বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘দুটি পাতা একটি কুঁড়ি, শুনতে কি পাও আহাজারি’

  •    
  • ১৫ আগস্ট, ২০২২ ১১:০২

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নিপেন পাল বলেন, ‘পরিবহন শ্রমিকরা হুট করে ধর্মঘট ডেকে বসলে সেটি আইন পরিপন্থি হয় না। অথচ আমরা ন্যায্য দাবি দীর্ঘদিন ধরে জানিয়ে ব্যর্থ হয়ে আগে থেকে ঘোষণা দিয়ে ধর্মঘটে গেলাম। এটিকে বলা হচ্ছে আইন পরিপন্থি।’

সোমা নায়েকের পরিবারের সদস্য সংখ্যা সাত। তিনি ছাড়াও স্বামী, তিন সন্তান আর বৃদ্ধ শ্বশুর-শাশুড়ি।

সিলেটের দলদলি চা বাগানে শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন সোমা। স্বামী পরিমল নায়েকও তাই। দুজন মিলে সারা দিন কাজ করে আয় করেন ২৪০ টাকা। যেদিন কাজ নেই সেদিন আয়ও নেই। এই দিয়েই খাওয়া ছাড়াও সন্তানদের লেখাপড়া আর চিকিৎসা ব্যয়।

সোমা বলেন, ‘বাগান থেকে রেশন হিসেবে কিছু চাল পাই। এতে সপ্তাহ চলে না। বাজার থেকে নিতে হয়। আর বাকি সবকিছু তো পুরোটাই কিনে আনতে হয়। এখন বাজারের যে অবস্থা তাতে ২৮০ টাকা দিয়ে তো দিনে একজনের চলাই দায়। সাতজনের পরিবার চলবে কী করে?’

সোমার বড় ছেড়ে কলেজে পড়ে। খরচ মেটাতে না পারায় ছেলের পড়ালেখা বন্ধ করে দেয়ার চিন্তা করছেন তিনি।

সোমা বলেন, ‘বাজারে জিনিসপত্রের যে দাম তাতে খেয়ে বাঁচতেই পারছি না, ছেলেকে পড়াব কীভাবে? তার চেয়ে সে পড়া ছেড়ে কাজে লাগলে কিছু বাড়তি আয় হবে।’

সিলেটের লাক্কাতুরা বাগানের শ্রমিক রতন হাজরা। বলেন, ‘আমরা পাতা তুলি, কিন্তু চা খেতে পারি না। চায়ের কাপ এখন ১০ টাকা হয়ে গেছে। যে মজুরি পাই, তা দিয়ে চা কিনে খাওয়া বিলাসিতা হয়ে গেছে।’

গত এক মাসেও ঘরে মাংস রান্না হয়নি বলে জানালেন লাক্কাতুরার পাশের মালনীছড়ার বাগানের শ্রমিক শিউলি কন্দ। তিনি বলেন, ‘মুরগির কেজি এখন ২০০ টাকা। এত দাম দিয়ে মাংস কেনার সামর্থ্য আমাদের নেই। মাছ-ডিম খাওয়াও সম্ভব হয় না। ডাল আর সবজি দিয়েই খেতে হয়।

‘বাচ্চাদেরও কখনও সকালের নাশতা দিতে পারিনি। তারা ভাত খেয়েই স্কুলে যায়। অবার স্কুল থেকে এসে ভাত খায়।’

দেশের অন্যতম উৎপাদনশীল খাত চা বাগান। রপ্তানি পণ্যও। এখন উৎপাদন অনেক বেড়েছে। তবে দেশের বাজার বড় হয়ে ওঠায় কমে এসেছে রপ্তানি। তবে শুরু থেকেই অবহেলিত এ খাতের শ্রমিকরা। বাগানগুলোতে ‘ক্রীতদাসের’ মতো যুগ যুগ ধরে শ্রম দিয়ে আসছেন তারা। তবে মজুরি পান সামান্য।

এই বাজারেও একজন চা শ্রমিক দৈনিক মজুরি পান ১২০ টাকা। সেটিও কেবল নির্দিষ্ট পাতা উত্তোলন করলেই পাওয়া যায়। অসুস্থতা বা অন্য কোনো সমস্যায় কাজ করতে না পারলে মেলে না মজুরি। ফলে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে তাদের।

দাবি আদায়ে চা শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করলে পুলিশ তাদের উপর চড়াও হয়। ছবি: মামুন হোসেন

এক সপ্তাহ ধরে দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন শ্রমিকরা। শনিবার দেশের ১৬৬টি বাগানে শুরু করেছেন অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট। ধর্মঘট চালাকালে দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভও করেন তারা। হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে সড়ক অবরোধকালে পুলিশের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কিও হয় শ্রমিকদের।

