যশোরের চৌগাছায় আশাদুজ্জামান পিকুল নামে এক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ১৬ বছর বয়সী এক স্কুলছাত্রীকে বিয়ে করার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের নিষেধ উপেক্ষা করে বাল্য বিয়ে করায় এখন তোলপাড় শুরু হয়েছে।
২৮ বছর বয়সী আশাদুজ্জামান পিকুল বর্তমানে সাতক্ষীরা সদর থানায় কনস্টেবল পদে কর্মরত। রোববার যশোর নোটারি পাবলিকের অ্যফিডেভিটের মাধ্যমে কনের বয়স দুই বছর বাড়িয়ে বিয়ের ঘোষণা দেন তিনি।
এ বিষয়ে চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইরুফা সুলতানা বলেন, ‘পুলিশ সদস্য পিকুলের নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে বিবাহ সংক্রান্ত ডকুমেন্ট আমাদের হাতে এসেছে। তথ্য গোপন করে বাল্য বিয়ে করায় তার বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করা হবে। একইসঙ্গে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকের কাছে চিঠি দেয়া হবে।’
জানা যায়, রোববার যশোর নোটারী পাবলিকের কার্যালয়ে গিয়ে অ্যাফিডেভিটের মাধ্যমে বিবাহ সংক্রান্ত ঘোষণা দিয়েছেন আশাদুজ্জামান পিকুল ও সাদিয়া আক্তার।
তাদের ঘোষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, যশোর সদর কাজী অফিসের মাধ্যমে তারা এক লাখ টাকা দেন মোহরে বিয়ে করেছেন। অ্যাফিডেভিটে সাদিয়ার জন্ম তারিখ ২০০৪ সালের ১৯ মে দেখানো হয়েছে। যদিও ফুলসারা ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় থেকে ইস্যু করা জন্মনিবন্ধন সনদে সাদিয়ার জন্ম তারিখ ২০০৬ সালের ১৯ মে।
এর আগে গত ৩ আগস্ট উপজেলার জগদীশপুর ইউনিয়নের মাড়ুয়া গ্রামের লুৎফর রহমানের বড় ছেলে তৌহিদুর রহমান নয়নের সঙ্গে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ১৭ বছর বয়সি এক মেয়ের বিয়ের দিন ঠিক ছিল। আর ৬ আগস্ট উপজেলার সলুয়া গ্রামের তাইজুল ইসলামের স্কুলে পড়া মেয়ে সাদিয়ার সঙ্গে বিয়ের দিন নির্ধারিত ছিল তৌহিদের ছোটভাই পুলিশ সদস্য পিকুলের।
বিয়ে দুটির খবর পেয়ে চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইরুফা সুলতানা নিজেই পিকুলকে ফোন করে ভাইসহ তার বিয়ে বন্ধ করার নির্দেশ দেন।
এ ছাড়া চৌগাছা থানার ওসি সাইফুল ইসলাম সবুজ, জগদীশপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলামও মোবাইলে ওই পুলিশ সদস্যের সঙ্গে কথা বলেন। সে সময় পিকুল নিজে ও তার ভাই বাল্য বিয়ে করবেন না- এমন অঙ্গীকার করেন।
রোববার নোটারি পাবলিকে বিয়ের ঘোষণা দেয়ার খবরটি ছড়িয়ে পড়লে এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়।
সম্প্রতি চৌগাছায় বাল্য বিবাহ প্রতিরোধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে উপজেলা প্রশাসন। বেশ কয়েটি বাল্য বিবাহ বন্ধ ও জরিমানা করা হয়েছে। এ অবস্থায় একজন সরকারি কর্মচারী প্রশাসনের নিষেধ অমান্য করে বাল্য বিয়ে করায় সমালোচনা শুরু হয়েছে।