চকবাজারে চারতলা ভবনে আগুনের ঘটনায় বরিশাল হোটেল মালিক ফখরুদ্দিনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার ভোরে তাকে চকবাজার এলাকা থেকেই গ্রেপ্তার করা হয়।
চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাইয়ুম নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘ঘটনার পর থেকে হোটেল মালিকের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। তার হোটেলের ৬ জন কর্মচারী আগুনে পুড়ে মারা গেল, সে গা ঢাকা দিয়ে থাকবে তা তো হতে পারে না। ঘটনার পর থেকেই তাকে ধরতে আমরা অভিযান শুরু করি। ভোরে চকবাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।’
তিনি জানান, বরিশাল হোটেলের কর্মচারী রুবেলের বড় ভাই মোহম্মদ আলী চকবাজার থানায় হোটেলমালিক ফখরুদ্দিনকে আসামি করে অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগে মামলা করেছেন। সে মামলাতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ফখরুদ্দিনকে আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ড চাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চকবাজার থানার উপপরিদর্শক রাজীব সরকার।
সোমবার দুপুরে লাগা আগুনে বরিশাল হোটেলের ছয় কর্মচারীর মৃত্যু হয়। তারা সবাই হোটেলটিতে নাইট শিফটে কাজ করে সকালে ঘুমিয়েছিলেন। তাদের থাকার ব্যবস্থা ছিল ভবনের দ্বিতীয় তলায়। নিচতলায় ছিল বরিশাল হোটেল।
আগুন নিয়ন্ত্রণে প্রায় আড়াই ঘণ্টা কাজ করে ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট।
মিটফোর্ড হাসতাপালে নিহত ছয়জনের ময়নাতদন্ত হচ্ছে।
যেভাবে আগুন লাগে
নিচতলার হোটেল থেকেই আগুনের সূত্রপাত বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
প্রত্যক্ষদর্শীরাও বলেন, একটা বোমা ফাটার মতো আওয়াজ হয়েছে হোটেলের ভেতর। এরপরই আগুন ছড়িয়ে পড়েছে ভবনে।
আগুনের সূত্র খুঁজতে গিয়ে সেখানে দেখা যায়, বরিশাল হোটেলের প্রবেশমুখেই ডান পাশে রান্নার চুল্লি। পাইপ লাইনের গ্যাসের মাধ্যমে এই হোটেলের রান্নার কাজ চলত তা বোঝা গেল। চুলার চেম্বারের পাশেই হোটেলের দেয়াল ঘেঁষে গ্যাসের রাইজার ও গ্যাসলাইন। ওই গ্যাসলাইনের একটি আবার চলে গেছে হোটেলের চুল্লির চেম্বারে। সেখান থেকে আবার খুবই ঝুঁকিপূর্ণ উপায়ে প্লাস্টিক পাইপের মাধ্যমে হোটেলের আরেকটি চুলায় গ্যাসের সংযোগ দেয়া হয়েছে। দুর্ঘটনার পর ওই চুলার বার্নারটি খুলে রাস্তায় পড়ে ছিল আর এই বার্নারের গোড়াতেই প্লাস্টিক পাইপ ঝুলতে দেখা যায়।
হোটেলটির ঠিক ওপরেই কাঠের পাটাতন দিয়ে কর্মীদের থাকার ব্যবস্থা ছিল। হোটেলের পেছনে আলাদা সিঁড়ি ব্যবহার করে কর্মীরা ওই সিলিং ঘরে যাতায়াত করতেন। আর দুই শিফটে কাজ করে পালাক্রমে কর্মীরা সেখানে ঘুমাতেন।