এই আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতেই রোববার কথা হয় সিলেটের বিভিন্ন বাগানের কয়েকজন চা শ্রমিকের সঙ্গে। নিজেদের মানবেতর জীবন ও কষ্টের কথা তুলে ধরেন তারা।

সিলেটের খাদিমনগর চা বাগানের শ্রমিক সুশিলা রাজভর বলেন, ‘আমার দুই ছেলে ও তিন মেয়ে সঙ্গে শ্বশুর-শাশুড়িও থাকেন। এত বড় পরিবার স্বামীর আয়ে চলে না। তাই আমাকেও কাজ করতে হয়। কিন্তু এখন দুজনের আয়েও সংসার চলছে না।’

তিনি বলেন, ‘১২০ টাকায় কীভাবে খেয়ে-পরে বাঁচব? ওষুধপত্র, কাপড়চোপড় কিংবা বাচ্চাদের পড়ালেখা এসবের খরচ আসবে কোথায় থেকে? এখন ৩০০ টাকা দিয়েও চলা সম্ভব না।’

মালনীছড়া চা বাগানের শ্রমিক রতন বাউরি বলেন, ‘সবকিছুর দাম বাড়ছে। উন্নয়ন হচ্ছে, কিন্তু আমাদের মজুরি বাড়ছে না। আমাদের কোনো উন্নতি নেই।’

রোববার চা বাগানে সাপ্তাহিক ছুটির দিন। সোমবার জাতীয় শোক দিবসের ছুটি। তাই এ দুদিন বাগানগুলোতে শ্রমিকদের কর্মবিরতিসহ সব কর্মসূচি স্থগিত আছে।

তবে সোমবারের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে মঙ্গলবার থেকে আবার লাগাতার ধর্মঘট শুরু হবে বলে জানান বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন সিলেট ভ্যালির সভাপতি রাজু গোয়ালা।

চা শ্রমিক ইউনিয়নের হিসাবে ১৬৬ চা বাগানে শ্রমিক সংখ্যা দুই লাখের বেশি। প্রতি দুই বছর অন্তর বাগান মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ চা সংসদের সঙ্গে ও শ্রমিকদের সংগঠন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের মধ্যে আলোচনাসাপেক্ষে শ্রমিকদের মজুরি পুনর্নির্ধারণ করা হয়।

২০২০ সালে চা শ্রমিকদের মজুরি ১১৮ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১২০ টাকা নির্ধারণ করে মালিকপক্ষ। সেই চুক্তির দুই বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানো হয়নি।

চা শ্রমিক ইউনিয়নের সিলেট ভ্যালির সভাপতি রাজু গোয়ালা বলেন, ‘গত দুই মাসে মালিকপক্ষের সঙ্গে শ্রমিক নেতাদের একাধিক বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে আমরা মজুরি ১২০ থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার দাবি জানিয়েছি। কিন্তু তারা তা মানেননি। পরে এই দাবিতে আমরা স্মারকলিপি দিয়েছি।

‘এতেও কোনো সাড়া না পেয়ে ৮ আগস্ট থেকে আন্দোলন শুরু করি। এরপর বৃহস্পতিবার মালিকপক্ষ ও শ্রমিক নেতাদের নিয়ে সমঝোতা বৈঠক আহ্বান করে বিভাগীয় শ্রম অধিদপ্তর। এতে শ্রমিক নেতারা গেলেও মালিকপক্ষের কেউ আসেননি। ফলে শনিবার থেকে আমরা দেশের সবগুলো চা বাগানের ধর্মঘট শুরু করেছি।’

কী বলছে মালিকপক্ষ

মালিকপক্ষের প্রতিনিধি হিসেবে বাগানগুলো পরিচালনা করে থাকেন বাগান ব্যবস্থাপকরা। তারা শ্রমিকদের সঙ্গে সমন্বয় করে থাকেন।

আকিজ গ্রুপের মালিকানাধিন মৌলভীবাজারের বাহাদুরপুর চা বাগানের ব্যবস্থাপক মো. আব্দুল জব্বার শ্রমিক আন্দোলন নিয়ে কোনো মন্তব্য না করেই বলেন, ‘আমরা শ্রমিকদের কেবল মজুরি দিই না। রেশন হিসেবে একজন শ্রমিককে সপ্তাহে সাড়ে তিন কেজি করে চাল দেয়া হয়। এক শ্রমিকের পরিবারের চারজন সদস্য এই রেশন পেয়ে থাকেন। শ্রমিকদের সন্তানদের ১৮ বছর হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত এই রেশন দেয়া হয়।

