিন ২ ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করেন শ্রমিকরা। গত শনিবার থেকে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতিতে নামেন তারা। এতে বন্ধ হয়ে গেছে বাগানের উৎপাদন।