সব দেশ রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল কিনতে পারলে বাংলাদেশ কেন পারবে না, এ ক্ষেত্রে তেল আমদানির সম্ভাব্যতা যাচাই করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) সভায় মঙ্গলবার সকালে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের এ নির্দেশনা দেন।
সভা শেষে ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন তুলে বলেছেন, অন্য রাষ্ট্র রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল কিনতে পারলে বাংলাদেশ কেন পারবে না।’
মন্ত্রী বলেন, ‘যারা বলেছিল শ্রীলঙ্কা হয়ে যাবে দেশ, এরপর ২ মাস পার হয়ে গেছে। আমাদের অর্থনীতি খাদে পড়বে না, উল্টো ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে।’
তবে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ-এর মন্দার আভাস মনে করিয়ে দিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘আমরাও এর বাইরে নেই। বলেন, এ জন্য ইকোনোমাইজ বা প্রয়োজনীয় সব ব্যয় করবে সরকার। সংকোচন নয়, অহেতুক ব্যয় বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। কৃচ্ছ্রসাধনে সব ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম চলতি বছরের শুরু থেকেই বাড়ছিল। দেশে জ্বালানি তেল ও গ্যাস আমদানিতে বেশি খরচ হওয়ায় কিছুটা হিমশিম খেতে হয় সরকারকে।
তাই গত ৫ আগস্ট দেশে সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে দেয় সরকার। ডিজেল ও কেরোসিনে লিটারে বাড়ানো হয় ৩৪ টাকা। আর অকটেন-পেট্রলে বাড়ানো হয় ৫১ শতাংশ।
তার আগে থেকেই দেশে জ্বালানি তেলের ব্যবহার কমাতে চেষ্টা করে সরকার। সে জন্য ডিজেলচালিত কিছু বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র সময়ে সময়ে বন্ধ রাখার কথা জাননো হয়। সে কারণে দেশে ঘোষণা দিয়ে লোডশেডিং দেয়া শুরু হয় গত জুলাই থেকে।
প্রথমে দিনে এক ঘণ্টা করে লোডশেডিং দেয়া হলেও সেটি পরে বাড়িয়ে ২ ঘণ্টা, এমনকি কোথাও কোথাও তারও বেশি করে দেয়া শুরু হয়।
বর্তমানে বিশ্ববাজারে কমতে শুরু করেছে জ্বালানি তেলের দাম। এখন অশোধিত তেল বিশ্ববাজারে ব্যারেলপ্রতি ৯০ ডলারের নিচে নেমে গেছে। রাশিয়ার ওপর থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্ররা গম রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে শস্যটির রপ্তানি শুরু করেছে রাশিয়া।
সেই সঙ্গে ভারতসহ কয়েকটি দেশ রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল আমদানি করছে। এমন অবস্থায় বাংলাদেশও দেশটি থেকে জ্বালানি তেল আমদানিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে চায় বলে একনেক সভায় সব বিষয় দেখে এগোতে বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।