‘বাগান কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের আবাসনের ব্যবস্থা করে। তাদের চিকিৎসা ও সন্তানদের প্রাথমিক শিক্ষার সুবিধাও বাগানের পক্ষ থেকে করা হয়। তাদের খাওয়ার পানির ব্যবস্থা করা হয়। এ ছাড়া যেসব নারী শ্রমিকের ছোট বাচ্চা রয়েছে, সেসব বাচ্চা দেখাশোনার ব্যবস্থাও বাগানের পক্ষ থেকে করা হয়।

‘বয়স্ক শ্রমিকদের অবসরকালীন ভাতা দেয়া হয়। আবার একজন শ্রমিক দিনে ২৪ কেজির বেশি পাতা তুললে তারা কেজিপ্রতি ৪ টাকা করে বাড়তি মজুরিও পেয়ে থাকেন। ফলে তারা কেবল ১২০ টাকা মজুরিতে কাজ করেন এমন দাবি সত্য নয়।’

একই ধরনের তথ্য দিয়ে চা শিল্পের উদ্যোক্তা ও সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বার অফ কমার্সের সভাপতি আফজাল রশীদ চৌধুরী বলেন, ‘সব সুবিধা মিলিয়ে একজন শ্রমিকের পেছনে আমাদের দৈনিক ৪৫০ টাকা খরচ করতে হয়। বাগানে দিন দিন শ্রমিক বাড়ছে। কিন্তু সেই অনুপাতে উৎপাদন বাড়ছে না।

‘আবার কোনো শ্রমিকের আমরা বের করে দিতেও পারি না। তাদের আবাসন ব্যবস্থাসহ সব ব্যয়ভার বহন করতে হয়। এসব খরচ মিটিয়ে চা বাগান থেকে লাভ বের করে আনাই কষ্টকর। অনেক বাগানই এখন লোকসানে আছে।’

শ্রমিকদের ভিন্নমত

মালিকপক্ষের এমন দাবির সঙ্গে দ্বিমত জানিয়ে এ প্রসঙ্গে সিলেটের কালাগুল চা বাগানের শ্রমিক সঞ্জয় মাহালি বলেন, ‘বাগানে প্রাইমারি স্কুল থাকলেও এতে পর্যাপ্ত শিক্ষক নেই। বেশির ভাগ বাগানে এক শিক্ষক দিয়েই স্কুল চলে। আবার প্রাথমিকের পর বাচ্চাদের পড়ালেখা নিজ খরচেই করাতে হয়। একটি মেডিক্যাল সেন্টার থাকলেও সেখানে কোনো চিকিৎসক নেই।

‘প্যারাসিটামল ছাড়া অন্য কোনো ওষুধ পাওয়া যায় না। ফলে জ্বর-সর্দি ছাড়া অন্য কোনো অসুখ হলে বাইরের চিকিৎসকের কাছে যেতে হয়।’

চা শ্রমিক ইউনিয়নের সিলেট ভ্যালির সভাপতি রাজু গোয়ালা বলেন, ‘অনেক বাগানে রেশনের নামে শ্রমিকদের শুধু আটা দেয়া। অথচ আমাদের চুক্তিতে আছে, ছয় মাস চাল এবং ছয় মাস আটা দেয়া হবে। কিন্তু সেটাও তারা মাছেন না। এ ছাড়া চিকিৎসা ও শিক্ষার সুবিধা একেবারেই নামমাত্র। এসব সেবা বাইরে থেকেই আমাদের নিতে হয়।’

রেশনের সঙ্গে মজুরির কোনো সম্পর্ক নেই উল্লেখ করে চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নিপেন পাল বলেন, ‘রেশন হিসেবে বাগান থেকে কিছু চাল বা আটা দেয়া হয়। কিন্তু একজন শ্রমিক কি কেবল চাল খেয়েই বাঁচবে? বাকি খাবার তো ১২০ টাকায় কেনা সম্ভব নয়। চিকিৎসা, শিক্ষা, পোশাক- এসব কীভাবে ব্যবস্থা করবে চা শ্রমিকরা?

‘এই সময়ে এসে একজন লোককে ১২০ টাকায় সারা দিন খাটানো হয়, এটাই তো চরম অমানবিক।’

সমঝোতার উদ্যোগ ব্যর্থ

চা শিল্পের এই অচলাবস্থা কাটাতে গত বৃহস্পতিবার বাগান মালিক নেতৃবৃন্দ ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দের নিয়ে বৈঠক আহ্বান করে বিভাগীয় শ্রম অধিদপ্তর। মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে ওই বৈঠকে শ্রমিকরা যোগ দিলেও মালিকরা যাননি।

বৈঠকে অংশ নেয়া একাধিক শ্রমিক নেতা জানান, বৈঠকে শ্রম অধিদপ্তরের নেতারা মালিকদের হয়ে কথা বলেন। তারা ধর্মঘট প্রত্যাহারের জন্য শ্রমিকদের চাপ দেন। এভাবে ধর্মঘট আহ্বান আইন পরিপন্থি বলেও অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা মন্তব্য করেন।

এ ব্যাপারে শ্রম দপ্তরের শ্রীমঙ্গল কার্যালয়ের উপপরিচালক নাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘কাজ বন্ধ করে শ্রমিকেরা আন্দোলনে গেলে মালিক ও শ্রমিক দুই পক্ষেরই ক্ষতি হবে। আমরা বিষয়টি সমাধানের জন্য শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে একটা সমঝোতা বৈঠক করেছি। আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ২৮ আগস্ট তাদের সঙ্গে বসতে সময় চেয়েছেন। আপাতত আন্দোলন স্থগিত রাখতে বলেছেন। কিন্তু চা শ্রমিক ইউনিয়ন নেতরা সেটা মানেননি।’

এভাবে ভরা মৌসুমে হুট করে ধর্মঘট ডাকা আইন পরিপন্থি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নিপেন পাল বলেন, ‘পরিবহন শ্রমিকরা হুট করে ধর্মঘট ডেকে বসলে সেটা আইন পরিপন্থি বলা হয় না। অথচ আমরা ন্যায্য দাবি দীর্ঘদিন ধরে জানিয়ে ব্যর্থ হয়ে আগে থেকে ঘোষণা দিয়ে ধর্মঘটে গেলাম। এটাকে বলা হচ্ছে আইন পরিপন্থি।’

বাংলাদেশ চা সংসদের সিলেট বিভাগের চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ শিবলী বলেন, ‘মজুরি বাড়ানো নিয়ে মালিকপক্ষের সঙ্গে শ্রমিকদের আলোচনা চলছিল। আলোচনা চলাকালে এভাবে কাজ বন্ধ করে আন্দোলন করা বেআইনি।’

তিনি বলেন, ‘এখন চা বাগানে ভরা মৌসুম। কাজ বন্ধ রাখলে সবার ক্ষতি। শ্রমিকরাও এই মৌসুমে কাজ করে বাড়তি টাকা পায়।'

শ্রমিকদের সঙ্গে সমঝোতার প্রসঙ্গে গোলাম মোহাম্মদ শিবলী বলেন, ‘আমরা সরকারকে অনুরোধ করেছি যাতে শ্রমিকদের কাজে ফেরানোর ব্যবস্থা করা হয়।’

সব চা বাগানে উৎপাদন বন্ধ থাকলে দিনে ৩০ কোটি টাকার ক্ষতি হয় বলে জানান তিনি।

‘এখনও ক্রীতাদাস’

শনিবার থেকে চা শ্রমিকদের ধর্মঘট ও বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই তাদের আন্দোলন ও দাবির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করছেন।

অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ও লেখক আরিফ জেবতিক এই দাবির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে ফেসবুকে লিখেছেন- চা শ্রমিকদের ৩০০ টাকা মজুরির দাবি যৌক্তিক।

লেখক কাসাফাদ্দৌজা নোমান চা শ্রমিকদের আন্দোলনের একটি ছবি যুক্ত করে ফেসবুকে লিখেছেন, ‘...আজকাল তো নগরীর অভিজাত চায়ের দোকানে এক কাপ চা বিক্রি হয় ১২০ টাকায়। সে চায়েরও হয় ফুড রিভিউ। অথচ শ্রমিকদের ১২০ টাকার অসুন্দর জীবনের দৃশ্য সিনেমাটোগ্রাফিতেও আসে না, খবরেও খুব একটা পাওয়া যায় না। কারণ তারা চা পাতা ভর্তা খেয়েই কাটিয়ে দিচ্ছে বেহেশতি এই জীবন!

‘চা শ্রমিকরা দৈনিক ৩০০ টাকা পারিশ্রমিকের জন্য আন্দোলন করছে। তাদের আন্দোলনের প্রতি পূর্ণ সমর্থন রইল।

দুটি পাতা একটি কুড়ি

শুনতে কি পাও আহাজারি?’

চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা আইডিয়া। শ্রমিকদের আন্দোলন প্রসঙ্গে সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক নজমুল হক বলেন, ‘শ্রমিকরা এখনও অনেকটা ক্রীতদাসের মতোই জীবন কাটাচ্ছে। তাদের উন্নয়নে সরকার, মালিকপক্ষ সবাইকে আন্তরিক হতে হবে। তাদের মজুরি বাড়ানোর দাবি যৌক্তিক।’

এ বিভাগের আরো খবর